ইনসাইড পলিটিক্স

লাইম লাইটে তোফায়েল আহমেদ


প্রকাশ: 08/08/2022


Thumbnail

বর্ষীয়ান নেতা, আওয়ামী লীগের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং জীবন্ত ডিকশনারি তোফায়েল আহমেদ আবার লাইম লাইটে এসেছেন। দীর্ঘদিন অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে তিনি কিছুটা সুস্থ হয়েই রাজনীতির মাঠে সদর্পে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন। গত শনিবার তোফায়েল আহমেদ ভোলায় যান। এর আগে তিনি দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন, সেখান থেকে ফিরে আসার পরেই তিনি তার নির্বাচনী এলাকা সফর করেন। এবারই তিনি প্রথম পদ্মা সেতু দিয়ে পাড়ি দিয়ে ভোলায় যান। ভোলায় গিয়ে তিনি বিরোধী দলের কঠোর সমালোচনা করেন। তোফায়েল আহমেদ বলেন যে, রাজপথ দখল করা অত সহজ নয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের পাল্টা জবাব হিসেবে তোফায়েল আহমেদ এ বক্তব্য দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন যে, আগে রাজপথ দখল করতে হবে তারপর হরতাল কর্মসূচি দেয়া হবে। ৭ আগস্ট রবিবার রাতে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন। এ সময় তোফায়েল আহমেদ বলেন, ১৯৬৯ সালে আমরা আন্দোলন করে আইয়ুব খানকে বিতাড়িত করেছি, এটাকে বলে আন্দোলন। তিনি বলেন, আমরা গত ১৪ বছর ধরে বিএনপি মহাসচিবের একই বক্তব্য শুনেছি। তারা রাজপথ দখলের কথা বলে। রাজপথ দখল অত সহজ নয়। রাজপথ দখল করেছে আমরা। তোফায়েল আহমেদের এ বক্তব্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ব্যাপকভাবে উদ্বেলিত করেছে। কারণ, আওয়ামী লীগের যে কয়েকজন নেতার কথা মানুষ পছন্দ করে, যে কয়েকজন নেতার কথায় মানুষকে উজ্জীবিত হয় তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে তোফায়েল আহমেদ একজন।

দীর্ঘদিন পর তিনি নীরবতা ভঙ্গ করেন। যখন আওয়ামী লীগ সত্যিকারের সঙ্কটে তখন তোফায়েল আহমেদের এই বক্তব্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এর আগে, ৫ আগস্ট শহীদ শেখ কামালের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি একাধিক জাতীয় দৈনিকে নিবন্ধন লিখেছেন। এই নিবন্ধটি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে যখন আওয়ামী লীগের হাইব্রিড এবং নব্য আওয়ামী লীগাররা ইতিহাসের চর্বিত চর্বণ করছেন এবং তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি, অসম্পূর্ণতা দিয়ে নানা রকম লেখালেখি করছেন সেই সময় জীবন্ত কিংবদন্তী তোফায়েল আহমেদ যেন সব ঘটনাগুলোকে চোখের সামনে নিয়ে এসেছেন। আজ ছিলো বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের জন্মদিন। সেই দিনটি উপলক্ষে তোফায়েল আহমেদ একাধিক জাতীয় দৈনিকে এক হৃদয়গ্রাহী নিবন্ধন লিখেছেন। সেখানে তিনি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, বঙ্গমাতার সঙ্গে তার হৃদ্যতা, ঘনিষ্ঠতা এবং সম্পর্ক উঠিয়ে নিয়েছেন। এই দুটি লেখা এবং ভোলায় তার রাজনৈতিক বক্তব্য তাকে আবার লাইম লাইটে নিয়ে এসেছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং নিয়ে যখন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ হেভিওয়েট নেতারা নীরব, যখন ১৪ দলের মধ্যে টালমাটাল অবস্থা ঠিক সেই সময় তোফায়েল আহমেদ যেন আওয়ামী লীগের শঙ্কিত নেতাকর্মীদের আশার আলো হয়ে উদ্দীপ্ত হলেন।

তোফায়েল আহমেদ আওয়ামী লীগের একজন জীবন্ত কিংবদন্তী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ এবং অপত্যস্নেহে তিনি রাজনীতিতে বেড়ে উঠেছেন। পঁচাত্তরের ঘটনায় তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় বটে কিন্তু সেই সময় তিনি ব্যাপকভাবে নির্যাতিত হয়েছিলেন। সারাজীবন তোফায়েল আহমেদ তার চিন্তা, আদর্শচ্যুত হননি। বরং আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ, এই পরিচয় দিতেই তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সেই তোফায়েল আহমেদ যখন কথা বলেন তখন শুধু আওয়ামী লীগের কর্মীরা নয় সাধারণ মানুষও উদ্দীপ্ত হয়। তোফায়েল আহমেদ এভাবেই দীর্ঘদিন পর লাইম লাইটে চলে এলেন। সামনের দিনগুলোতে তোফায়েল আহমেদের ভূমিকা কি, সেটাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেখতে চায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭