ইনসাইড বাংলাদেশ

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন


প্রকাশ: 27/09/2022


Thumbnail

গতকাল বিএনপি ঢাকা মহানগরের নেতাকর্মীরা হাজারীবাগ এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এই সমাবেশে বিএনপির অধিকাংশ কর্মীর হাতে লাঠিসোটাসহ বিভিন্ন ধরণের অস্ত্রশস্ত্র ছিল। এই দৃশ্যগুলো যখন সামাজিকমাধ্যমে এসেছে তখন অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি করলো? কিভাবে সমাবেশস্থলে এত লাঠিসোটা উপস্থিত হলো? শুধুমাত্র হাজারীবাগের এই সমাবেশেই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এসব ক্ষেত্রে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। 

প্রথমত, বিনা উস্কানিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে। বিভিন্ন স্থানের ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতি উৎসাহী কেউ কেউ বিনা উস্কানিতে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছেন এবং সমাবেশে লাঠিচার্জ সহ নানা রকম ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলছেন। এটি কি স্বাভাবিক? প্রশ্ন উঠেছে যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোন কোন মহল কি তাহলে ইচ্ছা করেই বিএনপির আন্দোলন চাঙ্গা করার জন্য সেখানে সাড়াশি আক্রমণ করছেন? এই বিষয়টি নিয়ে এখন বিভিন্ন মহলে জোর আলোচনা চলছে।

দ্বিতীয়ত, জনগণের জানমাল হেফাজতে শিথিলতা। কোথাও কোথাও আবার উল্টো ঘটনা দেখা যাচ্ছে। যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনগণের  জান মাল হেফাজতের ক্ষেত্রে একধরনের শৈথিল্য প্রদর্শন করছেন। বিএনপির এই সমাবেশ স্থলে যে নেতা কর্মীরা আসছে,তারা নিরস্ত্র হয়ে আসছে, কিন্তু ট্রাকে করে এবং  গাড়িতে করে বিপুল পরিমাণ লাঠিসোটা নিয়ে আসা হচ্ছে । সরেজমিনে দেখা গেছে এই ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু পুলিশ চেক পোষ্ট রয়েছে, কিন্তু প্রশ্ন উঠল যে ,এই পুলিশ চেক পোষ্ট এড়িয়ে এবং পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এরকম লাঠিসোটা গুলো কিভাবে সমাবেশ স্থলে পৌঁছাল। অনেক জায়গায় দেখা গেছে পুলিশের ভূমিকা খুব নরম এবং এক ধরনের শৈথিল্য তাদের মধ্য লক্ষ করা যাচ্ছে। একাধিক সূত্র অভিযোগ করেছে যে ঢাকা মহানগরীতে বর্তমানে বেশ কিছু জায়গায় বিএনপি জামায়াতপন্থি পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে বসান হয়েছে। তারা পরিকল্পিত ভাবে বিএনপিকে মাঠ করে দিচ্ছে কিনা সেই প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে উঠেছে। 

তৃতীয়ত, মামলার গ্রেফতার এবং মামলায় একধরনের উদাসীনতা। ২০১৩ এবং ২০১৪  সহ বিভিন্ন সময় বিএনপির একাধিক নেতার বিরুদ্ধে গাড়ি পোড়ান ও অগ্নিসংযোগ, হত্যা, লুটতরাজ সহ নানা মামলা রয়েছে। সমস্ত মামলাগুলোর বিচার একেবারেই থমকে আছে। অধিকাংশ মামলায় চার্জশীট দেয়া হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা গুলো  কিভাবে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে সে ব্যাপারে অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, অনেক স্থানেই এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাফিলতি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর  দায়িত্ব প্রাপ্তরা  যথাসময় চার্জশীট দেওয়া বা তদন্ত করার ক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা পালন করেননি। এর কারণ হিসেবে অনেকে বলছেন যে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক ব্যস্ততার মধ্যে  রয়েছে , এই ব্যস্ততার কারণে তারা ঠিকঠাক মত চার্জশীট জমা দেওয়া বা তদন্ত করতে পারছেন না। কিন্তু ২০১৩ সালের মামলার চার্জশিট এবং বিচার কেন সম্পূর্ণ  হবেনা এখনো সেই প্রশ্ন উঠেছে।

চতুর্থত, বিএনপির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারো কারো যোগাযোগ। একাধিক সূত্র বলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন কোন ব্যক্তির সাথে বিএনপি নেতাদের এখন যোগাযোগ বেড়েছে,সখ্যতা বেড়েছে,। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই ভূমিকা গুলো নিয়ে এখন তাই প্রশ্ন উঠেছে যে  আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভেতরে  কি তাহলে কিছু কিছু ভূত ঢুকেছে? যারা এই বিএনপির আন্দোলনকে পন্ড করে দেয়ার দায়িত্ব নেমেছেন?


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭