প্রকাশ: 07/09/2022
রাশিয়াকে নিয়ে
পশ্চিমা বিশ্বের ‘উস্কানিমূলক’ নীতি সঠিক ছিল না বলে মনে করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট
রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার গ্যাসের নির্ধারিত মূল্য বেধে
দেওয়ার পর বুধবার এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
বুধবার বেলগ্রেডে
সার্বিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোয়ান বলেছেন, রাশিয়াকে নিয়ে পশ্চিমের
উসকানিমূলক নীতিগুলো সঠিক ছিল বলে মনে করেন না তিনি।
অন্যদিকে, ইউরোপীয়
ইউনিয়ন যদি রাশিয়ার গ্যাসের সর্বোচ্চ মূল্য বেধে দেওয়ার মতো কোনও পদক্ষেপ নেয়, তাহলে
ইউরোপে সব ধরনের জ্বালানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির
পুতিন।
ইউক্রেন-রাশিয়া
যুদ্ধ ঘিরে মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। গত ছয়
মাসের বেশি সময় ধরে চলে আসা এই যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক
সংকট। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানির উৎপাদনকারী রাশিয়ার জ্বালানি ও খাদ্যশস্যের সরবরাহ
ভেঙে পরায় বিশ্বজুড়ে অস্থিরতাও তৈরি হয়েছে।
চলমান এই সংকটে
আগামী শীতে বিশ্বের শীর্ষ ধনী দেশগুলোতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির রেশনিং পদ্ধতি চালু করা
হয়েছে।
এদিকে, বুধবার
রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় শহর ভ্লাদিভোস্টকে ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের এক সম্মেলনে
ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার নিরর্থক ও আগ্রাসী
প্রচেষ্টা বিশ্ব অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে। আর এটি করতে গিয়ে পশ্চিমারা পুরোপুরি ব্যর্থ
হয়েছে। বিশ্বের ভবিষ্যৎ এখন এশিয়ায়।’
তিনি বলেছেন,
রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান হুমকি কোভিড-১৯ মহামারির জায়গা
দখল করেছিল। রুশ এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞার জ্বরের কথা বলছি।
যারা অন্য দেশের ওপর নিজেদের মডেল চাপিয়ে দেওয়ার, তাদের সার্বভৌমত্ব থেকে বঞ্চিত
করার ও তাদের ইচ্ছার বশবর্তী করার মতো নির্লজ্জ এবং আক্রমণাত্মক প্রচেষ্টা চালায়।’
তিনি বলেন,
‘ইতিহাসের গতিপথকে প্রতিহত করার প্রয়াসে পশ্চিমা দেশগুলো শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে
গড়ে ওঠা বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মূল স্তম্ভগুলো ধ্বংস করছে।’ ডলার, ইউরো এবং স্টারলিংয়ের
প্রতি মানুষের আস্থা কমে গেছে বলেও মন্তব্য করেছেন পুতিন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি
দক্ষিণের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেনে হাজার হাজার রুশ সৈন্য মোতায়েনের নির্দেশ দেন
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ইউক্রেনের বিপজ্জনক জাতীয়তাবাদীদের নির্মূল ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের
আকাঙ্ক্ষা প্রতিহত করতে রাশিয়া বিশেষ অভিযান চালাতে সৈন্য মোতায়েন করেছে বলে দাবি মস্কোর।
ইউক্রেন যুদ্ধের
জেরে রাশিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার একাধিক প্রচেষ্টা জারি রেখেছে পশ্চিমা
বিশ্ব। যদিও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রাকৃতিক সম্পদের ভাণ্ডারখ্যাত রাশিয়ার অর্থনীতি
যুদ্ধের এই সময়ে আরও ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এমনকি দেশটির বিরুদ্ধে পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা
আরোপ করায় বিশ্বজুড়ে খাদ্য ও জ্বালানির দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব
অর্থনীতির গতিকে অজানা পথে নিয়ে গেছে।
চলমান এই সংকটে
রাশিয়াও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুতিন বলেছেন, পশ্চিমারা তাদের যা ইচ্ছা তাই করার
মনোভাব বিশ্বের ওপর আরোপের চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে, কারণ বৈশ্বিক
প্রবৃদ্ধির আধার এখন এশিয়ায়।
তিনি বলেন, এমনকি সর্বত্র অপরিবর্তনীয় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এখন টেকটোনিক পরিবর্তন ঘটেছে। বিশ্বের গতিশীল, প্রতিশ্রুতিশীল দেশ এবং অঞ্চলগুলোর ভূমিকা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভূমিকা ব্যাপক বেড়েছে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭