ইনসাইড পলিটিক্স

আন্দোলনের নাটাই কার হাতে?


প্রকাশ: 27/09/2022


Thumbnail

বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে। আন্দোলন ধাপে ধাপে দৃশ্যমান হচ্ছে। গত ১৩ বছরে প্রথমবারের মতো ঢাকা শহরের বিএনপি কিছু কর্মসূচি পালন করছে এবং এই সমস্ত কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপও সৃষ্টি হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, বিএনপি এই আন্দোলন করছে অন্যের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বা অন্যের ইশারায়। আন্দোলনের নাটাই বিএনপির হাতে নেই। বরং একটি তৃতীয় শক্তি বিএনপিকে মাঠে নামিয়েছে। লক্ষ্য একটাই এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যাতে আওয়ামী লীগ কোণঠাসা হয়ে পড়ে এবং একটি তৃতীয় শক্তির উত্থানের সুযোগ হয়। বিএনপি এখন তৃতীয় পক্ষের হয়ে ভাড়াটে খেলোয়াড় হয়ে খেলছে বলে কোন কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বরং বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ একটি দৈনিকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, তারা আন্দোলন করছে সরকার পতনের লক্ষ্যে। কারণ বর্তমান সরকার নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেবে না। আর এই দাবি আদায়ের জন্যই তাদের সরকার পতন করতে হবে। এ লক্ষ্যে তারা আন্দোলন করছেন। বিএনপির আরেকজন নেতা বলেছেন,  এটি তাদের জন্য ডু অর ডাই। তাদের আর কোন পথ নেই। হয় তাদের জয়ী হতে হবে অথবা বিজয়ী হতে হবে। মাঝামাঝি কোন পথ নেই। 

বিএনপির নেতৃবৃন্দ এসব কথা বললেও এই আন্দোলনের ফসল কার ঘরে উঠবে সে প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি এড়িয়ে যাচ্ছে। বিএনপির নেতারা ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় স্বীকার করছেন যে, শেষপর্যন্ত যদি সরকার পতন হয়ও তাহলে সরাসরি তাদের ক্ষমতায় আসার সুযোগ নেই। বরং এটি তৃতীয় পক্ষ ক্ষমতায় আসবে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে তৃতীয় কাউকে ক্ষমতায় আনার জন্যই বিএনপির এই আন্দোলন বলে কোন কোন মহল মনে করছে। এই আন্দোলনের নাটাই যে অন্য কারো হাতে তার প্রমাণ পাওয়া যায় কিছু কিছু পারিপার্শ্বিক ঘটনাতে। হঠাৎ করে প্রশাসনের ভিতরে কিছু কিছু মহল সরকারবিরোধী হয়ে উঠেছে। তারা এমন সমস্ত কর্মকাণ্ড করছে যে সমস্ত কর্মকাণ্ড সরকারের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করছে।  সাম্প্রতিক সময়ে মাঠ প্রশাসনে একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজের অভিযোগ উঠেছে। অন্তত দুজন সচিবের কর্মকাণ্ড নিয়ে সরকারের ভেতরে তোলপাড় চলছে। তারা এই সময় যে ধরনের কাজ করছেন তাতে সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যেও কারও কারও ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে বিএনপির আন্দোলনের মাঠ করে দেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সন্দেহের দৃষ্টি এখন তাদের দিকে। পাশাপাশিভাবে আওয়ামী লীগের মধ্যেও অনুপ্রবেশকারীরা এখন নানাভাবে সক্রিয় হয়েছে এবং তাদের ভূমিকা নিয়েও বিভিন্ন রকম প্রশ্ন উঠেছে। এরকম বাস্তবতায় কেউ কেউ মনে করছেন একটি তৃতীয় শক্তি বিএনপি, আওয়ামী লীগের ভেতরে কিছু অনুপ্রবেশকারী এবং প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা শক্তিকে একত্রিত করে একটি নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। তাদের লক্ষ্য একটাই। তা হলো যেকোন ভাবে একটি সহিংস পরিস্থিতি দেশে তৈরি করা। যে সহিংস পরিস্থিতি থেকে তৃতীয় কোন শক্তি সুযোগ নিতে পারে। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন অতীতেও এরকম ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের ষড়যন্ত্র থেকে কোন লাভ হয়নি। তবে এবারের যে কৌশল তা আগের চেয়ে ভিন্ন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন যে, এই সমস্ত ক্রিয়াশীল শক্তির সাথে গণমাধ্যমের একটি বড় অংশ যুক্ত হয়েছে। যার ফলে প্রতিটি গণমাধ্যম প্রায় এখন সরকারের নেতিবাচক কথায় মুখরিত হচ্ছে এবং এর ফলে মনে হচ্ছে যে, আন্দোলনের নাটাই যাদের হাতে তারা বেশ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭