লিভিং ইনসাইড

লোডশেডিংও হতে পারে উপভোগ্য


প্রকাশ: 01/09/2022


Thumbnail

লোডশেডিং! আজকালকার দিনে শব্দটা শুনলেই আমাদের প্রত্যেকের মাঝেই একটা বিরক্তি ভাব চলে আসে।  আসলে আমরা কেউই লোডশেডিং ব্যাপারটাকে আর উপভোগ করতে পারি না। লোডশেডিং যেমন আমাদের ব্যস্ততার মুহুর্তকে হঠাৎ থামিয়ে দেয়, তেমনি এই লোডশেডিংই কিন্তু আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞের মাঝে বিরতি হয়ে এক বিন্দু সস্তি এনে দেয়।

এই আমাদের ছোটবেলার কথা ভাবুন না। মনে পড়ে, প্রতিটা সন্ধ্যায় মায়ের বকুনি খেয়ে পড়তে বসে লোডশেডিংয়ের জন্য এক প্রকার অপেক্ষাই করতাম। হঠাৎ বাতি নিভে গেলেই শুরু হয়ে যেতো নানা বাহানায় ছাদে কিংবা রাস্তার গলিতে বের হয়ে আড্ডা দেওয়ার তোড়জোড়। মায়েরাও হতেন প্রতিবেশীদের সাথে গল্পে মশগুল। তাহলে আজকের দিনে এসে আমরা কেনো এই লোডশেডিংকে আর উপভোগ করতে পারছি না?  

হ্যাঁ, ততদিনে অনেকটা সময় পার হয়েছে। পরিবর্তন এসেছে আমাদের জীবন ধারায়। আমরা হয়েছি আরও প্রযুক্তি নির্ভর, বেড়েছে ব্যস্ততা। তাই আমাদের এই যান্ত্রিক জীবনটাকেও আর উপভোগ করতে পারি না।  লোডশেডিংয়ের সময়টাতেও আমরা রোবোটের মতো বিরতি নিতে চাই না। প্রযুক্তির বদৌলতে এই সময়টাতেও আমরা ব্যাস্ত থাকি মোবাইল ফোনে কিংবা  ল্যপটপে সেরে নেই অফিসের কাজ। আর গরমে অস্বস্তির ফলে মুখে ভার করে রাজ্যের হতাশা। 

তবে আমরা চাইলেই কিন্তু সেই ছোটোবেলার দিনগুলোকে ফিরিয়ে আনতে পারি। উপভোগ করতে পারি আমাদের চোখে খলনায়ক বনে যাওয়া লোডশেডিংটাকেও। 

লোডশেডিংয়ের সময়টাতে আমরা পরিবার কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে পারি৷ আমাদের সেই অতীতকে আবারও জাগিয়ে তুলতে কিছুটা সময় গল্প করে কাটিয়ে দিতে পারি। এমনিতেও এখনকার সময় পরিবারের সাথে আমাদের অনেকেরই সম্পর্কটা হয়ে গেছে অনেকটাই প্রয়োজনমাফিক। প্রয়োজনের তাগিদে কথা বলি, না হয় নিজের কাজ নিয়ে আবার নিজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তাই এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে পরিবারের সবাই মিলে কিছুক্ষণ সময় কাটালে হয়তো পরিবারের সাথে বন্ধনটা আরও আটুট হবে।  

এই সময় প্রায় অনেকেই প্রানী পোষেন। কাউ পোষেন কুকুর বা কেউ বিড়াল। তবে কর্ম ব্যস্ততার কারণে আমরা তাদের সময় দিতে পারি না।  তাদেরও সময় দেওয়া প্রয়োজন শত কাজের ব্যস্ততায় আমরা সেটা ভুলেই যাই।  তাই লোডশেডিংয়ের সময়টাতে বাসায় থাকলে তাদের সাথে সময় কাটাতে পারেন, আপনার প্রিয় পোষা প্রানীটির যত্ন নিতে পারেন৷  এতে আপনার প্রানীটিও থাকবে সুস্থ, প্রানবন্ত এবং আপনার সমটিও কাটবে সুন্দর। 

এফএম রেডিও! যেটা বলা যায় আমাদের আধুনিক প্লেলিষ্টের ভিড়ে হারিয়ে গেছে৷ তবে একটা সময় ছিলো লোডশেডিং হলেই পরিবারের সকলে মিলে এফএম রেডিও ছেড়ে উচ্চ সাউন্ড দিয়ে সবাই মিলে পুরানো দিনের গানগুলি শুনতাম। এছাড়াও প্রতি শুক্রবার মধ্য রাত তো ছিলো চাঁদ রাতের মত! রেডিওতে একটা ভৌতিক অনুষ্ঠান হতো 'ভুত এফএম'। যার জন্য পুরো সপ্তাহ আমরা অপেক্ষা করতাম। আপনি চাইলে আবারও ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারেন আপনার পুরনো শৈশব। কিছুটা সময় ফিরে যান আপনার সেকালে। লোডশেডিংয়ের সময়টাতে ছাদে নাহয় বন্ধু, পরিবারের সাথে বা একা খোলা আকাশের নিচে বসে এফএম রেডিও শুনলেন৷  সাথে লোডশেঢিংয়ের নির্জনতা, বাতাসের সুনশান শব্দের সাথে উপভোগ করতে পারেন এই সময়টাকে।  

হয়তো আজকের দিনে এসে অনেকেই আগের মতো করে সময়টাকে উপভোগ করতে চান। তবে বাস্তবতা এতোই কঠিন যে আমরা চাইলেও এই দিনগুলোকে সেভাবে ফিরে পাই না। তবে চেষ্টা করতে ক্ষতি কই? তাই হাজারো ঝুট ঝামেলার লিস্ট থেকে লোডশেডিং টাকে ফেলে দেয়ার এখনই সময়। সময় যেমনই হোক, উপভোগ করতে শিখুন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭