ইনসাইড পলিটিক্স

বাড়াবাড়ি কইরেন না, মা বইলা গো কওয়ার সুযোগ পাবেন না: শামীম ওসমান


প্রকাশ: 19/08/2022


Thumbnail

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ‘কিছু ক্ষয় হবে। কিছু শামীম ওসমানের মরদেহ দাফন হবে। কিছু বড় ধরনের ঘটনা ঘটবে। এরপরও ২০২৪ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন। এতটুকু খবর রেখে রাজনীতি করি। বাড়াবাড়ি কইরেন না, মা বইলা গো কওয়ার সুযোগ পাবেন না।’

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ডিআইটি মাঠে শোক দিবসের আলোচনা সভায় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান এসব কথা বলেন। ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

শামীম ওসমান বলেন, লেভেল ক্রস করবেন না। সবাই বুঝেন আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা শুনি। এজন্য নারায়ণগঞ্জকে ঠান্ডা রাখি। এবার কিন্তু উনার কথা শুনবো না। যে ভাষায় তুমি খেলবা, আমরা সে ভাষায় খেলবো এবং জিতবো আমরা। যত ইচ্ছা খেলো। শয়তান কখনো আল্লাহর সঙ্গে জিতে না। সে শুধু শয়তানি করতে পারে। শেখ হাসিনার ওপর আল্লাহর রহমত আছে। লন্ডনে বসে পরামর্শ দেন। কিন্তু মা মরে মরে অবস্থা মায়ের জন্য আসেন না আপনি। আপনি দেশের জন্য কেমনে করবেন?

তিনি আরও বলেন, রাজপথ শেখ হাসিনার দখলেই থাকবে। আমাদের শরীরের রক্ত টগবগ করে। যারা যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছেন তাদের দায়িত্ব শেষ। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের সম্পদ না, তিনি আগামী দিনের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ। তাকে আঘাত করলে এ দেশ এমন জায়গায় যাবে যেখান থেকে আমরা আদৌ উঠে আসতে পারবো কি-না জানি না। এ সংকটে তারা আঘাত করবে। ক্ষমতায় আসা তাদের মূল টার্গেট না। বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।

শামীম ওসমান বলেন, এই সংকটে তারা আঘাত করবে। ক্ষমতায় আসা তাদের মূল টার্গেট না। বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। ওই যে চতুর্দিক কথাটা, এর মানে ঘরে বাইরে সব জায়গায় আছে। আজ যদি শেখ হাসিনার কিছু হয়। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের সম্পদ না, তিনি আগামী দিনের বাচ্চাদের ভবিষ্যত। তাকে আঘাত করলে এ দেশ এমন জায়গায় যাবে যেখান থেকে আমরা আদৌ উঠে আসতে পারব কীনা জানি না।

তিনি বলেন, রাস্তায় স্লোগান হয়। এমন বাজে ভাষা। এরা কোন মায়ের পেটে জন্ম নিয়েছে জানি না। আমরাও তো খালেদা জিয়ার সমালোচনা করি। তারা এই মহিলাকে বাজে ভাষায় গালিগালাজ করছে। ঢাকায় তারা চ্যালেঞ্জ করছে রাজপথ দখলে নিবে। এ নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের জন্ম। আমার নেত্রীকে গালি দিবা আমরা কী চুপ করে বসে থাকতে পারি। আমাদের শক্তির উৎস হল জনগণ। আমরা জনগণকে নিয়ে চলতে চাই। 

শামীম ওসমান বলেন, আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ আছে। আমাদের মনে কষ্ট আছে। আমরা লিংক রোডের পাশে কলেজ করছি, হাসপাতাল হচ্ছে। পঞ্চবটী থেকে ফ্লাইওভার হচ্ছে। কে দিচ্ছে, শেখ হাসিনা। আমাদেরও তো প্রতিবাদের রাইট আছে। আমার মাকে কেউ গালি দিলে আমরা প্রতিবাদ করব না? প্রতিবাদের ভাষা সংযত রাখতে হবে। তারা বলে শামীম ওসমানের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে। আমার গায়ে লাগে না। তারা আমার গুনাহ কিনছে। কিন্তু আপনার মাকে নিয়ে বললে আপনি ছাড়বেন? 

একুশে আগস্টে একটা গ্রেনেড ট্রাকে পড়লে আজ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হত না। মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান দিলে বলত সন্ত্রাসী। এখনও অনেকে লাফায়। আমাদের ৪৯ জন মানুষ মরেছে। ধৈর্য্যের একটা সীমা আছে। লেভেল ক্রস করবেন না। আমি নেত্রীর কথা শুনি তাই নারায়ণগঞ্জ ঠান্ডা আছে। এবার কিন্তু জাতির পিতার কন্যার কথা শুনবো না। খেলেন যত খুশি। শয়তান কখনও জিতে না। কিছু ক্ষয় হবে কিছু ডালপালা ভাঙবে। কিছু শামীম ওসমানের লাশ পরবে। তারপরেও ২০২৪ সালে ইনশাআল্লাহ শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হবে। বাড়াবাড়ি করবেন না। মা বইলা গো বলার সময় পাবেন না। 

শামীম ওসমান বলেন, যে নেতা মায়ের জন্য আসে না আপনি দেশের মানুষের জন্য কী আসবেন। বলেন ডাক্তার লাগবে। তার স্ত্রী তো ভাল ডাক্তার। আসতেন শাশুড়ির সেবা করার জন্য। নাতি-নাতনিরা আসত। আমার কষ্ট লাগে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পরবর্তীতে উপযুক্ত কেউ হলে সেটা তার কাজের মেয়ে ফাতেমা। তাকে নিয়ে এসে বসান। 

তিনি বলেন, দয়া করে আপনারা জনগণকে সম্পৃক্ত করে আসবেন। পবিত্র কাবা শরীফ থেকে একবার শপথ করেছিলাম নিষিদ্ধ পল্লী পুনর্বাসনের মাধ্যমে সরাবো। শেখ হাসিনার উসিলায় আমরা সেটা সুন্দর ভাবে করতে পেরেছি। এবার যাওয়ার পরেও আরাফাতের ময়দানে ঠিক করেছি মানুষ সবচেয়ে বেশি যেটা চায় শান্তিতে থাকতে চায়। সন্ত্রাস চাঁদাবাজি মুক্ত সমাজ গড়তে চাই। অক্টোবর মাসে আমরা সমাজের ভাল মানুষগুলিকে নিয়ে আগের দিনের মতো পঞ্চায়েত করব। আমি নিজে চুপচাপ গিয়ে দেখব তারা ভাল না খারাপ। একটা সমাজ আমি গড়ে তুলতে চাই। আমরা বিএনপি, জাতীয় পার্টি, চরমোনাই, হেফাজতের ভাইদেরও পাশে চাই। আওয়ামী লীগ যারা করে সবাই তো ভাল লোক না। তাদের মধ্যেও অনেক ভাল লোক আছে। 

বিএনপি নেতাদের মেরে আওয়ামী লীগের দায় চাপানো হবে বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, শহরে অনেক কালো টাকা ঢুকেছে। বিএনপির মাঝারি সারির নেতাদের মেরে ফেলা হতে পারে। তাদের মেরে আমাদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা হতে পারে। কয়েকদিন আগে অধ্যাপক মামুনের (জেলা বিএনপির সদস্য সচিব) ওপর হামলা করা হয়েছে। একটুর জন্য বেঁচে গেছেন। এ এলাকার একজন লোক যার হাতে আমাদের বহু লোক মারা গেছে, তার ছেলের নাম এসেছে।’

ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদলের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মো. জুয়েল হোসেনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭