ইনসাইড পলিটিক্স

৭ সাংগঠনিক সম্পাদকই এমপিদের পরীক্ষক


প্রকাশ: 15/09/2022


Thumbnail

আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। গত বুধবার আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী নির্বাচনে অনেক প্রার্থী পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন এবং তিনি পঙ্কজের অব্যাহতি এর ইঙ্গিত বলেও মন্তব্য করেছেন। এই প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানামুখী আলাপ-আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, আওয়ামী লীগের যে ৭ জন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আছেন তাদেরকে সবগুলো নির্বাচনের অবস্থা যাচাই-বাছাই করা এবং খোঁজখবর নেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পাদকদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি সাংগঠনিক সম্পাদককে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার ধরে ধরে খোঁজখবর নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের ৭ জন সাংগঠনিক সম্পাদক রয়েছেন এবং তাদেরকে সাতটি বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আহমদ হোসেন সিলেট বিভাগের দায়িত্বে, বিএম মোজাম্মেল হক খুলনা বিভাগের দায়িত্বে, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বে, এস এম কামাল রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বে, মির্জা আজম এমপি ঢাকা বিভাগের দায়িত্বে, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ময়মনসিংহের দায়িত্বে এবং সাখাওয়াত হোসেন শফিক রংপুরের দায়িত্বে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, এই সাংগঠনিক সম্পাদকরা অন্যবারের চেয়ে এবার অনেক বেশি সক্রিয়। তাদের নেতৃত্বেই সারাদেশে আওয়ামী লীগের জেলা-উপজেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং নতুন কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এ সমস্ত কমিটিতে কোনো বিতর্কিত অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড যেন না থাকে সেটা নিশ্চিত করার জন্য সাংগঠনিক সম্পাদকরা সার্বক্ষণিকভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন এবং যেকোনো সম্মেলনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা গ্রহণ করছেন।

সারাদেশে উপজেলা নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কারা কারা দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন এবং দলের স্বার্থের পরিপন্থী কাজ করেছেন সে সংক্রান্ত রিপোর্টও সাংগঠনিক সম্পাদকরা আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে দিচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী সম্পর্কেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দলে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত সে বিষয়েও তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে রিপোর্ট দিচ্ছেন। এই প্রেক্ষিতে সাতটি বিভাগ ৬৪টি জেলার ৩০০ আসনের ব্যাপারেও খোঁজখবর রাখছেন সাংগঠনিক সম্পাদকরা। সাংগঠনিক সম্পাদকরা এবার এমপিদের প্রথম পরীক্ষক হিসেবে কাজ করছেন বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো মনে করছে। তাদের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি একটি প্রাথমিক ধারণা গ্রহণ করবেন। এছাড়াও সারাদেশে মাঠ জরিপের কাজ করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সভাপতির নিবিড় পর্যবেক্ষণে। এই মাঠ জরিপ, সাংগঠনিক সম্পাদকদের রিপোর্ট এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নিজস্ব উদ্যোগে প্রত্যেকটি জেলার নির্বাচনী এলাকার এমপি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। সবকিছু মিলিয়ে প্রার্থী বাছাই চূড়ান্ত করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে গতকালের সংবাদ সম্মেলনের এটি স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগ এবার তার মনোনয়নে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলছেন যে, এবাররে নির্বাচন হবে অনেক কঠিন এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তাই নির্বাচনের আগে প্রার্থী চূড়ান্তকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। প্রার্থী চূড়ান্তকরণের কাজটিকে একটি চলমান প্রক্রিয়া বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, প্রত্যেক এমপি আওয়ামী লীগ সভাপতির দৃষ্টির মধ্যে আছেন এবং তাদের ভাল-মন্দ সব কাজের হিসেব-নিকেশ করা হচ্ছে। যারা ভালো কাজ করছেন, এলাকায় যাদের জনপ্রিয়তা হচ্ছে তারা আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন। আর যারা দলের স্বার্থ পরিপন্থী কাজ করছেন তারা আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭