লাল সৈকত দেখতে যেতে পারেন যেখানে

বিশ্বের বিভিন্ন জায়গাঁর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাজারো বিস্ময়। তেমনই এক বিস্ময়কর স্থান হলো লাল সৈকত বা রেড বিচ। অবশ্য এই রেড বিচ দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে চীনের লিয়াওনিং প্রদেশে অবস্থিত পাঞ্জিনে। কারণ এই লাল সৈকতের অবস্খান সেখানেই। বেইজিং থেকে ৬ ঘণ্টার ট্রাভেল করলেই আপনি পৌঁছে যাবেন এই অত্যাশ্চর্য লাল সৈকতে।

যদিও সৈকত যেমন বালুকাময় হয়, এই স্থান কিন্তু তেমন নয়। এর নাম রেড বিচ হলেও সেখানে আপনি লাল বালু দেখতে পাবেন না। আসলে সেখানে এমন এক ধরনের উদ্ভিদ আছে যেটি লাল বর্ণের। যা জন্মে বিশ্বের বৃহত্তম এই জলাভূমিতে।

দূর থেকে দেখলে মনে হবে প্রকৃতি লাল গালিচা বিছিয়ে রেখেছে। আর এই সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকদের সমাগম ঘটে এই লাল রাজ্যে।

স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিনের মতে, চীনের এই অঞ্চল বিশ্বের বৃহত্তম জলাভূমিগুলোর মধ্যে একটি। তবে সব সময় এই জলাভূমিত কিন্তু লাল রঙের উপস্থিতি দেখবেন না। শুধু বছরের একটি সময়ই এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন পর্যটকরা। আর সেই সময়টি হলো শরৎকাল।

জাদুকরীভাবে এ সময় টকটকে লাল রঙে পরিণত হয় বৃহত্তম এই জলাভূমি। অন্য সময় সবুজ উদ্ভিদিই দেখা যায় জলাভূমিতে। তবে ঠিক কোন উদ্ভিদের কারণে এমন লাল বর্ণ ধারণ করে জলাভূমি?

প্রকৃতিবিদদের মতে, সিপউইড প্রজাতির উদ্ভিদ শরৎকালে হঠাৎ তাদের রং বদলায়। এর কারণ হলো এই উদ্ভিদ উচ্চ মাত্রার লবণাক্ততা শোষণ করতে পারে।

এই জলাভূমির আশপাশের সমুদ্রের নোনা পানির কারণেই এক সময় সবুজ রঙের সিপউইড উদ্ভিদ লাল রঙে পরিণত হয়। বসন্তে সিপউইড সবুজ হয়েই জন্মায়, তারপর গ্রীষ্ম থেকে এটি ধীরে ধীরে রং পরিবর্তন করে। অবশেষে শরতে টকটকে লাল বর্ণ ধারণ করে।

সেখানকার সৌন্দর্য দেখতে প্রতি শরতে প্রচুর পর্যটক ভিড় করেন। সিএনএনর তথ্য অনুযায়ী, দুই মিলিয়নেরও বেশি পর্যটক প্রতিবছর ভিড় করেন সেখানে। রেড বিচ ছাড়াও অঞ্চলটি ২৬০ প্রজাতির পাখির আবাসস্থল। এমনকি এই জলাভূমি ধান ও বাঁশের জন্যও বিখ্যাত।

ট্রাভেল চায়না গাইড অনুসারে, এই রেড বিচের সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য দেখার সেরা সময় হলো অক্টোবর। আপনি যদি খুব তাড়াতাড়ি যান, তাহলে সিপউইড ততটা লাল হবে না আর বেশি দেরি করে গেলে এই উদ্ভিদগুলো মরে যেতে পারে। তাই সময় মতো গেলেই কেবল দেখতে পাবেন লাল সৈকত।