আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সংঘর্ষে নিহত ২ শতাধিক

আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে নতুন করে শুরু হওয়া সীমান্তে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১০ জন ছাড়িয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার যৌথভাবে দুই দেশের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

গত সপ্তাহের মঙ্গলবারে শুরু হওয়া সংঘাতে উসকানির জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছে দুই পক্ষ। শেষে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে বৃহস্পতিবার এই সংঘাত বন্ধ হয়।

গতকাল শুক্রবার নিজেদের নিহত সেনার সংখ্যা ৭১ থেকে বেড়ে ৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানায় আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

এদিকে, এখন পর্যন্ত আর্মেনিয়ার নিহত সেনার সংখ্যা ১৩৫ জন দাঁড়িয়েছে বলে জানান আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান। তবে এটাই চূড়ান্ত সংখ্যা নয়। আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে তিনি মন্ত্রিসভাকে জানান।

আর্মেনিয়ার মানবাধিকারবিষয়ক ন্যায়পাল ক্রিস্টিনা গ্রিগরিয়ান জানান, আজেরি বাহিনীর গোলাবর্ষণে নিহতের মধ্যে একজন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ছয়জন।

আজারবাইজান ভূখণ্ডের মধ্যে অবস্থিত নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে প্রতিবেশী দুটি দেশ এখন পর্যন্ত দুইবার পুরোদমে যুদ্ধে জড়িয়েছে। পাশাপাশি তিন দশক ধরে নিয়মিত বিরতিতে ছোটখাটো সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই দেশের সেনারা।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সীমানা অনুযায়ী নাগোর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ। তবে সেখানকার বাসিন্দারা জাতিগতভাবে আর্মেনীয়।

নব্বইয়ের দশকে অঞ্চলটি নিয়ে পুরোদমে যুদ্ধে জড়ায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। এতে ওই অঞ্চলের পাশাপাশি নিজেদের বিশাল ভূখণ্ড হারায় আজারবাইজান। দেশটির সাত লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।

এরপর সীমান্ত সংঘাতের জের ধরে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আবার পুরোদমে যুদ্ধে জড়ায় দেশ দুটি। ছয় সপ্তাহের লড়াইয়ে নিহত হন প্রায় ৬ হাজার ৫০০ মানুষ। পরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি হয়।

এ লড়াইয়ে নিজ ভূখণ্ড উদ্ধার করে আজারবাইজান। তবে চুক্তিতে নাগোর্নো-কারাবাখের ‘স্ট্যাটাস’ অনিষ্পন্ন ছিল। আলোচনার মাধ্যমে সেটি নির্ধারণ করার কথা বলা হয় চুক্তিতে। মস্কো সেখানে দুই হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে। কিন্তু শান্তিপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আর্মেনিয়া গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ আজারবাইজানের।