ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার দর্শন হত্যার প্রচেষ্টা ছিল ২১ আগস্ট


প্রকাশ: 21/08/2022


Thumbnail

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মদদে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উপরে গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। ২০২২ সালে সেই দিনটি আমাদের কাছে আবারও ফিরে এসেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঠিক যে কারণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল, সেই একই কারণে এবং একইভাবে ২১ আগস্টেও দার্শনিক শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রচেষ্টা করা হয়। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে একজন ব্যক্তি হিসেবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল একটি দেশের স্বাধীনতাকে, হত্যা করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর দর্শনকে। ঠিক একইভাবে ২১ আগস্ট দার্শনিক শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রচেষ্টাও হয়েছিল সেই একই কারণে। এই হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনার দর্শনকে হত্যার প্রচেষ্টা হয়েছিল। 

বঙ্গবন্ধুর কন্যা একটি কঠিন সময়ে দেশে এসে আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু খুব দুঃখের সাথে উল্লেখ করতেই হয়, যারা তাকে এনেছিলেন তাদের অনেকেই তাকে ছেড়ে চলে যান। তারা ভেবেছিলেন যে, একজন তরুণী, সে আর কি দলের প্রধান হিসেবে থাকবে। আমরাই চালাবো। কিন্তু তারা দেখলো যে, এটা সঠিক নয়। কারণ তিনি কিশোরী বয়স থেকেই দার্শনিক পিতার সাথে থেকে দর্শন সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করতে শুরু করেন। কিশোরী বয়সে বঙ্গমাতা তাকে জেলে পাঠাতেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে তার খবর আদান-প্রদান হতো। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় তিনি যেসব খবর আদান-প্রদান করেছেন, তার একটি খবর যদি বাইরে বের হতো তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা হতো না। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও ঠিকই তখন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা পালন করতে সক্ষম হয়েছেন।

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক যখন দলের দায়িত্ব নিলেন তিনি তার দার্শনিক রোডম্যাপ অনুযায়ী দলকে চালালেন এবং ২১ বছর পর আবার ক্ষমতায় আসলেন। বিশ্বের খুব কম দেশই আছে যে, কাউন্টার রেভলিউশনারীদের আবার পরাজিত করে ক্ষমতায় এসেছে। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা তার দর্শনের ক্ষমতাবলেই ২১ বছর পরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসেন এবং এসে তিনি তার দার্শনিক কাজকর্ম শুরু করেন। তিনি ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক করেন। তিনি কমিউনিটি ক্লিনিক একটি দার্শনিক ভিত্তিতে করেন। এই এক কমিউনিটি ক্লিনিক দিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা, যারা মূল স্বাস্থ্যসেবার বাইরে ছিল তাদের স্বাস্থ্যসেবা ভিতর আনেন। তিনি সেখানে মেয়েদেরকে চাকরি দিয়ে নারীর ক্ষমতায়ন করেন। একই সাথে কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকরি করার ফলে তারা আয় করা সুযোগ পায়। ফলে তাদের বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়। সেই সাথে স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। সুতরাং কমিউনিটি ক্লিনিকের ফলে মেয়েদের স্কুল শিক্ষার মান বাড়ে, বাল্যবিবাহ কমে যায় এবং সমগ্র স্বাস্থ্যব্যবস্থার একটি নতুন দার্শনিক ভিত্তি তৈরি হয়। দার্শনিক ভিত্তি সেটাই যেটা সংবিধানে আছে এবং যেটা জাতির পিতা করে গেছেন যে, সকলকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে হবে, সেটা তিনি বাস্তবে রূপদান করেছেন।

এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে যখন বিএনপি নির্বাচিত হয়, তারা এসেই প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিলো। বন্ধ করে দিলো এই জন্য যে, কমিউনিটি ক্লিনিককে গ্রামের মানুষ বলতো, এটি শেখের বেটি করছে, আবার কেউ বলতো এটা শেখ হাসিনা ক্লিনিক। এইটা তাদের জন্য অত্যন্ত গা জ্বালা করলো। শেখ হাসিনার প্রতি তাদের যেকোনো রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু তারা কাদেরকে সাজা দিলো? জনগণকে, সাধারণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে। তার ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আরও এই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়কের দিকে এগিয়ে গেল। এই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক একের পর এক যে কাজ করছিলেন, সেই সমস্ত দর্শনকে হত্যা করার জন্য এবং ব্যক্তি শেখ হাসিনা নয়, আমি বলবো দার্শনিক শেখ হাসিনার দর্শনকে হত্যা করার জন্যই তারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছিলো। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমত, আল্লাহ তাকে যখন জীবিত রেখেছেন, তখন নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে দিয়ে অনেক কাজ করাতে চান এবং আমি মনে করি যে, এই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ককে সেদিন শুধু আল্লাহ বাঁচিয়েই রাখেননি, তাকে দিয়ে এই পরাজিত শক্তিকে পরাজিত রেখেই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন এবং এখন আমাদের উন্নতি হচ্ছে। সুতরাং দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যতদিন আছেন ততদিন পৃথিবীর কোনো ক্ষমতা নাই আমাদেরকে দাবিয়ে রাখতে পারবে। 

কাল মার্কস এর একটি বক্তব্য আছে (আমার সঠিক কোটেশনটা মনে নেই) সেটা হচ্ছে যে, ইতিহাসের আবার পুনরাবৃত্তি হয়, কিন্তু একইভাবে হয় না। ফলে আমাদের যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টের মতো একইভাবে হচ্ছে না। এই ষড়যন্ত্র হচ্ছে অন্যভাবে। দার্শনিকের দর্শনকে হত্যা করার জন্য ২১ আগস্ট যারা চেষ্টা করেছিল, তারা এখন অন্যভাবে চেষ্টা করছে এবং তারা সুশীলদেরকে দিয়ে সবরকমভাবে চেষ্টা করছে বাংলাদেশকে আলাদা করে ফেলতে। কিন্তু স্পষ্ট মনে রাখা দরকার যে, আমাদের দেশ এখন পরিচালনা করছেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তার অনেকগুলি গুণাবলী আছে যেগুলো পৃথিবীতে অতুলনীয়। এইসব গুণাবলী মধ্যে যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হচ্ছে তার সততা। দেশের বাইরে তার একটি একাউন্টও নেই। দার্শনিকভাবে এমন একটি পর্যায়ে তিনি পৌঁছে গেছেন যে, তিনি আর কারও কাছে কিছু আশা করেন না। তিনি তার দর্শনের পথে একইভাবে রোডম্যাপ অনুযায়ী এগিয়ে যাবেন। আগামী ১০০ বছরের ভিতরে বাংলাদেশ এরকম দার্শনিক আর পাবে না। সুতরাং বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বিভিন্নভাবে চাপে ফেলে মনে করা যেতে পারে যে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে, এটা সম্ভব না। ক্ষমতা থেকে তাকে সরানোর একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং নির্বাচনে জনগণের ভোট পাওয়া। ৮০ শতাংশ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তাকে সমর্থন করেন।

একটি উদাহরণ দেওয়া যায়। ১৮৯৭ সালে স্বামী বিবেকানন্দ তার একটা বক্তব্যে বলেছিলেন যে, আসলে সংগঠন হচ্ছে আসল বিষয়। সেরকমই কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রুপ হলো এলাকার সাধারন জনগণ। এসব সাধারন জনগণ দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অন্ধভক্ত। তাদেরকে দিয়েও তিনি প্রান্তিক পর্যায়ে তার সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করে চলেছেন। কোথায় কমিউনিটি ক্লিনিক আর কোথায় সংগঠন, কিন্তু তিন দুটোকে মিলিয়ে দিয়েছেন। যে দার্শনিক এইভাবে চিন্তা করেন তাকে কিভাবে পরাজিত করা যাবে। আমার কাছে মনে হয়, যে দার্শনিকের চাওয়া পাওয়ার কিছু থাকে না, সে দার্শনিককে পৃথিবীর কোনো শক্তি ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে না, হত্যাও করতে পারে না। এরা আসলে অমর। তবে আমি একজন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে বলছি, আমাদের প্রয়োজন দার্শনিক শেখ হাসিনাকে। না হলে বাংলাদেশ আবার পিছিয়ে যাবে। আমরা বাংলাদেশকে আর পেছনে যেতে দিতে চাই না। আর যতো ষড়যন্ত্র যতো ভাবেই আসুক না কেন, এই ষড়যন্ত তাকে স্পর্শ করবে না। কারণ তিনি যেভাবে রাষ্ট্রকে পরিচালনা করছেন, সেভাবে সংগঠনও পরিচালনা করছেন। 

আমাদের একটিমাত্র চাওয়া যে, আল্লাহ যেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে দীর্ঘজীবী করেন এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রাখেন। যাতে করে তিনি আমাদেরকে আরও সেবা দিয়ে যেতে পারেন, দেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। আর তথাকথিত ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই পরাজিত হবে। সুতরাং আমার মনে হয়, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ব্যাপারে এখনই কমিশন করা উচিত। কমিশন করে কারা কারা জড়িত ছিল সেটা বের করা উচিৎ। শুধু বিচার করলে হবে না, এরা কি পরিস্থিতিতে সেদিন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়কের দর্শনকে হত্যা করার জন্য এরকম একটি প্রচেষ্টা করেছিল সেটি বের করা উচিৎ। সবশেষে আমি বলবো, ১০০ বছরে এই রকম দার্শনিক আমরা পাবো না। এই কারণে আমরা চাই আল্লাহ তাকে দীর্ঘজীবী করুক এবং আল্লাহ তাকে শান্তির সাথে রাখুক এবং আমাদের দেশ পরিচালনায় তিনিই যেনো থাকেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭