ইনসাইড টক

‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন ইস্যুটি অপ্রাসঙ্গিক’


প্রকাশ: 05/09/2022


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচন কোনো ভাবেই সম্পর্কিত নয়। এটি সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। বাংলাদেশের নির্বাচন দেশের জনগণই সব সময় ঠিক করে থাকে। ব্যবসায়ী, ছাত্র সমাজ থেকে শুরু করে এমনকি নিরাপত্তা বাহিনী, আমলাসহ সবাই তারা যেভাবে নির্বাচন নিয়ে চিন্তাভাবনা করে সেভাবেই সব সময় বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সরকার গঠিত হয়েছে। বিদেশীরা মাঝে মাঝে ক্রেডিট নিতে চায় কিন্তু ভারত বা যেকোনো দেশ কারো কোনো প্রভাবই আমাদের নির্বাচন নেই এবং কারো সহযোগিতা বা সমর্থনের বিষয়টিও অপ্রাসঙ্গিক বলে আমি মনে করি। অনেকে অনেক বলে থাকেন যে, আমাদের জাতীয় নির্বাচনগুলোতে ভারতের প্রভাব থাকে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই ধারনা সম্পূর্ণ ভুল।

চারদিনে রাষ্ট্রীয় সফরে আজ ভারতে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সফর নিয়ে দেশের আগামী নির্বাচন এবং চীনের সঙ্গে বাংলোদেশের সম্পর্ক নানাভাবে আলোচিত হচ্ছে। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যেভাবে চেয়েছে, যাকে চেয়েছে সে নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। আমাদের জাতীয় নির্বাচনে ভারত বা কারো প্রভাব ছিল এমন কোনো প্রমাণ নেই। কারো প্রভাব বিস্তার করার কোনো ধরনের সুযোগও নেই। কারণ বাংলাদেশের জনগণ প্রচন্ড রাজনীতি সচেতন। বরং ভারতের মধ্যে এক ধরনের মনোভাব তৈরি হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে ভারত কিছুটা নিরাপদ। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার জঙ্গিবাদ এবং বিচ্ছিন্নবাদীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। যা সরাসরি উপকারভাগী হচ্ছে ভারত। সে বিবেচনায় হয়তো আওয়ামী লীগ সম্পর্কে ভারতের আলাদা একটা মনোভাব তৈরি হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলে ভারতের চির প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের মনোভাব কি বা কি ধরনের হতে পারে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ভারত বা চীন যে দেশেরই কথা বলি না কেন দুই দেশের সাথেই আমাদের সম্পর্ক হলো অর্থনৈতিক সম্পর্ক। এই দুই দেশের কোনো দেশের সাথেই আমাদের সামরিক সম্পর্ক নয়। ভারতের সাথে আমাদের যে সম্পর্ক সেটা যেমন আমরা চীনের বিরুদ্ধে রাখি না ঠিক চীনের সাথে আমাদের যে সম্পর্ক সেটা আমরা ভারতের বিরুদ্ধেও রাখি না। এটা ভারত এবং চীন উভয় দেশই জানে এবং এটা তাদের কাছে প্রমাণিত হয়েছে বলেও আমি মনে করি। চীন আমাদের দেশে বেশি আগ্রহী অবকাঠামো তৈরির ব্যাপারে। আর এটা হলে তো ভারতেরই লাভ। সরাসরিভাবে ভারতে সেটার উপকার পাবে। যেমন পদ্মা সেতু তৈরি করা হলো। এর মাধ্যমে সহজেই ভারত ব্যবসা করতে পারবে। তাতে তো ভারতেরই লাভ হয়েছে। তাদের অনেক খরচ কমে যাবে।

তিনি বলেন, ভারত-চীনের সম্পর্কের সাথে বাংলাদেশকে যেভাবে টেনে আনা হয় সেটা পশ্চিমা মিডিয়ার সৃষ্টি। পশ্চিমা মিডিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের কিছু মিডিয়া গুলোর সেভাবে প্রচার করছে। কিন্তু আসলে আশঙ্কা করার মতো কোনো কিছুই নেই। তাছাড়া ভারতের সাথে চীনেরও ভালো অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে। সেটা করোনার সময়ও বেড়েছে, কমেনি। দুই দেশের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের মতো বাণিজ্য হয়েছে। ভারত-চীন নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ধারণা সেটা একটা ভ্রান্ত ধারণা বলে আমি মনে করি। আমাদের অর্থনৈতিক যে উন্নয়ন সেখানে ভারতও একজন অংশীদার, অন্যদিকে চীনও একজন অংশীদার। এই দুই দেশই ভালো করেই জানে বাংলাদেশের উন্নয়ন যত হবে তাতে দুই দেশই আরও বিনিয়োগ করতে পারবে এবং তাদের নিজেদেরও প্রফিট হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭