ইনসাইড বাংলাদেশ

আলোচনায় আরেফিন সিদ্দিক


প্রকাশ: 17/08/2022


Thumbnail

আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশকে একজন নতুন রাষ্ট্রপতি ঠিক করতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে এপ্রিলে। সেই হিসেবে ফেব্রুয়ারিতেই নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। কাজেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকা আওয়ামী লীগ যাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনীত করবেন তিনি যে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন সেটি নিয়ে কোনোরকম সংশয় নেই। প্রশ্ন হলো যে, আওয়ামী লীগ কাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনীত করবে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতি হিসেবে এ পর্যন্ত তিনজন ব্যক্তিকে বিভিন্ন সময় মনোনয়ন দিয়েছিলো। প্রথম ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ দেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে। এটিই ছিল আওয়ামী লীগের একমাত্র অনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া। কিন্তু বিচারপতি শাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি করার অভিজ্ঞতা আওয়ামী লীগের জন্য সুখকর হয়নি। এরপর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসে। তখন আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদেরকেই রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়। 

রাষ্ট্রপতি হিসেবে জিল্লুর রহমান দায়িত্ব পালন করা অবস্থাতেই ইন্তেকাল করেন এবং তাঁর মৃত্যুর পর আবদুল হামিদ নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আবদুল হামিদ দুই দফায় রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং সংবিধান অনুযায়ী তার আর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ নেই। প্রশ্ন উঠেছে আওয়ামী লীগ কি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করবে? নাকি আবার কোনো রাজনীতির বাইরে শিক্ষক, সাবেক বিচারপতি বা অন্য ক্ষেত্রে আলোচিত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করবেন? এই আলোচনায় এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে চলছে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহলেও নতুন রাষ্ট্রপতির সম্ভাব্যতা যাচাই নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। রাষ্ট্রপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক ব্যক্তি দুটোকেই বিবেচনা করতে পারে। তবে এই আলোচনায় হঠাৎ করে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর নাম আলোচিত হচ্ছে। বিভিন্ন মহল মনে করছেন যে, আগামী রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক এবং সাবেক উপাচার্য যদি আসেন তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এর আগে রাষ্ট্রপতি হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাম ছিল স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা এখনো বিলীন হয়ে যায়নি। বরং তিনি এখনও ভালোমতোই আলোচনাতে আছেন। তার রাষ্ট্রপতি হিসেবে নাম আসার প্রধান কারণ হলো আবদুল হামিদ স্পিকার থেকেই রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, বয়সে তরুণ এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অত্যন্ত কঠিন একটি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতে পারে। এসব বিবেচনা থেকেই হয়তো শিরিন শারমিন চৌধুরীকে এখনই রাষ্ট্রপতির মতো জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বলছেন যে, মেধাবী এই স্পিকারের এখনো দেশকে অনেক কিছু দেওয়ারই বাকি আছে। 

অন্যদিকে, ওবায়দুল কাদেরের নামও রাষ্ট্রপতি হিসেবে আলোচিত হচ্ছিলো। তবে এটির সম্ভাবনা কতটুকু সেটি সম্পর্কে আওয়ামী লীগেরই অনেকের সংশয় রয়েছে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতির বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজনদের মধ্যে বেগম সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা এরকম দায়িত্ব নেয়ার মতো নয় বলে তিনি বিবেচনায় থাকছেন না। অন্য রাজনীতিবিদদের মধ্যে যারা শীর্ষস্থানীয় নেতা আছেন তারা বিশ্বস্ততার পরীক্ষায় কতটুকু উত্তীর্ণ হতে পারবেন সে প্রশ্ন সামনে রয়েছে। আর এই বিবেচনা থেকেই সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক এবং  আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর নাম আলোচিত হচ্ছে এবং সেক্ষেত্রে আরেফিন সিদ্দিক এর নামই ইদানিং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন আড্ডায় জোরেশোরে বেশি করে আলোচনা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সাবেক এই উপাচার্যের ভূমিকাও দেখা যাচ্ছে অত্যন্ত বেশি। আর সে কারণেই তিনি আলোচনায় সামনে চলে এসেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কে রাষ্ট্রপতি হয় সেটি নির্ধারণ করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং তার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭