ইনসাইড বাংলাদেশ

শেখ হাসিনা: দ্যা লাস্ট ব্যাটেল


প্রকাশ: 27/09/2022


Thumbnail

যুদ্ধ, সংগ্রাম করতে করতেই ৭৫ পাড়ি দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুদ্ধটা এখনো শেষ হয়নি। বরং ৭৬-এ পা রেখে নতুন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে, রণধ্বনি শোনা যাচ্ছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এটাই শেখ হাসিনার লাস্ট ব্যাটেল। এই লড়াইটা এখন এমন একটা জায়গায় চলে গেছে যে শেখ হাসিনা যদি এই লড়াইয়ে জিতেন তাহলে ধর্মান্ধ মৌলবাদী স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি নিঃশেষিত হবে বাংলার মাটি থেকে। রাজনীতির নামে যারা সন্ত্রাস করে, রাজনীতির নামে যারা অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছে, রাজনীতিকে যারা ব্যবসায় পরিণত করেছে তারা সমূলে উৎপাটিত হবে। আর এই যুদ্ধে যদি শেখ হাসিনা পরাজিত হন তাহলে বাংলাদেশে আবার পথ হারাবে, বাংলাদেশ আবার হয়তো একটা আফগানিস্তান বা পাকিস্তান হবে। এই লাস্ট ব্যাটেলটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনা জিতবেন কি এই লড়াইয়ে?

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামীকাল ৭৬তম জন্মদিন। ৭৫ পেরিয়ে তিনি ৭৬-এ পা রাখবেন। তার এই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ, সমস্ত সময় তিনি প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। জন্মানোর পর তিনি পিতার মুখ দেখতে পারেননি। পিতা তখন দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য আন্দোলন করছেন। বারবার জেলে গেছেন, বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন, পাকিস্তানী শোষকদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। আর শেখ হাসিনা ছোট থেকে বড় হতে দেখেছেন পিতার এই সংগ্রামকে। পিতার সংগ্রাম তিনি হৃদয়ে ধারণ করেছেন, তার রক্ত প্রবাহে পিতার আদর্শ সঞ্চালিত হচ্ছে হয়েছে। আর সে কারণেই পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যখন নির্মমভাবে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি হত্যা করে তারপর থেকে তিনি দেশ গড়ার এক নতুন সংগ্রামে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন।

পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট শেখ হাসিনাও মৃত্যুবরণ করতে পারতেন, শেখ রেহানাও মৃত্যুবরণ করতে পারতেন। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অসীম কৃপায় তিনি তখন জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। এটি বোধহয় বাংলাদেশের নিয়তি ছিল, এটি বোধহয় সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় ছিল। সে কারণেই জার্মানি থেকে তিনি দিল্লীতে আসেন এবং জীবনযুদ্ধের এক অবাস্তব সংগ্রামের মধ্যে নিজেকে সঁপে দেন। সেই যুদ্ধের মধ্যে ১৯৮১ সালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক প্রতিকূল পরিবেশ বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশে এসে আবার সংগঠিত করতে থাকেন নিজের দলকে, জাগরিত করতে থাকেন এদেশের জনগণকে। জনগণকে ক্ষমতায়িত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রাম ছিল ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ, জীবনের ঝুঁকি ছিল বারবার। ১৯৮১ সালের পর থেকে আজ পর্যন্ত সময় অন্তত দুই ডজন বার তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছেন, মৃত্যুকে সামনে থেকে দেখেছেন। সবচেয়ে বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়েছিলেন তিনি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। কিন্তু এসব মৃত্যুঝুঁকি উপেক্ষা করে তিনি জনগণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। শেখ হাসিনার কাছে সবচেয়ে তুচ্ছ বিষয় হলো তার জীবন। আর এ কারণেই তিনি স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কেটে অবশেষে ২০০৯ সালে বাংলাদেশকে এক স্থিতাবস্থায় দাঁড় করান। সেখান থেকে শুরু হয় তার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণের অভিযাত্রা। জাতির পিতা যেমন চেয়েছিলেন একটি সোনার বাংলা, ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত একটি দেশ, উন্নত আধুনিক একটি রাষ্ট্র, স্বনির্ভর আত্মমর্যাদাশীল একটি দেশ, সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণের দ্বারপ্রান্তে এসেছেন। কিন্তু শেখ হাসিনার পায়ে পায়ে থাকে সব সময় ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্রকেই সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন।

আগামী দেড় বছরের মধ্যে দেশে একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচন শেখ হাসিনার শেষ যুদ্ধ। এই যুদ্ধে তাকে জয়ী হতেই হবে, এই যুদ্ধে হারার কোনো সুযোগ নেই। যেমনটি আজ সংস্কারপন্থীদের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত একটি দৈনিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছেন যে, এই যুদ্ধে যদি তারা হারে তারা নিঃশেষ হয়ে যাবে। সত্যিই তাই। শেখ হাসিনা কি পারবেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার পথ-পরিক্রমা শেষ করতে? তিনি কি পারবেন বাঙালি জাতিকে স্বপ্নের সোনালী বন্দরে পৌঁছে দিতে? সেই লড়াইয়ে এদেশের জনগণ, তৃণমূল ও প্রান্তিক মানুষ তার সঙ্গে রয়েছে যারা তাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। আর অন্যদিকে এই লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ হলো স্বাধীনতাবিরোধী, সুবিধাবাদী কিছু সুশীল গোষ্ঠী যারা শেখ হাসিনাকে বারবার পরাজিত করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে। শেখ হাসিনার শেষ যুদ্ধের পরিণতি ওপর নির্ভর করছে এই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, আমাদের অস্তিত্ব।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭