ইনসাইড টক

‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতি সম্পূর্ণ নিষ্প্রয়োজন’


প্রকাশ: 08/09/2022


Thumbnail

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, বর্তমানে ছাত্ররাজনীতি নামে যা চলছে সেটাকে কোনোভাবেই ছাত্ররাজনীতি বলা যাবে না। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চালুই হয়েছিল যে সেখানে রাজনীতি মুক্ত থাকবে, সেশনজট মুক্ত থাকবে, ঠিক সময়ে পরীক্ষা হবে এবং ছাত্ররা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কোর্স শেষ করবে। আর এটাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হয়ে আসছে। সেখানে এতদিন ধরে কারো কোনো অভিযোগও ছিল না কিংবা কোনো ধরনের হস্তক্ষেপও ছিল না। আমি নিজেও এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করি। কোনো কারণে আমার একটি ক্লাস মিস হয়ে গেলে পরের দিন আমাকে সেই ক্লাসটি নিতে হয়। সেমিস্টারগুলোও খুব ধরাবাঁধা থাকে।

সাম্প্রতিক দেশের প্রায় ৪০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগ। এ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক আবদুল মান্নান এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি ছাত্ররাজনীতি চালু হয় সে ব্যাপারে আমি সমর্থন করি না। কারণ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শুরুই হয়েছিল সেখানে কোনো ধরনের ছাত্ররাজনীতি থাকবে না। বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট বলতে কিছু নেই। কিন্তু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আশঙ্কাজনকভাবে সেশনজট আছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জনগণের পয়সায় চলে, আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলে ছাত্র বা তাদের অভিভাবকদের পয়সায়। সেখানে পড়াশুনার ব্যয় সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের বহন করতে হয়, যেটা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নেই।

ছাত্রদের রাজনীতি সচেতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন ছাত্র নিশ্চিয়ই রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন থাকবে। কিন্তু তাই বলে ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে তাকে রাজনীতি করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। ১৯৯৬ সাল থেকে আজ ২০২২ সাল পর্যন্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি ছিল না। তাতে তো ছাত্ররাজনীতির কোনো ক্ষতি হয়নি, দেশের ক্ষতি হয়নি বা জনগণেরও কোনো ক্ষতি হয়নি। এখন নতুন করে কেন ছাত্ররাজনীতি শুরু করতে হবে? বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতি চালু করা সম্পূর্ণ নিষ্প্রয়োজন। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি নিজে থেকে চায় তার ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি থাকুক সেটা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আজকে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে কথা হচ্ছে, দুইদিন পরে আরেক ছাত্র সংগঠন আসবে। তখন ক্যাম্পাসগুলোতে হামলা-মারামারি সৃষ্টি হবে। ফলে শিক্ষাব্যবস্থাই অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে। এখন যেখানে একটি সুষ্ঠু পরিবেশে পাঠদান চলছে তখন শুধু শুধু সেখানে অস্থিতিশীল সৃষ্টি করার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশের রাজনীতি নিয়ে ছাত্রদের শিক্ষা দিতে পারে। দেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপট, ইতিহাস এই বিষয়গুলো শিক্ষা দিতে পারে। কিন্তু সেটার জন্য রাজনীতি করতে হবে না। এই ছাত্ররাজনীতির জন্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক নির্দোষ শিক্ষার্থী অকাতরে প্রাণ হারিয়েছে। সুতরাং ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির কোনো প্রয়োজনই নেই বলে আমি মনে করি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭