ইনসাইড পলিটিক্স

প্রতিটি গণহত্যার সঙ্গে বিএনপি জড়িত: হানিফ


প্রকাশ: 26/08/2022


Thumbnail

বিএনপি আদর্শিক ও রাজনৈতিকভাবে খুনিদের দল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, প্রতিটি গণহত্যার সঙ্গে বিএনপি জড়িত। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে পারলে পাকিস্তানি ভাবধারায় রাষ্ট্র গঠন করে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবে।’

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় ‘১৫ এবং ২১ আগস্ট বাঙালি জাতির নেতৃত্ব নির্মূলে নীলনকশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে রিসার্চ এণ্ড ডায়লগ ইন্টারন্যাশনাল (আরডিআই)।

মাহবুবউল আলম হানিফ আরও বলেন, ‘খালদো জিয়া ও তারেক রহমান রাজনীতিবিদি নয় বরং পাকিস্তানি ভাবধারার পৈশাচিক, বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি। প্রত্যেকটা গণহত্যায় এই পরিবারের সম্পৃক্ততা রয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গণহত্যায় একই যোগসূত্র পাওয়া যায়। একাত্তরের গণহত্যাও একই জায়গা থেকে পরিচালিত।’
 
তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু সুশীল রাজনৈতিক সমঝোতার কথা বলেন। কার সাথে সমঝোতার কথা বলেন? রাজনীতিবিদের সাথে রাজনীতিবিদের সমঝোতা হতে পারে, কথা হতে পারে কিন্তু হত্যাকারী, বিকৃত মানসিকতা সম্পন্নদের সাথে সমঝোতা কথা বলার কোনো সুযোগ নেই।’

২১ আগস্ট নিয়ে বিএনপি ২০০৪ সালে মিথ্যাচার করেছে, এখনো করছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ‘পাকিস্তানের শাবক তারেক রহমান লন্ডনে বসে বলছে ২১ আগস্টের জন্য শেখ হাসিনা দায়ী। যেটা উনার মা (খালেদা জিয়া) বলেছেন সংসদে। কি পরিমাণে পৈশাচিকতা থাকলে এসব বলা যায়। গণহত্যা চালানোর পর তাদের কোনো অনুশোচনা হয়নি বরং তারা এখনো নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।’

বিএনপি-জামায়াতে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানির জন্য কোনো মামলা হয়েছে এমন নজির নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা মায়াকান্না করে বলছেন তাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব মামলা ২০১২ সাল থেকে শুরু করা তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নাশকতার কারণে হয়েছে।’

বিএনপি জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে গ্রেনেড হামলাকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করেছিলো এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সংসদে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়া বললেন- শেখ হাসিনাকে আবার কে মারতে যাবে? ভ্যানিটি ব্যাগে করে তিনি নিজে গ্রেনেড নিয়ে গেছেন। কি নিষ্ঠুর পৈশাচিক রসিকতা ‘

হানিফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ছিলেন মহান ব্যক্তি, বিস্ময়কর রাজনৈতিক নেতা। যুদ্ধবিদ্ধস্ত ছোট্ট স্বাধীন দেশের দায়িত্ব নিয়ে মানুষের জন্য আবাসযোগ্য করার কাজ করে যাচ্ছিলেন। সেই বঙ্গবন্ধুকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে। সুপরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের নির্মম, নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড থেকে নারী-শিশু কেউই রেহাই পায়নি। যারা পরে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছিল তাদের কাজে প্রমাণ হয় এ হত্যাকাণ্ডে পাকিস্তান জড়িত ছিলো।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যায় জিয়াউর রহমান নেপথ্যে থেকে ভূমিকা রেখেছেন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকা মানে নেপথ্যে পাকিস্তানের ক্ষমতায় থাকা। জিয়া নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেন অথচ সরকার গঠন করলেন রাজাকারদের দিয়ে। পাকিস্তানের পক্ষে যারা ছিলো তাদের পুনর্বাসন করলেন, দালাল আইন বাতিল করে রাজাকারদের মুক্ত করে দিলেন। কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আজমকে দেশে ফিরিয়ে আনলেন। নিষিদ্ধ জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ দিলেন। এসবের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় তিনি পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছেন।’

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্ম যারা মেনে নিতে পারেনি তারাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে চায়নি, তারা বাংলাদেশকেই হত্যা করতে চেয়েছে।’ এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তিনি সেটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যারা মুক্তিযুদ্ধ চায়নি, বাংলাদেশ চায়নি- তারাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী।’

সভাপতির বক্তব্যে ড. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও ২১ আগস্টে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র একই সূত্রে গাঁথা। যতদিন দেশ থেকে সন্ত্রাস, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ দমন করতে না পারতো, ততদিন ষড়যন্ত্র চলতেই থাকবে।’ সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ ও রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক আবদুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, গ্লোবাল টিভির সিইও সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা ও বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আরডিআই’র চেয়ারম্যান, শিক্ষাবিদ ও ফোকলোরিস্ট অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান। সঞ্চালনা করেন আরডিআই’র নির্বাহী পরিচালক ড. মিঠুন মুস্তাফিজ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭