আগামীকাল টি-টোয়েন্টি পরীক্ষা টাইগারদের। এশিয়া কাপে গ্রুপ ‘এ এর দ্বিতীয় ও নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক, নতুন কোচিং স্টাফ ও নতুন পরিকল্পনা নিয়ে কাল মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এদিকে সাকিব আল হাসানের হাতের ছোয়ায় নতুন মাইলফলক, নিজের ক্যারিয়ারের ১০০তম টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে প্রস্তুত তিনি। এই গ্রুপে তিনটি দলের একটি বাংলাদেশ এবং অন্যটি শ্রীলঙ্কা, যারা উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের তোপে প্রায় উড়েই গেছে।
ওয়ানডেতে দারুণ দল বাংলাদেশ। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা এখনো রপ্ত করতেই পারল না। র্যাংকিংয়ে আফগানরা অবস্থান করছে বাংলাদেশের ঠিক নিচেই। ২১৯ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে ১০ নম্বরে। অন্যদিকে বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট আফগানদের চেয়ে ঠিক ৬ বেশি; ২২৫। বাংলাদেশ আছে র্যাংকিংয়ের নয়ে।
র্যাংকিংয়ের না হলেও মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে আফগানরা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দুদল এখন পর্যন্ত ৮ বার মুখোমুখি হয়েছে। সেখানে আফগানদের ৫ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৩ বার।
বাংলাদেশের জয়ের দুটিই দেশের মাটিতে। প্রথম জয়টি ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। মিরপুরের মাঠে আগে ব্যাট করে সাকিব আল হাসানের বোলিং জাদুতে ৭২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল আফগানদের ইনিংস। জবাবে ১২ ওভারেই ম্যাচ জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দ্বিতীয় জয়টি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৪ উইকেটে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।
আফগানদের ৫ জয়ের তিনিটিই ভারতের মাটিতে। দেরাদুনের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের একটিতেও জয় পায়নি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মাটিতেও রশীদ খান-মুজিবদের জয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
টি-টোয়েন্টিতে আফগানদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি ১৪৪ রানের। আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ ১৬৭। আফগানিস্তানের সর্বনিম্ন রানের ইনিংস ৭২ রানের। অন্যদিকে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন ইনিংসটি ১৫৫ রানের।
বাংলাদেশ -আফগান সিরিজে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও আফগানরা সমানে সমানে টক্কর দিয়েছে মাহমুদউল্লাহ-সাকিবদের সঙ্গে। দুদলের লড়াইয়ে ১৬৯ রান নিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। রান সংগ্রহের দিক দিয়ে রিয়াদের ঠিক পরেই আছেন মুসফিকুর রহিম। তার সংগ্রহ ১৪৯ রান। ১৪১ রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছেন আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। সেরা পাঁচে বাকি দুজন বাংলাদশের সাকিব আল হাসান ও লিটন দাশ।
ব্যক্তিগত সেরা ইনিংসটিও মোহাম্মদ নবীর দখলে। তার ৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংসটিই দুদলের লড়াইয়ের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের পক্ষে সেরা ইনিংসটি সাকিব আল হাসানের অপরাজিত ৭০ রানের।
দুদলের লড়াইয়ে সর্বোচ্চ উইকেট আফগানিস্তানের লেগ স্পিনার রশীদ খানের। ১৪ উইকেট নিয়ে শীর্ষে থাকা রশীদকে অনুসরণ করছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান। তার সংগ্রহ ১০ উইকেট।
আফগানদের পক্ষে সেরা বোলিং রেকর্ড রশীদ খানের। ১২ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন এই লেগস্পিনার। বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলিং ফিগারের মালিক নাসুম আহমেদ। ১০ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন এই স্পীন বোলার। সাকিব আল হাসান বল হাতেও বেশ ভুগিয়েছেন আফগানদের। ৮ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট শিকার আফগানদের বিপক্ষে সাকিবের সেরা বোলিং পারফরম্যান্স।
র্যাংকিংয়ে কাছাকাছি থাকা বাংলাদেশ-আফগানিস্তান দুদলের সিরিজে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। দুইবাইএর স্লো পিচে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন আফগান স্পিনাররা। দুদলেরই বোলিং স্পিননির্ভর হলেও বোলিং বিচিত্রে এগিয়ে আছে আফগানরাই। তবে বাংলাদেশের পক্ষে ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা ব্যাটিং নিয়ে। আজও যদি ব্যাটাররা জ্বলে উঠে ব্যর্থ হয় তবে আফগানদের বিরুদ্ধে ভুগতে হতে পারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলকে।