আকাশজুড়ে প্রখর রোদের চোখ রাঙানি। দেশে ইদানিংকালের তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জন জীবন। ভরা বর্ষার মৌসুমেও মিলছে না স্বস্তির বৃষ্টির দেখা। চলতি বছরে দেশজুড়ে বৃষ্টির পরিমাণও তুলনামূলক কম। গত মাসে দেশেই স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৫৮ ভাগ বৃষ্টি কম হয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, বাতাসে অতিরিক্ত জলীয় বাষ্পের প্রভাবে অসহনীয় গরম সইতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
এই যখন প্রকৃতির অবস্থা তখন তীব্র গরমে সবচেয়ে কষ্টে আছে কর্মজীবীরা। তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে মানবদেহের তাপমাত্রাও । তাই সারাদিন বাইরের দুঃসহ গরমে যেকোনো মুহূর্তে যে কেউ পড়তে পারেন অসুস্থতায়। দেখা দেয় ঘামাচি, ডায়রিয়া, জন্ডিস কিংবা পানিস্বল্পতার মতো নানা সমস্যা। আবার কেউ কেউ হিটস্ট্রোকের মতো মারাত্মক সমস্যায়ও আক্রান্ত হয়।
এছাড়াও বিশুদ্ধ পানির অভাব এবং ঘন ঘন লোডশেডিং এই গরমকে করে তুলেছে আরো অসহনীয়।
গরমে সৃষ্ট সমস্যাগুলো নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ড: কামরুল হাসান সাথে বাংলা ইনসাইডারের কথা হয়।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গরমের মধ্যে যেটা হয় সেটা হলো পানি স্বল্পতা। আর এর কারণ প্রচন্ড গরমে শরীরে প্রচুর ঘাম হয়। পানি স্বল্পতা যাতে না হয় সেদিকে সবার নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চারা যেয়েতু বলতে পারে না এবং শরীরে পানির পরিমাণ কম। সেকারণে স্যালাইন খাওয়াতে হবে৷
গরমের কারণে মানুষ যে বাসি খাবারটা খায় সেটা নষ্ট হয়ে যায়৷ বিশেষ করে বাহিরে যে খাবারগুলো থাকে। এর কারণ গরমে খাবার খুব দ্রুত নষ্ট হয়৷ সে খাবার খেয়ে মানুষ বমি বল, জন্ডিস থেকে শুরু করে পানিবাহিত রোগে ভূগেন বলেও জানান তিনি।
সাবেক উপাচার্য বলেন, এই সময়টাতে আরেকটা সমস্যা হলো দূষিত পানি। যেহেতু এই গরমে শরীর ঘামের ফলে অভ্যন্তরে পানি স্বল্পতা দেয় যায়, সে কারণে বাইরের পানীয়ের প্রতি সকলেরই আগ্রহ থাকে। তবে বাইরের এসব পানীয় পানি বাহিত রোগ থেকে শুরু করে বমি ইত্যাদি হয়।
এছাড়াও, এই গরমের সময়ে আরেকটা কারণ হলো- শরীরে হজম ক্ষমতা হ্রাস পায়। সে কারণে দূষিত পানিতে যে ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু থাকে সেই কারণে পেটে সমস্যা বা বমি করার সম্ভানা থাকে।
তিনি বলেন, বয়স বেধে তো রোগগুলো হয়। যেমন বয়স্কদের এক ধরণের রোগ। যেমন বয়স্করা, যাদের ডায়বেটিস আছে কিংবা হাইপারটেনশন আছে তাদের একধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যারা মধ্যবয়সী, তাদের শরীরে মোটামুটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা একটা বড় ফ্যাকটর। যারা দুর্বল লোক বিশেষ করে শিশু তারা বেশি আক্রান্ত হয়।
অসহনীয় এই গরমে সৃষ্ট সমস্যা গুলো থেকে বাচতে করণীয় সম্পর্কে ডা. কামরুল হাসান বলেন, ডিহাইড্রেশন বা পানি স্বল্পতা শরীরে এটা বেশি হয় বয়স্ক আর বাচ্চাদের৷ সেকারণেই আমাদের যেটা করতে হবে, মানুষ রোদের মধ্যে যাওয়া যাবে না। গরমের সময় রোদটাকে এড়িয়ে যেতেই হবে।
এই গরমে বাইরে বের হলে পরিস্থিতি বুঝে সাথে ছাতা নিয়ে বের হতে হবে এবং কেউ পচা-বাসি খাবার খাবেন না৷ বাইরের অস্বাস্থ্যকর বিভিন্ন ধরনের পানীয় পান করা থেজে বিরত থাকবেন। প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করবেন। এ বিষয়গুলোর দিকে সতর্ক থাকতে হবে৷