ইনসাইড পলিটিক্স

ঢাকা দখলের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি


প্রকাশ: 18/09/2022


Thumbnail

বিএনপি আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন রকম কর্মসূচি দিয়েছে। এই কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম হলো ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশের কর্মসূচি। এই কর্মসূচিগুলো যতটা সাড়া দেবে বলে তারা আশা করেছিলো বাস্তবে তারচেয়ে বেশি সাড়া দিয়েছে বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন। বিশেষ করে মিরপুরে এবং বনানীতে আওয়ামী লীগের বাঁধা প্রদানের ফলে এই কর্মসূচীতে অনেকটাই চাঙ্গাভাব এসেছে। বিএনপির মূল লক্ষ্য হলো ঢাকা দখল করা। ২০১৩ এবং ২০১৪ সালের আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ এটি উপলব্ধি করেছেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত ঢাকায় বড় ধরনের শক্ত আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত সরকারের ওপর কোনরকম চাপ সৃষ্টি হবে না। আর এ কারণেই বিএনপির সমস্ত পরিকল্পনা ঢাকাকে ঘিরেই। আগে বিনএপি ঢাকার বাইরে সভা-সমাবেশ ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করেছিলো, ঢাকার বাইরে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দে গিয়েছিলো, ঢাকার বাইরে জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগও করেছিলো। কিন্তু সেই সমস্ত কর্মসূচিতে খুব একটা ফল হয়নি। বরং ঢাকায় বিএনপি কিছু করতে না পারার কারণেই আন্দোলনে বিএনপি ব্যর্থ হচ্ছে বলে বিএনপি নেতৃবৃন্দ মনে করে। আর এ কারণেই এবার যে ধাপে ধাপে আন্দোলনের কর্মসূচি পরিকল্পনা বিএনপি গ্রহণ করেছে, সেই পরিকল্পনার মূলটি ঢাকাকে ঘিরেই। মূলত ঢাকা দখলই এখন বিএনপির লক্ষ্য। বিএনপি নেতারা স্বীকার করছেন যে, ঢাকার কর্তৃত্ব যদি গ্রহণ করা যায় তাহলে সারাদেশে আন্দোলন চাঙ্গা করা খুব কঠিন ব্যাপার হবে না। ঢাকা দখলের ক্ষেত্রে বিএনপি এখন বাস্তব কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে বলে মনে করছে। এর মধ্যে-

প্রথমত, তারা সংগঠনকে গুছিয়েছে। ইতিমধ্যে বিএনপির উত্তর এবং দক্ষিণের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি গঠনের পর থেকে বিএনপি ঢাকায় কিছু কিছু কর্মসূচি দেয়ার চেষ্টা করছে।

দ্বিতীয়ত, বেশকিছু তরুণ এবং জনপ্রিয় নেতাকর্মী ঢাকায় পেয়েছে। ইশরাক হোসেন, তাবিথ আউয়াল মিন্টুর মত নেতৃবৃন্দ এখন ঢাকায় নানাভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। একটি বিএনপির জন্য ইতিবাচক।

তৃতীয়ত, ঢাকায় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে দুর্বল বলে বিএনপির নেতৃবৃন্দ মনে করছে। বিশেষ করে ঢাকার উত্তর এবং দক্ষিণে যে সমস্ত নেতৃত্ব আছে তারা তাদের নিজেদের কাজেই ব্যস্ত। সাংগঠনিক দিক থেকে আওয়ামী লীগ অন্তত দুর্বল না।

বিএনপির একজন নেতা বলেছেন যে, এখন পুলিশের সহায়তা ছাড়া আওয়ামী লীগ ঢাকায় কোথাও দাঁড়াতে পারবে না। এরকম একটি বাস্তবতায় বিএনপি চাইছিলো যে, তাদের সভা-সমাবেশ গুলোতে উস্কানি আসুক, বাধা আসুক এবং হামলা হোক। এরকম পরিস্থিতি যদি তৈরি হয় তাহলে সেই আন্দোলনগুলো আরও চাঙ্গা হবে এবং আস্তে আস্তে পুরো ঢাকা শহরে বিএনপির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হবে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলছেন যে, আওয়ামী লীগে যারা মাঠের কর্মী ছিল তারা এখন দলে নেই। তাছাড়া আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতারাই নানাভাবে ব্যস্ত রয়েছে। এটি বিএনপির জন্য সুযোগ। আর এই সুযোগটি কাজে লাগানোর জন্য বিএনপি ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে বলে জানা গেছে। এখন প্রশ্ন হলো যে, বিএনপির ঢাকা দখলের পরিকল্পনা কিভাবে বাস্তবায়িত হবে? বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলছে, ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হবে। কারণ, সরকার এখন অসহিষ্ণু এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা এই কর্মসূচিগুলোকে  সফল করার জন্য সহায়তা করবে। তাই যদি হয় তাহলে সামনের দিনগুলোতে ঢাকার রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এবং নানারকম সন্ত্রাস এবং সহিংসতার ঘটনা হরহামেশাই ঘটতে পারে বলে বিভিন্ন মহল আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭