ইনসাইড পলিটিক্স

ক্ষমতায় যেতে না, সরকার হটাতে চায় বিএনপি


প্রকাশ: 12/08/2022


Thumbnail

বিএনপি লাগাতারভাবে বিভিন্ন ধরনের বৈঠক করছে। একদিকে তারা প্রকাশ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন নিয়ে বৈঠক করেছে। পাশাপাশি তারা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করেছে এবং অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করছে। পাশাপাশি বিদেশি দূতাবাসগুলোর সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। সরকারকে চাপে ফেলার জন্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক দল না, সুশীল সমাজ এবং পশ্চিমা বিশ্বকেও সাথে নিতে চায় বিএনপি। সেই লক্ষ্যেই বৈঠকগুলো করা হচ্ছে। বিএনপিতে ৩টি টিম তৈরি করা হয়েছে। একটি টিম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের মহাসচিব এর নেতৃত্বে। যে টিমটি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে। অন্যদিকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি টিম সুশীল সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলছেন। আমীর খসরু মাহমুদের সাথে সিপিডির সম্মানিয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের একাধিক বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও আমীর খসরু মাহমুদ ব্র্যাকের চেয়ারপারসন হোসেন জিল্লুর রহমানের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ড. মঈন খানের নেতৃত্বে তৃতীয় দলটিতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পশ্চিমা বিদেশি দূতাবাসগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার জন্য। গত বৃহস্পতিবার রাতেও ড. মঈন খান কয়েকজন কূটনীতিককে তার বাসায় নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং সেখানে তাদের সাথে বৈঠক করেন। প্রথম বৈঠক শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক গণমাধ্যমের খবরের জন্য। বাকি দুটি বৈঠক কিছুটা গোপনীয়তার সাথে অনুসরণ করা হচ্ছে।

বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে যে, এইসব বৈঠকের মধ্য দিয়ে তারা সরকার পতনের একটি অভিন্ন রূপরেখা তৈরি করতে চাচ্ছেন। এই সরকারের কেন পরিবর্তন দরকার, সে ব্যাপারে তারা বিভিন্ন রকম ব্যাখ্যা দিতে চাইছেন। আর একারণেই এ সমস্ত বৈঠকগুলোর ব্যাপারে গোপনীয়তা বজায়ে রাখা হচ্ছে। সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক এবং বিদেশি দূতাবাসগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি এখন সুর পাল্টিয়েছে। তারা মনে করছে যে, এই মুহূর্তে ক্ষমতায় বিএনপি না এলেও ক্ষতি নেই। তারা ক্ষমতায় যেতেও চায় না। শুধুমাত্র তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তারা যেমন সুশীলদের সমর্থন চাইছেন, তেমনি পশ্চিমা দেশগুলোরও সমর্থন চাইছেন। অন্য একটি সূত্র বলছে, সুশীল সমাজই এখন বিএনপির সঙ্গে ঘণিষ্ঠভাবে যোগাযোগ করছে। তাদের লক্ষ্য হলো সরকারের ভুল-ত্রুটিগুলো বিএনপি'র কাছে জানিয়ে দেওয়া। যেনো বিএনপি এই বার্তাগুলো ধারণ করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। 

সুশীল সমাজের একজন প্রতিনিধি বলেছেন যে, তারা যে সমস্ত তথ্যগুলো দিচ্ছে, সেগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ জানছে না। এই জন্যই তারা বিএনপিকে বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে। বিএনপি এখন সুশীলরা যে সমস্ত তথ্য দিচ্ছে সেগুলোই মাঠের বক্তৃতায় ব্যবহার করছেন। প্রশ্ন উঠেছে যে, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসতে না চায়, তাহলে বিএনপি কি চায়? এর উত্তরে বিএনপি'র একজন নেতা বলছেন যে, এখন বিএনপি'র প্রধান কাজ হলো বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেওয়া। বিএনপি'র ওই নেতার বক্তব্য অনুযায়ী, ক্ষমতায় থেকে হটানোর পর অনেকগুলো সংস্কার করতে হবে। সংবিধান সংশোধনসহ নানা প্রক্রিয়া বাকি রয়ে গেছে। এই প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন হবার পরই একটি নির্বাচন হতে পারে। তাহলে কি বিএনপি আরেকটি তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চায় বা একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনতে চায়? এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি'র অন্তত দুজন নেতা বলছেন অনেকটাই তাই। তারা মনে করেন যে, সরাসরি আওয়ামী লীগের হাত থেকে বিএনপি'র কাছে ক্ষমতা যাওয়ার কোনো রকম সম্ভাবনা নেই। এটা মেনে নিয়েই তারা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, পশ্চিমা দেশগুলো বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করায় বিশেষ করে তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কি হবে এ ধরনের প্রশ্ন করায় ক্ষমতার অভিপ্রায় থেকে বিএনপি সরে এসেছে। বরং বিএনপি এখন বলছে ক্ষমতা না, আমরা শুধু সরকার পতন চাই।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭