ইনসাইড পলিটিক্স

আশার আলো দেখছে বিএনপি


প্রকাশ: 22/08/2022


Thumbnail

আজ থেকে বিএনপি প্রতিদিনই কিছু না কিছু কর্মসূচি দিচ্ছে। সংগঠনকে শক্তিশালী এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনকে পুঞ্জীভূত করার লক্ষ্যেই এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। মূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লোডশেডিং, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সহ নানা ইস্যুতে বিএনপি এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নেতাদের মধ্যে এক ধরনের চাঞ্চল্য এবং উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপি নেতারা আগের মত হতাশা নয় বরং তাদের মধ্যে একটু চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপির কর্মীরাও মনে করছে যে নেতারা এখন আড়মোড়া ভেঙেছে। নানা কারণে বিএনপি আশার আলো দেখছে। বিএনপির লক্ষ্য হলো  নির্বাচন নয়, বর্তমান সরকারকে পতন ঘটানো। এই পতন ঘটানোর মধ্যে রাজপথে আন্দোলনের সক্ষমতা যে বিএনপির নেই সেটা বিএনপির নেতাকর্মীরা ভালমতোই জানেন। কিন্তু তারপরও বিএনপি মনে করছে যে, সাম্প্রতিক যে ঘটনাপ্রবাহ সেই ঘটনাপ্রবাহ গুলোতে আশাবাদী হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আর এই অবস্থা চলতে থাকলে নির্বাচনের আগে সরকারের অন্যভাবে পতন হতে পারে বলে তারা মনে করছেন। বিএনপির আশাবাদী হওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক কারণ রয়েছে-

১. অর্থনৈতিক সংকট: দেশে যে বিরাজমান অর্থনৈতিক সংকট রয়েছে সেই সংকট সহজে কাটবে না বলে বিএনপি মনে করছে। বিএনপির সুশীল সমাজের প্রতিনিধি যে সমস্ত অর্থনীতিবিদের সঙ্গে কথা বলছেন তারা ভয় জাগানিয়া  তথ্য দিচ্ছেন। এই তথ্যগুলো বিএনপিকে আনন্দিত করছে, উদ্বেলিত করছে। বিএনপি মনে করছে যে, আগামী এক বছর যদি অর্থনৈতিক সংকট গভীর থাকে তাহলে সরকারের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়বে।

২. মানবাধিকার ইস্যু: মানবাধিকার ইস্যুতে বিএনপি সবচেয়ে উল্লসিত। বিএনপি মনে করছে যে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশ সফর বিএনপির জন্য ইতিবাচক হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের উপর বিশেষ করে সরকারের উপর মানবাধিকার বিষয়ে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এই চাপ বহুদূর পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে বিএনপির নেতারা মনে করছেন এবং এই চাপ যদি শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে তাহলে সরকারকে বড় ধরনের পারিপার্শ্বিক সংকটে পড়তে হতে পারে।

৩. মন্ত্রীদের অযোগ্যতা এবং লাগামহীন কথাবার্তা: বিএনপির একজন নেতা বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের শত্রুর দরকার নেই। আওয়ামী লীগের নেতারাই যেভাবে লাগামহীন কথাবার্তা বলছেন সেই কথাবার্তাই আওয়ামী লীগকে সংকটে ফেলবে। উদাহরণ দিয়ে ওই বিএনপি নেতা বলেছেন যে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি হয়েছে বিএনপি ১০ টা কর্মসূচি দিলেও অত ক্ষতি হতো না। মন্ত্রীরা তাদের অস্তিত্বের জন্য এই লাগামহীন কথাবার্তা বলতেই থাকবেন এবং এই লাগামহীন কথাবার্তাগুলো আওয়ামী লীগের জন্য দুভার্বনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আওয়ামী লীগের বাচাল ব্যক্তিদের কথাবার্তা বিএনপির জন্য আশার আলো নিয়ে আসছে বলে তারা মনে করছে। 

৪. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি: বিএনপি নেতারা মনে করছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে এবং বর্তমান সরকারের ব্যাপারে যে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে সেটি বিএনপির জন্য ইতিবাচক এবং এই অবস্থা যদি নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকে তাহলে পরে বিএনপিকে কিছুই করতে হবে না। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন যে, তারা যদি আগামী নির্বাচনে চুপচাপ বসেও থাকে তাহলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানাবে।

সবকিছু মিলিয়ে বিএনপি মনে করছে যে, পরিস্থিতি তাদের জন্য অনুকূল আছে। বিশেষ করে সরকার এখন তাদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় নির্যাতন থেকে সরে এসেছে, তাদের কর্মসূচিগুলোতে বাধা দিচ্ছে না। ফলে বিএনপির কর্মীদের অংশগ্রহণ কর্মসূচিগুলোতে বাড়ছে। এভাবে যদি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি যদি এইভাবে চলতে থাকে সেক্ষেত্রে সামনে বিএনপির জন্য সু খবর আসছে বলেও বিএনপি নেতারা মনে করেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭