লিভিং ইনসাইড

আপনার মধ্যে নেই তো ডিপ্রেশনের এই লক্ষণগুলো?


প্রকাশ: 24/09/2022


Thumbnail

ডিপ্রেশন যে একটি মানসিক ব্যাধি তা অনেকেই মানতে নারাজ। ফলে অনেকেই এই কঠিন মানসিক ব্যধির সঙ্গে কাটিয়ে দিচ্ছে দিনের পর দিন এবং নিজের অজান্তেই লড়াই করার চিন্তা করে। আত্মহত্যার প্রবণতার জন্য ডিপ্রেশনকেই দায়ী করা হয় অনেকক্ষেত্রে। ডিপ্রেশন ধীরে ধীরে মানুষের মধ্যে মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

এটি এমন এক অসুখ, যা মানুষকে কিছুতেই খুশি হতে দেয় না। জীবনে বড় কোনও দুর্ঘটনা বা ছোট কোনও ধাক্কা, ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে অনেককিছুই। তাই ঠিক কখন কোন ঘটনা মানুষকে অবসাদের খাদে ঠেলে দেবে, তা বোঝা কঠিন। এই গহ্বর থেকে সহজে বেরনো কঠিন। প্রয়োজন সঠিক চিকিৎসার। অবসাদে থাকলে মানুষ নিজের সঙ্গে কথা বলে। কখনও আবার ছোটখাটো ঘটনাতেই কেঁদে ফেলে। বারবার মৃত্যুর কথা বলে। অথবা হঠাৎ করেই উত্তেজিত হয়ে ওঠে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী ডিপ্রেশনকে যে ক’টি বিষয় দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হলো: দুঃখ, আগ্রহ বা আনন্দ হারিয়ে ফেলা, অপরাধবোধ, নিজেকে মূল্যহীন লাগা, ঘুম ও ক্ষুধায় বিরক্তি, ক্লান্তি, দুর্বল মনোযোগ। বিভিন্ন কারণে ডিপ্রেশন হতে পারে, হয় জৈবিক কিংবা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে।

যেকোনো দেশের জনসংখ্যার প্রায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ লোক বিষণ্ণতা রোগে ভুগে থাকে। মেয়েদের এ রোগে ভোগার প্রবণতা পুরুষের চেয়ে দ্বিগুণ। বেকার ও নিঃস্ব জীবন যাপনকারীরাও  এ রোগে বেশি ভুগে থাকেন। যারা বিভিন্ন ধরনের নেশা করে তাদের মধ্যেও ডিপ্রেশনের হার বেশি।

ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতা সাধারণ কোনো বিষয় নয়। । তাই সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করা জরুরি।
শুধু যে বড়দের মধ্যেই ডিপ্রেশন দেখা দেয় তা কিন্তু নয় ছোটরাও এই ব্যাধির কারণে নানা ভুল কর্মকাণ্ড করে বসে। চলুন তবে দেখে নেওয়া যাক ডিপ্রেশনের কোন লক্ষণগুলো অবহেলা করবেন না-

নেতিবাচক কথাবার্তা

হতাশাগ্রস্থ মানুষের নেতিবাচকতা থেকে সহজে বেরিয়ে আসতে পারেন না। সবকিছু নিয়েই তারা হতাশা করেন। যা তাদেরকে আরও বিষণ্ন করে তোলে। আপনার মধ্যেও যদি এই লক্ষণ থাকে তাহলে বুঝবেন অজান্তেই ডিপ্রেশনে ভুগছেন আপনি।

ক্লান্তি

বিষণ্নতা একজন ব্যক্তিকে আরও ক্লান্ত ও অলস করে তোলে। ডায়েট ও শরীরচর্চা যতই করুক না কেন সব সময়ই ক্লান্তির অনুভুতি হতে পারে। কোনো কারণ ছাড়া ক্লান্তির কিন্তু অনেক কারণ থাকতে পারে। তাই এই বিষয় নিয়ে অবহেলা করবেন না।

মনোযোগে অসুবিধা

যারা ডিপ্রেশনে ভোগেন তারা কোনো কাজে একাগ্রতার সঙ্গে মন বসাতে পারেন না। মনে সব সময়ই নেতিবাচক বিভিন্ন চিন্তা খেলা করে। চাইলেও তারা এসব দুশ্চিন্তা থেকে বেরিয়ে বাস্তবতার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেন না।
আগ্রহের অভাব

বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে উৎসাহী হতে পারেন না এমন রোগীরা, যদিও বা কাজটি তার পছন্দের হোক না কেন। সব কাজেই এদের মধ্যে আগ্রহ ও উৎসাহ কম দেখা দেয়।

অনিদ্রা

ডিপ্রেশন গুরুতর আকার ধারণ করলে রোগী ভোগেন অনিদ্রায়। ঘুমের ধরনে পরিবর্তন আসাও বিষণ্নতার আরও এক লক্ষণ। যা স্বাস্ত্যের জন্য বিপজ্জনক।

খিটমিটে মেজাজ

ডিপ্রেশনের রোগী অকারণে রাগ করে‚ ভীষণ অস্থিরতা কাজ করে এবং সব সময়ই উদ্বিগ্ন থাকেন। যাদের ডিপ্রেশন হয় তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাগ বেশি হয়‚ বা অস্থির ব্যবহার করে থাকেন। এর দ্বারা বোঝা যায় ডিপ্রেশনের শিকার তিনি।


আত্মঘাতী প্রবণতা

নিজের শরীরে আঘাত করা বা নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার কথা চিন্তা করা সবই ডিপ্রেশনের লক্ষণ। ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হলে রোগীর  মাঝে আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।

ক্ষুধা কমে যাওয়া

ওজন কমানোর জন্য অনেকেই ডায়েটে পরিবর্তন আনেন ও কম খেয়ে সুস্থ থাকার চেষ্টা করেন। তবে কোনো কারণ ছাড়াই যদি দেখেন আপনার ক্ষুধা কমে গেছে তাহলে তা ডিপ্রেশনের লক্ষণ হতে পারে। ডিপ্রেশনের রোগীরা বিভিন্ন বিষয়ে ভাবতে এতোটাই মগ্ন হন যে দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপে মনোনিবেশ করতে পারেন না।

বিচ্ছিন্নিতা

যারা ডিপ্রেশনে ভুগছেন তাদের মধ্যে একা থাকার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কারও সঙ্গে দেখা করা, গল্প করা কিংবা হাসিখুশি থাকতে তাদের ভালো লাগে না। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে এরা ইতস্তত করেন।

বিষণ্নতা বিভিন্ন স্তরে ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। বিষণ্তার লক্ষণগুলো বেশিরভাগের মধ্যেই একই দেখা দেয়। তাই আপনার বা প্রিয় কোনো মানুষের মধ্যে এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অবসাদের চিকিৎসা কীঃ যদি আপনার মনে হয়, উপরে উল্লিখিত লক্ষণগুলি আপনার মধ্যে আছে, তাহলে দেরি না করে মনরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।ডিপ্রেশন পুষে রাখলে এক সময় আপনি উস্মাদও হয়ে যেতে পারেন। তাই সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করুন। মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম, মন ভাল রাখতে রোদ্দুরে একটু হাঁটুন, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন,সারাদিনের কাজ ভাগ করে নিন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭