ইনসাইড এডুকেশন

শিক্ষাজীবনে শিক্ষকের গুরুত্ব কতখানি


প্রকাশ: 14/09/2022


Thumbnail

একটা শিশু, জন্মের পর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লাগে তার বুদ্ধি বিকাশ ঘটতে। এ কথা আমরা কম বেশি সকলেই নানা ধরণের থিউরিটিক্যাল আলাপে,  বই পুস্তকে অনেক পড়েছি। দ্বিতীয় ধাপে হয় বুদ্ধি বিকাশ হয়।  সাধারণত প্রাথমিক শিক্ষার সময় টাতে এই বুদ্ধি বিকাশের পরিপূর্ণ সময় বলে ধরা হয়। তাহলে বলা যায়, এই সময়কাল একজন শিশুর জীবনের বেশ গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাহলে এই সময়ে শিক্ষকের গুরুত্ব কেমন? যেহেতু শিক্ষা বা বুদ্ধি বিকাশে শিক্ষকের ভূমিকা সব থেকে বেশি সেক্ষেত্রে শিক্ষকের অবস্থান কেমন হওয়া উচিৎ? 

আমরা সাধারণত, শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকি৷ তারা কতটা পড়ছে, কতখানি নাম্বার পাচ্ছে, কতটা ভালো ফলাফল দিন শেষে আনতে পারছে তা কমবেশি সকলেই তদারকি করে। কিন্তু প্রতিটা বাচ্চা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কতটা ভালো শিক্ষা পাচ্ছে, সেখানকার পরিবেশের সাথে কতটা খাপ খাইয়ে নিতে পারছে এসব বিষয় নিয়ে আমরা ভাবি না কিংবা অতটা বোধ্যগমে নেয় না। অথচ এই দিকটা নিয়ে আমাদের আলাপ করার প্রয়োজনীয়তা সব থেকে বেশি৷ কেননা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই একটি শিশুর বুদ্ধি বিকাশের হাতেকড়ি শুরু হয়৷ সেক্ষেত্রে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো কিংবা সুস্থ মনোভাব নিয়ে আনন্দের সাথে পড়ালেখা করার জন্য শিক্ষকের সাহায্য সব থেকে বেশি প্রয়োজন। 

একজন শিক্ষক কেন ছাত্র জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন তা নিয়ে ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক রিসার্চে দেখানো হয়েছে, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা জীবনে সব থেকে বেশি অনুপ্রাণিত হয় শিক্ষকদের দ্বারা। কেননা, তারা তাদের জীবনের একটা বিশাল সময় কাটাই নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে,  শিক্ষা গ্রহণের কাজে নিয়োজিত থেকে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যত বেশি বন্ধুসুলভ আচরণ পাবে তত তাদের জন্য শিক্ষাগ্রহণ আনন্দঘন হবে,  পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোনো ধরণের অস্বস্তিকর জায়গা বলে মনে হবে না কোনো শিক্ষার্থীদের জন্যই। কোনো রকম ভায়োলেন্স হতে পারে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বস্তি বা শিক্ষা গ্রহণের মানসিকতায় বিদ্রুপ প্রভাব। 

স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় লন্ডনের এক গবেষণামূলক পরীক্ষায় দেখা গেছে, সেসকল শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর প্রতি স্বস্তি প্রকাশ করেছে তাদের অধিকাংশই ভালো শিক্ষকের সান্নিধ্যে ছিল, আবার যারা কঠোর শিক্ষক বা শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ শিক্ষকদের দ্বারা তাদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তেমন স্বস্তির বলে প্রকাশ করেনি। শিক্ষক হচ্ছেন শিক্ষা প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করে এগিয়ে নেয়ায় অনুপ্রেরণাদানকারী ব্যক্তি। জ্ঞান আহরণ ও বিতরণের প্রক্রিয়ায় শিক্ষকের অংশগ্রহণ মানুষকে আলোকিত হতে সাহায্য করে। কোনো বিষয় চর্চা বা অনুশীলনের মাধ্যমে শিক্ষক ধারণা ও জ্ঞান অর্জন করে এবং ঐ জ্ঞানের জ্যোতির দ্বারা নিজে আলোকিত হতে ও সমাজকে জ্যোর্তিময় করতে সহায়তা করে। শিক্ষকের ইতিবাচক ভূমিকার কারণেই শিক্ষার্থীর মন-মনন, মানসিক উৎকর্ষ সাধন হয়, আচার আচরণ, মন ও আত্মার ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন ঘটে, মেজাজ ও দৃষ্টিভঙ্গির উপর সুদূরপ্রসারী পরিবর্তনের প্রভাব ফেলে। 

দল-মত, শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে একজন শিক্ষক সমাজের সকল মানুষের কাছে অত্যন্ত মর্যাদা ও সম্মানের পাত্র। শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিখন প্রক্রিয়া উন্নয়ন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ বিনির্মাণে শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া সমৃদ্ধ জাতি গড়ে তুলতে শিক্ষকরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭