ইনসাইড টক

‘না খেয়ে থাকবো কিন্তু ভালো চরিত্র করতে চাই’


প্রকাশ: 23/09/2022


Thumbnail

নির্মাতা সাইদুল ইসলাম রানা পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘বীরত্ব’। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক মামনুন ইমন ও নবাগত নায়িকা সালওয়া। গত শুক্রবার দেশের ৩৫ হলে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি।  সিনেমাটির গল্পটা মফস্বল শহরের। সেখানকার সাধারণ মানুষের আবেগ-অনুভূতি যেমন জড়িত, তেমনি আছে অন্ধকার জগতের ভয়াবহতা। সবকিছু ছাপিয়ে গল্পটিতে মুখ্য হয়ে ওঠে চিকিৎসকদের ত্যাগ ও বীরত্বের আখ্যান।

ছবিটি দিয়ে নিজেকে অন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছেন ইমন। সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে কথা হল এই নায়কের।

বাংলা ইনসাইডার: বীরত্ব দিয়ে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

ইমন: বীরত্ব ছবিটা দিয়ে আমি আমার স্বপ্নের চেয়েও বেশি সাড়া পাচ্ছি। পাসওয়ার্ড মুভির পর এভাবে কেউ অভিনয়ের প্রশংসা করেছে যেটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।

বাংলা ইনসাইডার: বীরত্ব দিয়ে দর্শক এক নতুন ইমনকে আবিষ্কার করেছে। কেমন উপভোগ করছেন বিষয়টি?

ইমন: সত্যি মানুষ আজ আমাকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করলো। আমাকে আজ অভিনেতা হিসেবে সবাই পেয়েছেন এখানে এবং আজকের যে একটা স্পেশাল স্ক্রিনিং ছিল এখানে। সব ডিরেক্টররা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে, আমি আসলে খুব ইমোশনাল হয়ে গেছি। সবাই আমাকে বলছে অভিনয় অনেক ভালো হয়েছে। বিশেষ করে যারা সিনিয়র তারা যখন প্রশংসা করে তখন আসলে একজন ক্ষুদ্র অভিনেতা হিসেবে আমার জন্য মনে হয় যে অনেক বড় পাওয়া। আর এই পুরো ক্রেডিটটা আমি দিতে চাই আমার পরিচালক সাইদুল ইসলাম রানাকে। উনি আমার চরিত্রটা নিয়ে ভেবেছেন এবং উনি আমাকে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, এটার সাথে তাল মিলিয়ে আমি চেষ্টা করেছি আমাকে ভাঙ্গতে। এই জন্য আমি ধন্যবাদ দিব আমার পরিচালক সাইদুল ইসলাম রানাকে।

বাংলা ইনসাইডার: ছবিটি ৩য় দিন থেকে তেমন দর্শক পাচ্ছে না।  বিষয়টি নিয়ে আপনি কি বলবেন?

ইমন: ছবিটি আসলে প্রথম দিন থেকেই আমি সাড়া পাচ্ছি। যেকোনো মুভিই আসলে প্রথম দিনের পর থেকেই আস্তে আস্তে দর্শক কমতে থাকে। কিন্তু আমার ছবিটার রিসিপশন খুব ভালো ছিল, সবাই খুব প্রশংসা করেছে।সত্যি কথা বলতে কি সকালের শো এর হিসাব করলে চলবে না। সকালের শো অন্যান্য বড় যে ছবি হাওয়া বা পরাণ বা অন্যান্য অনেক আরও বড় ছবি আছে ওগুলোও সকালের শো, মফস্বলে বিশেষ করে হলের যে কন্ডিশন সকালে অনেকেই যায়না ছবি দেখতে। কিন্তু দুপুর বলি, সন্ধ্যা বলি, তখন মানুষ আসে। একটু রোদ কমে, একটু স্নিগ্ধ পরিবেশে মানুষ মুভিটা দেখে। তো আমার মনে হয় পুরো সপ্তাহব্যাপী সব জায়গায় ভালো যাচ্ছে। সিনেপ্লেক্সে বেশ কিছুদিন হাউসফুল গেছে, এই জন্য কিন্তু সিনেপ্লেক্সে আমাদের ছবিটা সেকেন্ড উইক রান করবে। এই মুহূর্তে অপারেশন সুন্দরবন এবং বিউটি সার্কাসের সাথে সমান তালে আমাদেরটাও চলবে। সো আমি বলবো যে এটা আমাদের জন্য একটি বড় পাওয়া। কারণ, দর্শক পছন্দ না করলে তো আর ছবিটা দেখত না।

বাংলা ইনসাইডার: সম্প্রতি রাজবাড়ী ও ফরিদপুর সিনেমা দেখতে গিয়েছেন। সেখানে দর্শক কম হলেও আপনি আলহামদুলিল্লাহ বলেছেন। এনিয়ে আমাদের মাঝে বেশকিছু তর্ক হয়েছে। বিষয়টি কতটুকু সত্য।

ইমন: বিভিন্ন মাধ্যমে এটার সত্যতা আমি যাচাইও করতে যাইনি, আমার যাচাই করতে যাওয়ার ইচ্ছাও নেই। কারণ সকালে শোতে আমি আসলে ছিলামই না। এখন আমাকে ওই রাজবাড়ী হলের যে ম্যানেজার উনি নিজে বলেছেন যে ভাই আজকে তো বেশ ভালো দর্শক এবং প্রথম দিনেও বেশ ভালো দর্শক ছিলো, দ্বিতীয় দিনেও দর্শক ছিল। আর সকালের হলে কখনোই কোনো ছবিরই সেটা ছিল যখন সালমান শাহ ছিলেন, সাকিব ভাইয়ের আরও আগের ওই ছবিগুলোর সময় হাউসফুল ছিল। অবশ্যই একটা গোল্ডেন টাইম ছিল। বাট সেটা তখন ছিল,এখন রিসেন্টলি ওই হলে সকালের সোতে হাউসফুল আসলে অনেকদিন ধরেই যায় না। সো আমার মনে হয়, এটার সত্যতা যাচাই করার চেয়ে ইম্পর্টেন্ট আমাদের শোটা ভালো যাচ্ছে এটাই আমার কাছে ইম্পর্টেন্ট। আমি কোন তর্কেও জড়াতে চাইনা,আমি কিছুই বলতে চাইনা। রাজবাড়ীতে বিশেষ করে আমরা যখন গিয়েছি,ছবিটার প্রচারণায়,যেহেতু ওখানেই শ্যুটিং করেছি,ওখানে যাওয়ার পর আমরা প্রচুর দর্শক দেখেছি। এই রকম একটা হলে আমি বলতে বুঝাচ্ছি যে এমন একটি হল বলতে এখানে অনেক গরম, তারপরে এর মধ্যে যে মানুষ ছবি দেখতে আসছে,প্রচুর দর্শক।আমার ফেসবুক পেইজে আমি অলরেডি কিন্তু ইমোশনাল হয়ে আমি দেখেছি যে  এত কষ্ট করে মানুষ আসছে,ভিডিও করে দেখিয়েছি যে কত দর্শক ছিল। এখন সকাল বেলা যে কয়জন আসে, সেটা ত আমি বললাম,সকাল বেলা দর্শক কোন ছবিই,মফস্বল শহরে বলি কোন হলেই আসলে এত দর্শক পাওয়া যায় না। সো এটা সব ছবির ক্ষেত্রেই সমান। তাই এজন্যই বলেছি, আলহামদুলিল্লাহ।তারা ত কষ্ট করে এসেছে,সেই সূত্রেই বলা আসলে।বাট এটা এইভাবে মানুষ নেগেটিভ ভাবে দেখবে এটা আমি আসলে ওইভাবে বুঝিনি, আমি সহজ সরল ভাবে আমি একজন অভিনেতা,অভিনয় কেন্দ্রিক সব চিন্তাভাবনা,আমি এত প্যাচঘোচ বুঝিনা,আমি চাই ভালো ছবি করতে ভালো কাজ করতে, সো ওইটা নিয়ে আমি ওরিড না। সো আমার ছবি ভালো যাচ্ছে, ছবির প্রশংসা করছে সবাই।

বাংলা ইনসাইডার: ওয়েব সিরিজ নিয়ে পরিকল্পনা কি?

ইমন: আসলে আমি এখন গল্পের প্রধান বা আমার চরিত্রকে গুরত্ব দেয়া হবে বা আমার চরিত্রকে একটু বৈচিত্রতা দেয়া হবে -এই ধরনের কাজ করবো যদি কেউ আমাকে নিয়ে ভাবে। আমি বীরত্ব ছবিতে সেটা কিছুটা হলেও দেখানোর সুযোগ পেয়েছি। আমাকে যদি কেউ দেখানোর সুযোগ দেয় আমি সেই চরিত্রের সাথে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করবো। যদি এমন কোন ওয়েব ফিল্ম বা ওয়েব সিরিজ আমার কাছে ভালো চরিত্রের,আমার ক্যারেকটারটাকে ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলার মত,বা আমার যদি মনে হয় আমার ক্যারেকটারটা ফুটিয়ে তোলা যাবে তাহলেই করব। শুধু করার জন্য,বা টাকার জন্য হলে আমি করবো না। না খেয়ে থাকবো কিন্তু ভালো চরিত্র করতে চাই।

বাংলা ইনসাইডার: বর্তমান কাজের ব্যস্ততা কি?

ইমন: আসলে এই কয়দিন বীরত্ব নিয়ে প্রচারণায় ছিলাম। কারণ, আমার খুব পছন্দের একটা ছবি বীরত্ব। আমার সামনে আরও বেশকিছু ছবি আছে- কাগজ দ্যা পেপার। ওইটাতেও মানুষ অন্য এক ইমনকে দেখবে। তারপর আগামীকাল আরেকটা ছবি, সেটাও রিলিজের অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে বেশকিছু বিজ্ঞাপনের কাজ চলছে এবং ফিল্ম নিয়েও কথাবার্তা হচ্ছে এবং ফিল্মের শ্যুটিং খুব শীঘ্রই শুরু করবো ইনশাআল্লাহ। সবার কাছে দোয়া চাই, ভালোবাসা চাই, সবার সাপোর্ট চাই। মানুষ একবার হলেও বীরত্ব ছবিটা হলে দেখতে আসেন, তারপর যাচাই করবেন যে আসলে ছবিটা কেমন আর আমার কাজটা কেমন। দর্শক কি বলছে সেটা আসলে আমার মনে হয় যে ওইখানে যার প্রতিনিধি আছে, সকলে বলছে যে দর্শক যখন একবার ঢুকছে তখন তৃপ্তি নিয়েই বের হচ্ছে, সো এটাই বড় পাওয়া আসলে।জীবনে এর চেয়ে আর বড় পাওয়া,কি হতে পারে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭