ইনসাইড পলিটিক্স

রাজাকারপুত্রের সত্যকথন: পাকিস্তানের বিএনপি প্রেম


প্রকাশ: 17/09/2022


Thumbnail

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইদানীং কথাবার্তায় লাগামছাড়া হয়েছেন। লাগামছাড়া কথাবার্তা বলতে যেয়ে অনেক বেফাঁস মন্তব্য যেমন করছেন, তেমনি অনেক সত্য তার পেটের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেছেন যে, পাকিস্তান সরকারের থেকে এ সরকার নিকৃষ্ট, পাকিস্তান আমলেও এদেশের মানুষ ভাল ছিল। তার এই বক্তব্য নিয়ে রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কেন এই মন্তব্য করলেন, তিনি কি ভুল মন্তব্য করেছেন, এরকম বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় চলছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কেন এই বক্তব্য রাখলেন সেটি বিশ্লেষণ করতে গেলে তার অতীত পরিচয়টাই জানা প্রয়োজন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একজন কুখ্যাত রাজাকারের সন্তান। তার পিতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তান হিসেবে তিনি পাকিস্তানকে সবসময় আলোকোজ্জ্বল করে রাখবেন, পাকিস্তান ভালো ছিল বলবেন, এটাই স্বাভাবিক। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন। কিন্তু এরকম কোনো কাগজপত্র, দলিল বা প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যায়নি যাতে প্রমাণিত হয় যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বরং রাজাকার পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা ফখরুল সবসময় বাংলাদেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতাবিরোধী কাজ করেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রধান লক্ষ্যই হলো বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করা। আর এ কারণেই তার মনের কথা তিনি গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ে বলেছেন।

অনেকেই বিভিন্ন সময় প্রশ্ন করার চেষ্টা করেছে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মত অযোগ্য, ব্যর্থ একজন নেতা কিভাবে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন? তৃণমূলের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই, দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী তাকে পছন্দ করেন না। তারপরও কোন খুঁটির জোরে তিনি মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন? বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের ফল বিপর্যয়ের পর মির্জা ফখরুলের সরে যাওয়াটা ছিল অনিবার্য এবং অবধারিত। কিন্তু সেই সময় টিকে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের সর্বোচ্চ নেতা তারেক জিয়ার বদান্যতার কারণেই ফখরুল টিকে গেছেন। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলামের দিকে যাওয়ার পিছনে শুধু যে তারেক জিয়ার বদান্যতা ছিল তা নয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হলেন বাংলাদেশের পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের প্রতিনিধি। তার বাবা যেহেতু রাজাকার ছিল, তিনি যেহেতু রাজাকারের উত্তরাধিকার সেজন্য পাকিস্তানের পছন্দের ব্যক্তি হিসেবেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলে অবাঞ্ছিত হওয়ার পরও এখনো বিএনপির মহাসচিব হিসেবে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

বাংলাদেশ বিএনপির সৃষ্টি হলো পাকিস্তানের ল্যাবরেটরিতে। পাকিস্তান ১৯৭১ সালের পরাজয়ের পর বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রে মাতে। পাকিস্তান কখনোই বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, সার্বভৌম এবং স্বনির্ভর রাষ্ট্র হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াক, এটি চায়নি। আর চায়নি জন্যই ১৯৭১ সালের পর থেকেই নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যখন বাংলাদেশের বিজয় অনিবার্য সেই সময়ে পাকিস্তান বেশকিছু চরকে বাংলাদেশে প্রেরণ করেছিল। জিয়াউর রহমানের ভূমিকাও একাত্তরে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের একজন চর হিসেবেই এখন প্রমাণিত হচ্ছেন। বিভিন্ন গবেষণা এবং তথ্য-উপাত্তে দেখা যাচ্ছে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ছিল আসলে একজন এজেন্টের ভূমিকা। এছাড়াও পঁচাত্তরের এর খুনিরা যারা শেষ মুহূর্তে পাকিস্তানের দুর্গম এলাকা থেকে বাংলাদেশে এসেছেন, তারা সবাই পরবর্তীতে প্রমাণ করেছেন যে তারা পাকিস্তানের এজেন্ট ছিলেন। পাকিস্তানের এজেন্টদের দিয়েই পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্টের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করানো হয় এবং এরপর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন।

বিএনপি সৃষ্টির পেছনে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি আইএসআইয়ের প্রধান স্বীকার করেছেন যে, বিএনপিকে নির্বাচনে জেতার জন্য তারা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। অর্থাৎ বিএনপির মূল রাজনীতি হলো পাকিস্তানে। বিএনপি পাকিস্তানের চিন্তা-ভাবনা এবং পাকিস্তানের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের রাজনৈতিক দল দেখা যায়। আর এ কারণেই পাকিস্তান-বিএনপির প্রেম কোনো লুকনো বিষয় নয়। যে কয়বারই বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে সে কয়বারই পাকিস্তান রীতিমতো উৎসব করেছে। আর এখন মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্য দিয়ে প্রমাণিত হলো, তিনি হলেন বাংলাদেশে পাকিস্তানের প্রতিনিধি। পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষা করাটাই তার প্রধান কাজ। যখন পাকিস্তান বন্যায় হাবুডুবু খাচ্ছে, যখন পাকিস্তানের অর্থনীতি ধসে পড়েছে, যখন পাকিস্তান একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠিত ঠিক সেই সময় বিএনপি নেতার পাকিস্তান প্রেম তার আসল চরিত্রকেই উন্মোচন করলো।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭