ইনসাইড পলিটিক্স

যেকোনো মূল্যে সরকারের পতন ঘটাতে চায়: হানিফ


প্রকাশ: 17/09/2022


Thumbnail

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, গোলযোগ সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার বিএনপি'র লক্ষ্য। তারা যেকোনো মূল্যে সরকারের পতন ঘটাতে চায়। বিএনপি বলে তারা নির্বাচনে যাবে না। তারা জানে তাদের দলের দুই শীর্ষ নেতা দুর্নীতি, সন্ত্রাসী ও হত্যার দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত তাদেরকে জনগণ ভোট দেবে না। তারা জানে বলেই তারা চায় না নির্বাচন হোক।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাথে মতবিনিময় সভার শুরুতে প্রধান অতিথির এসব কথা বলেন।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি-জামায়াত আবার নতুন করে রাজপথে নেমেছে। সভা-সমাবেশের নামে তাণ্ডব চালাচ্ছে। তাদের ষড়যন্ত্র শেষ হয়ে যায়নি। তারা উস্কানি দিচ্ছে, পায়ে পা দিয়ে গণ্ডগোল করার চেষ্টা করছে। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ তাদের তাণ্ডব শেষ হয়ে যায়নি। 

তিনি বলেন, তাদের লক্ষ্য, সরকারের পতন ঘটাতে পারলে অন্য কোনো সামরিক সরকার যদি আসে তাহলে তাদের দণ্ড মওকুফ করে নির্বাচন করার সুযোগ দিবে। এটাই তাদের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশে এই লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করার কোনো সুযোগ নেই। 

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, আমরা আশা করি সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিবে। তারপরও যদি কোনো রাজনৈতিক দল অংশ না নেয় তাহলে তা তাদের ব্যাপার। আমরা সকলকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। 

দলের নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সামনে জাতীয় সংদ নির্বাচন। ২০২৪ সালের ৮ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ করেছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিতে কাজ করতে হবে। দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতির পথ মসৃন ছিলো না। বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি উন্নয়ন, অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে তৎপর। তাই আগামী নির্বাচন মসৃন পথে হবে এমন ভাবার কারণ নেই।  

হানিফ বলেন, বিএনপি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। আইনের শাসনে বিশ্বাস করে না, সংবিধান মানে না। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর বিএনপি-জামায়াত ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিলো। যাতে করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, দুর্নীতিবাজ বেগম খালেদার বিচার বন্ধ করা যায়। 

বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে মির্জা ফখরুল সাহেব বললেন, বর্তমান বাংলাদেশের অবস্থা না কি পাকিস্তান আমলে ভাল ছিলো। এই কথা বলার মধ্য দিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন তিনি পাকিস্তানের আদর্শে বিশ্বাসী। তারা সব রাজাকারের বংশধর তাদের কথাবার্তা দিয়ে তারা প্রমাণ করছে। তারা এখনো আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশে বিশ্বাস করে না, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি দেখতে পারে না। তারা চায় বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হোক। তাদের চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণায় পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রিয়। এই দলের অধিকাংশ নেতাই পাকিস্তানের আদর্শে অনুসারী, পাকিস্তানী ভাবাদর্শে বিশ্বাসী।

আন্তর্জাতিক পরিসরে বঙ্গবন্ধু কন্যার মতো অতীতে কোনো বাংলাদেশী রাষ্ট্রনায়ক মূল্যায়িত হননি উল্লেখ করে হানিফ বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই মূল্যায়ন সম্মান ও গৌরবের। শেখ হাসিনার উপর দেশের মানুষের আস্থা আছে। বর্হিবিশ্বেরও আস্থা আছে। 

আগামী নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হবে জানিয়ে তিনি দলের নেতাদের বলেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি জনগণকে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে দেশ জঙ্গিবাদের চারণভূমি ছিলো। মানুষের মাঝে হতাশার চিত্র ছিলো। আওয়ামী লীগ আসার আগে যারা ক্ষমতায় ছিলো তাদের কারণে দেশের অর্থনীতি হোঁচট খেয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে বর্হিবিশ্বে নেতিবাচক ধারণা ছিলো। শেখ হাসিনার কারণে বাংলাদেশ সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দেশে উন্নয়ন, অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি বলেন, শ্রীলংকা দেউলিয়া হওয়ার কারণে সরকারের পতন হয়েছে। সেই সময়ে আমাদের দেশের কিছু রাজনীতিবিদ বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত বলেছিলো বাংলাদেশ শ্রীলংকার পথে হাঁটছে। বাংলোদেশের অবস্থা খুব খারাপ। আমরা শ্রীলংকার দিকে হাঁটছি। তখন আমরা বলেছি, বাংলাদেশ কখনো শ্রীলংকা হবে না।

বিএনপির শাসনামলে দেশে ভয়াবহ খাদ্য ঘাটতি ছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে প্রথমে গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষিকে। সার কৃষকের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন। ভালো বীজ, সারের সুসম বন্টনের কারণে আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

হানিফ বলেন, সারা বিশ্বে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে। করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে। নেদারল্যাণ্ডে ৩০ শতাংশ, আমেরিকা কানাডা, যুক্তরাজে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ দাম বেড়েছে। বাংলাদেশ এই বিশ্ব ব্যবস্থার বাইরে নয় যার কারণে কিছু জিনিসের দাম বেড়েছে। এছাড়া কিছু ব্যবসায়ীর অসৎ মানসিকতার কারণে কিছু জিনিসের অতিরিক্ত দাম বেড়েছে। তবে সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতি অস্বস্তিকর অবস্থায় নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশের অর্থনীতি গতিশীল রেখে কাজ করে যাচ্ছেন। 

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ ছাড়াও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের আমন্ত্রিত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭