গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। এরই মধ্যে এই যুদ্ধের ছয় মাস পেরিয়ে গেছে। তবে যুদ্ধ থামার কোনও ইঙ্গিত নেই।
এদিকে, যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। তবে এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার যে ক্ষতি হয়েছে তার থেকে একেবারে কম ক্ষতি হয়নি পশ্চিমা বিশ্বের। রাশিয়া বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ইউরোপে দেখা দিয়েছে চরম গ্যাস সংকট। তাই আগামী শীত মৌসুম নিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে তারা। এরই মধ্যে এই আতঙ্কের কথা প্রকাশও পেতে শুরু করেছে।
বেলজিয়ামের জ্বালানি মন্ত্রী এক সতর্কবার্তায় বলেছেন, যেভাবে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়ছে, তাতে আসন্ন শীতে তা প্রকট আকার নিতে পারে। গ্যাসের দাম কমানো না গেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোকে আগামী পাঁচ অথবা দশটি ভয়াবহ শীতের মুখোমুখি হতে হবে।
এরই মধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। আরও বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে দাম রেকর্ড পরিমাণ হয়েছে। ফলে সেখানকার নাগরিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে রুবলের মান বাড়ায় এখন আগের চেয়েও বেশি শক্তিশালী রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। নিষেধাজ্ঞাকে এখন ইউরোপের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করছেন তিনি। নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতির থেকে লাভই বেশি হচ্ছে রাশিয়ার। অপরদিকে তেল ও গ্যাসের অভাবে নাকাল ইউরোপ।
ইউরোপে প্রধান গ্যাস সরবরাহকারী রাশিয়া ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিয়ে বেশ ঝামেলায় পড়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জবাবে ইইউ’র দেশে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে রুশ গ্যাস কোম্পানি। অথচ গত বছরেই রাশিয়া ৪০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করেছিল ইউরোপের দেশগুলোয়। এখন বিকল্প উপায়ের সন্ধানে তারা। জার্মানি বলছে, তারা দ্রুত সমাধানের পথ খুঁজছে।
বেলজিয়ামের জ্বালানি মন্ত্রী টিনে ভ্যান ডের স্ট্রেটেন টুইটারে লিখেছেন, ইউরোপের দেশগুলোর উচিত অবিলম্বে গ্যাসের দাম কমানো। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম সংশোধনের প্রয়োজন। আমরা যদি এ বিষয়ে কিছু না করি, তাহলে আগামী পাঁচ অথবা দশটি শীত হবে ভয়াবহ। আমাদের অবশ্যই উৎস খুঁজতে হবে, ইউরোপী দেশগুলোর দাম কমানোর বিষয়ে কাজ করতে হবে।
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার বলেছেন, জ্বালানি নিয়ে এই মুহূর্তে ইউরোপে যা ঘটছে, তা আমাদের বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, বিদ্যুতের দাম অবশ্যই কমাতে হবে।
সূত্র: বিবিসি