গত দুই সপ্তাহ ধরে জাতীয় পার্টির ভাঙ্গনের গুঞ্জন রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন খোরাড় যুগিয়েছিল। এবার সেই ভাঙ্গনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার মধ্যে দিয়ে। রাঙ্গাকে দল থেকে অব্যাহতির দেওয়ার মাধ্যমে দলের মধ্যে যেমন বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে তেমনি দলটির দেবর-ভারি দ্বন্দ্বের বিষয়টি আরও তীব্র হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও দলটির পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ আগামী ২৬ নভেম্বর জাতীয় পার্টির কাউন্সিল ডাকার পর এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে সংসদের বিরোধী দলের নেতা করতে জাপার সাংসদরা স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন।
জানা গেছে, এই চিঠি দেওয়া নিয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের কেউ কেউ আপত্তি করেছিলেন। আর এই বিষয়টি মসিউর রহমান রাঙ্গা একটি টেলিভিশনে বলেছেন। তিনি বলেছেন, স্পিকারকে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে অনেক সংসদ সদস্যের আপত্তি ছিল। এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরপরই রাঙ্গাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। এদিকে দল থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের কীভাবে রাজনীতি করেন তা দেখে নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন মসিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি দাবী করে বলেন, আমি সংসদের বিরোধী দলীয় চিপ হুইপ। আমাকে রওশন এরশাদ হুইপ বানিয়েছেন, জি এম কাদের চাইলেও আমার এই পদ খাইতে পারবেন না।
মসিউর রহমানের এমন বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ধারণা করা হচ্ছে যে, মসিউর রহমান রাঙ্গাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ফলে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারেন দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ। কারণ মসিউর রহমান রাঙ্গা রওশন এরশাদের একজন ঘনিষ্ট বলে জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন। তাছাড়া রাঙ্গাকে অব্যাহতি দেওয়ার পর জি এম কাদের যে রওশন এরশাদকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছেন সেটিও প্রকাশ পেয়েছে। ফলে রওশন এরশাদও এখন জি এম কাদেরর বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেবেন এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। তবে সেই পাল্টা পদক্ষেপ কি হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।