আজকাল মা’কে নিয়ে লেখার যুৎসই, উত্তম শব্দ খুঁজে পাই না,
দেখছি মা’র বেলায় শুধু এমনটা হয়। জীবনকালেও মা খুববেশি কিছু পায় নি,
আজন্ম বঞ্চিতা নারী, হতভাগিনীর এক মর্মস্পর্শী কাহিনীর মতো ।
হাড়কিপটে বর্ণমালা তুমিও কৃপণা, মা’র জন্য কিছুই দিতে চাও না।
বরং আমার অক্ষমতা নিয়ে উপহাস কর।
কী দুর্ভাগ্য আমার!
যেন হতচ্ছাড়া এক অকালকুষ্মাণ্ড আমি।
কত কিছু লিখি, এলোপাতাড়ি ঘুরি, গন্তব্যবিহীন পথিকের মতন হাঁটি, দাঁড়াই,
পাঠ করি।
ভিড় ভেঙে পুনরায় হাঁটি,
জনান্তিকের এক নিবিষ্ট পাঠকের মতন।
কখনো আবার দলছুট চতুষ্পদের মতন এদিক-ওদিক তাকাই,
জ্ঞাতিগোষ্ঠির চোখে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজি। মানুষ দেখি, মানুষ পড়ি, মানুষের অসীম পাঠশালার ভেতরে বাস করি।
অগুনতি, অযুত-লক্ষ ছাত্র আর অদৃশ্য শিক্ষকের মেলা।
কী আশ্চর্য! মা’কে পাই চা বাগানের অসংখ্য শ্রমজীবী নারীর মিছিলে,
তবু মা আমার অবগুণ্ঠিত, অবনমিত।
জন্ম-লজ্জায় আড়ষ্ট মুখের ওপর একটু আঁচল টেনে মা আমাকে বললেন, তিনশো তো অনেক টাকা বাবা!
মাকে দেখি মধ্যরাতেও বাতাসের প্রতিকূলে ঋজু হয়ে পথের আবর্জনা কুড়িয়ে যত্নে তুলে দিচ্ছে কর্পোরেশনের বাক্সে।
মা’র তামাটে দু’হাতের একদণ্ড নিস্তার নেই,
মা ঘুমোতে জানেনা।
ক্লান্তির অবসাদ মা’কে কেবলই ক্ষমা করে দেয়,
মা যে নিরন্তর প্রার্থনার আরেক নাম।
তবে সবাইকে বলে রাখি, আমার মা একবারই ঘুমোতে যায়।
(পৃথিবীর শ্রমজীবী মা’দের জন্য)
২৫ আগস্ট, ২০২২ খ্রিঃ
১০ ভাদ্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।