প্রকাশ: 09/09/2022
উত্তর কোরিয়া
নিজেকে পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে একটি আইন পাস করেছে। দেশটির
রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উন এই সিদ্ধান্তকে
‘অপরিবর্তনযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন এবং পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে কোনো আলোচনার
সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন।
শুক্রবার (৯
সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, নতুন পাস হওয়া এই আইনটিতে নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য পারমাণবিক হামলার অধিকারকেও
অন্তর্ভুক্ত করেছে উত্তর কোরিয়া। যদিও নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ২০০৬ সাল থেকে ২০১৭
সালের মধ্যে পিয়ংইয়ং ছয়টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে।
২০১৯ সালে তৎকালীন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে দুই দফায় আলোচনা ব্যর্থ হয়। সিদ্ধান্তহীন
শীর্ষ বৈঠকের পরে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ এবং পারমাণবিক পরীক্ষা চালান কিম
জং উন। এরপর থেকেই এই দুই দেশের মধ্যে আলোচনা থমকে গেছে।
যদিও বাইডেন
প্রশাসন ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা পিয়ংইয়ংয়ের সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক, তবে প্রেসিডেন্ট
জো বাইডেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের সাথে দেখা করবেন কিনা তা বলা হয়নি। হোয়াইট হাউস
আরও বলছে, পিয়ংইয়ংয়ের সাথে যোগাযোগ করার প্রচেষ্টা এবং দেশটির কোভিড প্রাদুর্ভাবের
বিষয়ে সহায়তার বিষয়ে দেওয়া প্রস্তাবগুলোরও এখনও পর্যন্ত উত্তর পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্র
গত বছর তার উত্তর কোরিয়া নীতি পর্যালোচনা করে এবং বলেছে যে- কোরীয় উপদ্বীপের ‘সম্পূর্ণ
পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ’ তাদের লক্ষ্য। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছিলেন, কূটনীতি এবং ‘কঠোর
প্রতিরোধ’ এর মিশ্রণের মাধ্যমে এই নীতি অনুসরণ করবেন তিনি।
এর প্রতিক্রিয়ায়
কিম বলেছিলেন, তার দেশকে অবশ্যই ‘সংলাপ এবং সংঘর্ষের’ জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
এদিকে, পিয়ংইয়ং
রেকর্ড সংখ্যক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করায় এই বছর কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা
বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমবারের মতো পারমাণবিক পরীক্ষা চালাতে পারে উত্তর কোরিয়া।
গত আগস্টের
মাঝামাঝিতে এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছিল, বর্তমান বিশ্ব
পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মূল মনোযোগইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দিকে সরে গিয়েছে।
যার সুযোগে নিয়ে কিম জং উন তার উস্কানিমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, চলতি
বছরের শুরু থেকে গত কয়েক মাসে দফায় দফায় উত্তর কোরিয়া তার বৃহত্তম আন্তঃমহাদেশীয়
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)-সহ একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। গত জুন
মাসের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র-দ. কোরিয়ার সামরিক মহড়ার জবাবে একসঙ্গে ৮টি ক্ষেপণাস্ত্র
নিক্ষেপ করেছিল দেশটি।
এর আগে গত ২৫
মে আরেক দফায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। সেসময় বাইডেন পূর্ব এশিয়া
ত্যাগ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একে একে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিলেন কিম।
এই পরিস্থিতিতে
মে মাসের শেষের দিকে উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য দেশটির
ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ওয়াশিংটনের
সেই প্রস্তাবে ভেটো দেয় চীন ও রাশিয়া।
এর আগে চলতি
বছরের জানুয়ারি মাসে সাত দফায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার
মতো অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ কীভাবে একের পর এক এমন পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে, তা
নিয়ে বহু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যদিও একের পর এক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার জন্য উত্তর কোরিয়ার
ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭