ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পাকিস্তানে বন্যায় জরুরি অবস্থা জারি, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৩৭


প্রকাশ: 26/08/2022


Thumbnail

ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান। এরই মধ্যে বন্যার কারণে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। দেশটিতে চলমান অবিরাম বৃষ্টিপাতকে ‘জলবায়ু-জনিত বিরাট মানবিক বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করে পাকিস্তান সরকার বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করে।

এদিকে বন্যা ও বৃষ্টি সম্পর্কিত নানা ঘটনায় দেশটিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩৭ জনে। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রবল বৃষ্টির জেরে সৃষ্ট বন্যায় পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত ৯৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪৩ জন শিশু। এছাড়া বন্যায় বাড়ি-ঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন অন্তত ৩ কোটি মানুষ।

পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (এনডিএমএ) সংকলিত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, চলমান এই বন্যায় দেশটির সিন্ধ প্রদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রাণহানি হয়েছে। গত ১৪ জুন থেকে প্রদেশটিতে এখন পর্যন্ত বন্যা এবং বৃষ্টি-সম্পর্কিত নানা ঘটনায় ৩০৬ জন মারা গেছেন।

একই কারণে পাকিস্তানের আরেক প্রদেশ বেলুচিস্তানে ২৩৪ জন মারা গেছেন। এছাড়া খাইবার পাখতুনখোয়া এবং পাঞ্জাব প্রদেশে যথাক্রমে ১৮৫ ও ১৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

পাকিস্তানশাসিত আজাদ জম্মু ও কাশ্মিরে ৩৭ জন নিহত হয়েছেন এবং বৃষ্টিতে গিলগিট-বালটিস্তান অঞ্চলে নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। একই সময়ে ইসলামাবাদে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এনডিএমএ’র তথ্য অনুসারে, পাকিস্তানে আগস্ট মাসে ১৬৬.৮ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। যেখানে বছরের এই সময়টিতে সেখানে গড়ে ৪৮ মিমি বৃষ্টি হয়ে থাকে। অর্থাৎ চলতি আগস্ট মাসে দেশটিতে বৃষ্টিপাত ২৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বর্তমান বন্যায় পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চল সিন্ধ ও বেলুচিস্তানে মৌসুমী বৃষ্টি যথাক্রমে ৭৮৪ শতাংশ এবং ৪৯৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানিয়েছে এনডিএমএ। মূলত বৃষ্টিপাতের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সারা দেশে, বিশেষ করে পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি করেছে। এসব অঞ্চল এই মুহূর্তে প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে এবং সিন্ধ প্রদেশের ২৩টি জেলাকে ‘দুর্যোগ-আক্রান্ত’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শেরি রেহমান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এনডিএমএ-তে একটি ‘ওয়ার রুম’ স্থাপন করেছেন। এটি সারাদেশে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তিনি স্বীকার করেছেন, অবিরামভাবে চলা ‘অবিশ্বাস্য’ এই বৃষ্টিপাত ‘ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন করে তুলেছে, বিশেষ করে দুর্গত এলাকায় হেলিকপ্টার যাতায়াত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে’।

আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছ থেকে ত্রাণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রদেশগুলো থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে আশ্রয় এবং ত্রাণের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তার ভাষায়, ‘বন্যার কারণে দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে এবং বৃষ্টিপাত বন্ধ না হওয়ায় ও পানি আসতে থাকায় প্রতিদিনই ত্রাণ ও সাহায্যের চাহিদাও বাড়ছে। এছাড়া বাড়ছে গৃহহীনের সংখ্যাও।’



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭