ইনসাইড গ্রাউন্ড

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কতটুকু?


প্রকাশ: 26/08/2022


Thumbnail

আগামীকাল থেকে মাঠে গড়াবে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও হংকং-এই ছয় একে অপরেরে বিরুদ্ধে লড়বে এশিয়ার রাজা হওয়ার লড়াইয়ে। প্রায় সব দলই নিজেদের সেরাটা দিতে চাইবে। কেননা এইবারের এশিয়া কাপের আসর হচ্ছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। এদিকে দরজায় করা নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টি-টোয়েন্টি গ্রাফও বরাবর নিম্নমুখী। সেই উদ্দেশ্যে দলে নানা পরিবর্তন নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অধিনায়ক পরিবর্তন থেকে হেড কোচ পাল্টে কোচিং স্টাফে নতুন সংযোজন, সবমিলিয়ে নতুন কিছুর সূচনা করতে এবার এশিয়া কাপে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তবে কতটা সম্ভাবনাময় টাইগারদের এই প্রস্তুতি!

বরাবর নতুন শুরুর কথা বলছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক করার পর এক সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেছিলেন, নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

যদিও তিনি নিজেই আবার বলেছেন, কয়েক দিন পর পরই নতুন শুরু হলে তবে সেটা জন্য ভালো কিছুও নয়। এই নতুন শুরুর প্রথম পদক্ষেপ দলে সাব্বির রহমানের সংযুক্তি।

আজ থেকে প্রায় তিন বছর আগে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন সাব্বির। যদিও এরপর আর কেউই তার জায়গায় নেমে ব্যাট হাতে ভালো কিছু করতে পারেননি। দলে তার আসা নিজের ভালো পারফরম্যান্সের চেয়ে দলে অন্য ক্রিকেটারদের ব্যর্থতার কারণেই।

সাব্বিরের সাথে দলে ফের জায়গা পেয়েছেন নাইম শেখ। টি টোয়েন্টি ওপেনারের নাইমের স্ট্রাইক রেট ১০৩। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে সাব্বির বা নাইম কেউই বলার মতো কোনো টি টোয়েন্টি ইনিংসই খেলেননি।

নির্বাচকরা বলেছেন, নাইম শেখ মূলত দলে ঢুকেছেন কারণ, তাদের হাতে বিকল্প নেই। একে লিটন দাসের ইনজুরি, তার উপর তামিম ইকবাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টি টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়েছেন। দলে স্বীকৃত ওপেনার আছেন কেবল এনামুল হক বিজয় আর নবাগত পারভেজ ইমন। এইজন্য একজন ওপেনার বাড়তি দলের সাথে নিয়ে গেছেন তারা। এর মধ্যে দিয়ে কতটা নতুন শুরু হচ্ছে তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায় যদিও।

'বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পারফরম্যান্স খারাপ', খোদ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও কিছুদিন আগেই এই কথা স্বীকার করেছেন।

পরিসংখ্যান মতে, শেষ ১৯ ম্যাচে মাত্র চারটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে বাংলাদেশের খেলা ১৩১টি ম্যাচের ৮৩টিতেই হারের বিনিময়ে মাত্র ৪৫টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে বাংলাদেশে নতুন করেই শুরু করতে হবে, নতুবা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কোনো উন্নতির আশা নেই।

২০২১ সালে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পর পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের সাথে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। এদিকে আফগানিস্তানের সাথে সিরিজ ড্র করেছে। অর্থাৎ শেষ চারটি সিরিজে একটিতেও জয় পায়নি টাইগার বাহিনী।

ব্যাটারদের স্ট্রাইক রেট ও দ্রুতগতিতে রান তুলতে ব্যর্থতা

কিছু দিন আগেই টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব হারান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিদায় বেলায় তার স্ট্রাইক রেট ১১৭। এদিকে বর্তমান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের স্ট্রাইক রেট ১২০। বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবালের স্ট্রাইক রেটও ছিল ১১৭। দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মুশফিকুর রহিমের স্ট্রাইক রেট ১১৫। এদিকে হার্ড হিটার হিসেবে বিবেচিত সাব্বির রহমানের টি-টোয়েন্টি স্ট্রাইক রেট ১২০।

ক্রিকেট দলের ভবিষ্যৎ ভাবা হয় আফিফ হোসেনকে। ৪৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেও  তার গড় ২০ এর নিচে, স্ট্রাইক রেট ১১৮। টি-টোয়েন্টি দলের নিয়মিত ওপেনার নাইম শেখের স্ট্রাইক রেট ১০৩। দলে সুযোগ পাওয়া উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান এনামুল হক বিজয়ের স্ট্রাইক রেট ১১৫। স্লগ করতে পারেন বলে ধারণা করা হয় শেখ মেহেদি হাসান, তার স্ট্রাইক রেট ১০৪। দেশ ছাড়ার আগে পাওয়ার ক্রিকেটের কথা বলেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, তার স্ট্রাইক রেট ১০৯। বাংলাদেশের একমাত্র পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের স্ট্রাইক রেট ১১৫, তাকেও হার্ড হিটার বিবেচনা করা হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে। বাংলাদেশের তিন ফরম্যাটেই নিয়মিত ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজের স্ট্রাইক রেট ১১৭। যেখানে প্রতিপক্ষ দলের বাবর আজমকে ১২৮ স্ট্রাইক রেট নিয়েও সমালোচনা সইতে হয়, ভারতের লোকেশ রাহুল ১৪২ স্ট্রাইক রেট নিয়েও দলে জায়গা নিয়ে নিশ্চিত নন।

খানিকটা স্বস্তি বোলিং নিয়ে

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টাইগারদের একমাত্র স্বস্তির জায়গা বোলিং বিভাগ। দু’জন স্পিনার নাসুম আহমেদ ও শেখ মেহেদী হাসান নিয়মিত উইকেট এনে দিচ্ছেন পাওয়ার প্লেতে। কিন্তু পুরো বিশ ওভারজুড়ে ভালো বোলিং করা হয়না।

কিন্তু বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা শক্তিশালী পেস বোলিং না থাকা। তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, সাইফুদ্দিনরা উইকেট পেলেও বেশ খরুচে বোলিং করেন।

তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে স্পিনটা কাজে দিতে পারে বলে ধারণা করা করছেন অনেকে। এই ধরনের উইকেটে বলে গ্রিপ পাওয়া যায়, স্পিনটাও ধরে ভালো। তাই আশা রয়েছে নাসুম, মেহেদীরাও সুযোগ পেলে ভালো করতে পারবেন এই ধরনের কন্ডিশনে।

তবে সামগ্রিকভাবে দলের ভালো করতে হলে পেস বোলারদের যথাযথ প্রভাব ফেলা ও ব্যাটসম্যানদের রানের গতি বাড়ানোটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে।

আগামীকাল শনিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ। ২০১৬ সালের মতো, এবারের এশিয়া কাপ হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭