ইনসাইড পলিটিক্স

প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলেই ছাত্রলীগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত


প্রকাশ: 27/09/2022


Thumbnail

ছাত্রলীগের সারাদেশে বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে অস্থির হয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নেতারাই এখন বলছেন যে, আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৩ বছরের যে অর্জন তা নষ্ট করছে একা ছাত্রলীগই। ছাত্রলীগ সরকারের এখন অন্যতম মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ কারণে অনেকে মনে করছেন যে, ছাত্রলীগকে এখন নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে সরকারের জন্য সামনে আরও বিব্রতকর পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। তবে আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা মনে করেন যে, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এখন ষড়যন্ত্র চলছে। ছাত্রলীগের কিছু কিছু দুষ্কর্ম, অপকর্ম যে হচ্ছে না তা নয়। কিন্তু এই দুষ্কর্ম, অপকর্মকে ব্যবহার করে যে পুরো ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে, এটি অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক এবং এটি একটি সুগভীর পরিকল্পনার অংশ।

সাম্প্রতিক সময়ে ইডেন কলেজের যে ঘটনা ঘটেছে সেখানে ছাত্রলীগের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন যে, ছাত্রলীগের যারাই বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তদন্ত করা হবে। আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, ইডেন কলেজের ঘটনার পর যারা সরাসরি ভাবে জড়িত ছিল, যাদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি ছাত্রলীগের সেখানে স্থগিত করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানে আরও কেউ যদি দোষী প্রমাণিত হয়, সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু এটিকে যারা অন্যখাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে বলেও ওই নেতা মন্তব্য করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, ছাত্রলীগের বর্তমান সঙ্কটের মূল কারণ হলো বর্তমান নেতৃত্ব। ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। আর এই অভিযোগের কারণে কার্যত ছাত্রলীগ এখন লাগামহীন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, ছাত্রলীগের মধ্যে কোনো চেইন অফ কমান্ড নেই বললেই চলে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে আওয়ামী লীগের অনেকগুলো বিকল্প প্রস্তাব ভেবে রেখেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সম্মেলন করা। আগামী ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে। এই কাউন্সিল অধিবেশনের আগেই ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে ছাত্রলীগের সম্মেলনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের সম্মেলন হবে নাকি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিকে বাতিল করে আবার নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দেওয়া হবে নাকি ছাত্রলীগের কার্যক্রমই আপাতত বন্ধ রাখা হবে, এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন, ওয়াশিংটনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের ব্যাপারে সব খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং সমস্ত বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য তার হাতে রয়েছে। তিনি দেশে ফিরে এ ব্যাপারে যথাযথ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে। তবে একাধিক সূত্র বলছে যে, ছাত্রলীগের ব্যাপারে একপেশে প্রচারণা হচ্ছে। শুধুমাত্র কিছু কিছু ঘটনাকে সামনে এনে পুরো ছাত্রলীগই খারাপ, এমন একটি প্রচারণার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। এই বিষয়টির ব্যাপারেও আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রী সজাগ বলে জানা গেছে। তাই ছাত্রলীগের এই সংকট নিরসনে সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে তারা মনে করছেন। ছাত্রলীগের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা এক্ষেত্রে খুবই কম। বরং ছাত্রলীগের যারা বিভিন্ন ঘটনার জন্য দায়ী তাদের ব্যাপারে নির্মোহভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্মেলন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গঠন করেই ছাত্রলীগ সংকটের সমাধান করতে চায় আওয়ামী লীগ। তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই ছাত্রলীগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭