ইনসাইড হেলথ

আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু


প্রকাশ: 22/09/2022


Thumbnail

এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। এতদিন বিচ্ছিন্নভাবে রাজধানীতে শনাক্ত হলেও এখন জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গুরোগী। রাজধানীর হাসপাতালেও বেড়েছে ডেঙ্গুরোগী ভর্তির সংখ্যাও। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। এর মধ্যে চলতি মাসেই মারা গেছে ২৫ জন। এই মৃত্যুর বড় অংশই ঢাকা মহানগর ও কক্সবাজার জেলায়।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবশেষ তথ্যে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪৩৮ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর এক দিনে সর্বোচ্চ রোগীর রেকর্ড। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশজুড়ে এক হাজার ৫৬০ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরের ৩২৮ জন ও ঢাকার বাইরের ১০৩ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ১ হাজার ৫৫৭ জন ডেঙ্গু রোগী। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১২ হাজার ৪৩৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ঘনবসতিপূর্ণ এ শিবিরগুলোতে নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে থাকছে। পাশাপাশি মশার লার্ভা ও উড়ন্ত মশা মারার উদ্যোগ কম। রোহিঙ্গাদের মধ্যে সচেতনতারও অভাব রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ডেঙ্গুতে ঢাকা মহানগরে ২১ ও কক্সবাজারে ১৮ জন মারা গেছে। এর বাইরে চট্টগ্রামে ৩ ও বরিশালে ৪ জন মারা গেছে।

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ১১৫ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ১০০ জন এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে।

১৫ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে সারা দেশে মশাবাহিত রোগপ্রতিরোধে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে ২০১৯ সালে তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। মশক নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ তৎপর হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার বর্ষাকালীন মশা জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার ১৩ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা বা শূককীট পাওয়া গেছে। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে পাওয়া গেছে প্রায় ১২ শতাংশ বাড়িতে।

জরিপে মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে দক্ষিণ সিটির কমলাপুর, মতিঝিল, নবাবপুর, বংশাল, ওয়ারী ও নারিন্দা এলাকায়। আর উত্তর সিটির সেনপাড়া পর্বতা, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মহাখালী, বেগুনবাড়ি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা ও আগারগাঁওয়ে।

সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। তবে জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই চার মাস মূল মৌসুম। চলতি বছর জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আগস্ট মাসে আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার ব্যক্তি। সেপ্টেম্বরের প্রথম ২১ দিনেই আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ২৫৭ জন।

তবে হাসপাতালে যত রোগী ভর্তি হচ্ছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। যেমন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে কক্সবাজার জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৮ জন। অন্যদিকে কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, এ জেলায় ১৩ হাজারের বেশি মানুষের শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭