ইনসাইড টক

‘রাশিয়ার তেল ভারতের মাধ্যমে নিলে আমেরিকার উপকারই হবে’


প্রকাশ: 06/09/2022


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, আমাদের জ্বালানি যে নিরাপত্তা বা যে সব জিনিসের সাথে জ্বালানির বিষয়টি সরাসরি জড়িত কিংবা আমরা যে প্রোডাক্ট  প্রস্তুত করি সেগুলোর মার্কেট প্লেস কোথায়? সেগুলোর মার্কেট মূলত পশ্চিমা দেশগুলো এবং বড় আকারে আমেরিকা ও ইউরোপে। আমাদের দেশে যদি জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দেয় বা এখানে যদি দাম বেড়ে যায় তাহলে তাদের যে প্রফিট মার্জিন, আমেরিকার বায়ার বা যে আমাদের কাছ থেকে প্রোডাক্ট নিচ্ছে, তার তো খরচ বেড়ে যাবে। বাংলাদেশে তো পশ্চিমা বিশ্বের জিনিস পত্রই তৈরি করা হয়। আমরা যে রেডিম্যাট গার্মেন্টস শিল্প বা  গার্মেন্টসের যে প্রোডাক্টগুলো বিক্রি করা হয় সেটা দাম যদি বাংলাদেশে বেড়ে যায় তাহলে স্বাভাবিকভাবে যে বায়ার তার প্রফিট মার্জিন কমে যাবে। সুতরাং যে বায়ার সে তো চাইবেই বাংলাদেশে যেন কম দামে প্রডিউস হয়। যত কম দামে করতে পারবে বায়ার জন্য প্রফিট মার্জিন তত বেশি ভালো হবে। কম দামে করতে পারছে বলেই সে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। 

চারদিনে রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের ধারাবাহিক পর্বে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ওয়ালমার্টসহ যে ব্যান্ডগুলো বাংলাদেশে আছে, সেগুলোর অবস্থান হয়ত বাংলাদেশে কিন্তু মালিক তো পশ্চিমারা। এখানে সে যে টাকা দিয়ে প্রোডাক্ট তৈরি করছে নিজ দেশে সে এই টাকা দিয়ে করতে পারবে না।  সুতরাং যে স্যাংশন দিয়েছে তাতে যদি তার প্রোডাক্ট তৈরি করতে খরচ বেড়ে যায় তাহলে তার নিজের ক্ষতি। সুতরাং রাশিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ যদি তেল পেয়ে সেই প্রোডাক্ট যদি আমেরিকার কাছে বিক্রি করা হয় তাহলে আমেরিকাই লাভ। গার্মেন্টস শিল্প হয়ত এখানে কিন্তু এর ক্রেতারা তো বেশির ভাগ পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোই। রাশিয়ায় আমাদের মার্কেটের পরিধি বেশি বড় নয়। যদি এমন হত যে আমরা রাশিয়া কাছে বিক্রি করছি বা সেখানে আমাদের মার্কেট বড় তাহলে আমেরিকা হয়ত আমাদের বাধা দিবে। কিন্তু তেমনটা তো নয়। আমেরিকা তো চায় যত কম দামে আমরা তাদের প্রোডাক্ট দিতে পারি, তার জন্য প্রফিট মার্জিন তত বেশি। সে জায়গায় আমাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমেরিকা তো রাগ হওয়ার দূরের কথা মনে মনে তারা খুশিই হবে। অর্থাৎ রাশিয়ার তেল ভারতের মাধ্যমে নিতে পারলে আমেরিকার উপকারই হবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারত কি ধরনের সহযোগিতা করতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চীন একটা ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ নিয়েছিল যদিও তারা সেটার বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আমরা আশা করছি সে ধরনের উদ্যোগ যেন ভারতও নেয়। যেহেতু ভারতের সাথে মিয়ানমারের ভালো সম্পর্ক আবার ভারতের সাথে বাংলাদেশেরও ভালো সম্পর্ক। আর এখন যেহেতু পুরো সামরিক বাহিনী ক্ষমতায় চলে এসেছে, আগে না হয় অং সান সু চি’র ব্যাপার ছিল এবং অং সান সু চি’র ব্যাপারে ভারতের এক ধরনের আশা ছিল কিন্তু সে স্বপ্নভঙ্গ  হয়েছে। এখন ভারত যদি ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ নিয়ে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করতে পারে তাহলে তো ভারতেরই লাভ। সারা বিশ্বে তাদের মর্যাদার আসন বেড়ে যাবে। যেমন ইউক্রেন-রাশিয়ার ব্যাপারে তুরস্ক করতে পেরেছে। তুরস্ক মধ্যস্থতা করে খাদ্যশস্য চুক্তি করতে পেরেছে। ভারতের নামীদামী কূটনীতিক আছে তারা যদি উদ্যোগ নেয় এবং উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত-মিয়ানমার এই ত্রিপক্ষী উদ্যোগ নিয়ে যদি রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করতে পারে তাহলে বিশ্বে ভারতের অবস্থান শক্তিশালী হবে। তাহলে ভারত এই সুযোগ কেন মিস করবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭