ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সরকারে থাকবেনা?


প্রকাশ: 26/08/2022


Thumbnail

আগামী ডিসেম্বর মাসে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ভারত, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে ঢাকায় ফিরে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এই কাউন্সিলের দিন-তারিখ চূড়ান্ত করবেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। শোকের মাস পেরুলেই আওয়ামী লীগ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনিষ্পন্ন জেলা-উপজেলা সম্মেলন গুলো শেষ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলা-উপজেলায় সম্মেলনের তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে এই সম্মেলনগুলো অনুষ্ঠিত হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছেন। এজন্য দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা সারা দেশব্যাপী সফরের কর্মসূচিও রেখেছেন।

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনকে নিয়ে এবার নানামুখী আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে তা হলো সংগঠনকে গোছানো। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই কাউন্সিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এই কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক শক্তিকে নতুন মাত্রায় উপনীত করতে চায়। আর এ কারণেই এবারের কাউন্সিলের সবচেয়ে বড় চমক হতে পারে সরকার এবং দলকে আলাদা করা। ২০০৯ সাল থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার এবং দলকে আলাদা করার জন্য ধাপে ধাপে এগুচ্ছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দল এবং সরকারকে আলাদা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সংগঠনের জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বকেই বেছে নিয়েছিলেন। সেই ধারা অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি এখন সরকার এবং দলকে আলাদা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। আগামী কাউন্সিলে এ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত ধাপ অনুষ্ঠিত হবে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করছেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে মন্ত্রীদের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের মতো কয়েকজনমাত্র এখন কেন্দ্রীয় কমিটিতে এবং সরকারের রয়েছেন। এই অবস্থারও অবসান ঘটতে যাচ্ছে আগামী কাউন্সিলে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি আগামী কাউন্সিলে সরকার এবং দলকে আলাদা করার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া গ্রহণ করবেন এবং এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দলে এমন একজন সাধারণ সম্পাদক আসতে পারেন যিনি পূর্ণকালীন সাধারণ সম্পাদক। বিজেপি বা ভারতের কংগ্রেসে যেরকম সাধারণ সম্পাদক যিনি দায়িত্ব পালন করেন তিনি সরকারের কোন অংশ নন, সে রকম একজন পূর্ণকালীন সাধারণ সম্পাদকই আগামীবার আওয়ামী লীগ দেখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন যে, দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার জন্য সার্বক্ষণিক একজন সাধারণ সম্পাদক দরকার। কারণ, একজন মন্ত্রী তার দাপ্তরিক নানা কাজ, বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং সরকারের দায়িত্ব পালন করার পর দলকে সময় দিতে পারে না। ফলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত কয়েক বছর দেখা গেছে যে, আওয়ামী লীগের কোন্দল,দ্বন্দ্ব ইত্যাদি অনেক বেড়ে গেছে। সে কারণেই সরকার এবং দল যদি আলাদা থাকে তাহলে সংগঠনকে শক্তিশালী ভাবে গড়ে তোলা যায়। অন্য একজন নেতা বলেছেন যে, সরকার এবং দল আলাদা হলে সরকারকে নজরদারির মধ্যে এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনা সম্ভব হয়। সেই বিবেচনায় থেকেই আওয়ামী লীগ দল এবং সরকারকে আলাদা করার উদ্যোগ এবং প্রক্রিয়া আগামী কাউন্সিলে গ্রহণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এই প্রক্রিয়া যদি হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ প্রথমবারের মতো একজন পূর্ণকালীন সাধারণ সম্পাদক পাবেন। যারা মন্ত্রী থাকবেন তারা দলের কোনো পদ পাবেন না। আর যারা দলের পদ পাবেন তাদেরকে মন্ত্রিত্ব থেকে দূরে রাখা হবে। এরকম একটি উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত দলের জন্য ইতিবাচক হবে, নাকি সেটির নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এ নিয়ে অবশ্য আওয়ামী লীগের মধ্যে বিতর্ক আছে। তবে আওয়ামী লীগ যে, ধাপে ধাপে সরকার এবং দলকে আলাদা করার প্রক্রিয়া এগুচ্ছে সেটি আরও সুস্পষ্ট হবে আগামী কাউন্সিলে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭