প্রকাশ: 29/09/2022
প্রথমে বোলারদের
দাপট, এরপর লোকেশ রাহুল ও সূর্যকুমার যাদবের দানবিয় ব্যাটিংয়ে সহজ জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার
বিরুদ্ধে সিরিজে এগিয়ে গেল ভারত। গতকাল বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থিরুভানাথাপুরামে প্রথম
টি-টোয়েন্টিতে রোহিত শর্মার দলের জয় ৮ উইকেটে।
বোলারদের নৈপুণ্যে
দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০৬ রানে আটকে দিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় তারা ২০ বল বাকি থাকতে।
অনুশীলনে পাওয়া
পিঠের চোটের কারণে এই ম্যাচে খেলতে পারেননি জাসপ্রিত বুমরাহ। তার বদলে দলে আসা চাহার
২৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। ২৬ রান দিয়ে দুইটি উইকেট নেন হার্শাল প্যাটেল। এদিকে, উইকেট
না পেলেও দুর্দান্ত বোলিং করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও আকসার প্যাটেল। নিজের প্রথম ও ম্যাচের
দ্বিতীয় ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া আর্শদিপ জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
শেষ পর্যন্ত তার বোলিং ফিগার ৪-০-৩২-৩। শুরুতে মন্থর ব্যাটিং করা রাহুল পরে রানের গতি
বাড়িয়ে ৫৬ বলে করেন ৫১ রান। ৪ ছক্কার সঙ্গে মারেন ২ চার। ৩৩ বলে ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ৫০
রান করেন সূর্যকুমার। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটি ৯৩ রানের।
চাহার ও আর্শদিপের
চমৎকার বোলিংয়ে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো।
স্কোরবোর্ডে ৯ রান যোগ হতেই হারায় তারা ৫ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে দুই অঙ্কে যাওয়ার
আগে ৫ উইকেট হারানোর অভিজ্ঞতা নেই টেস্ট খেলুড়ে আর কোনো দলের। এর আগে সবচেয়ে কম রানে
দক্ষিণ আফ্রিকার ৫ উইকেট পড়েছিল ২০০৭ সালে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০ রানে।
সফরকারীদের
শিবিরে প্রথম ছোবল হানেন চাহার। ইনিংসের ষষ্ঠ বলে তার দুর্দান্ত ইনসুইঙ্গারে স্টাম্প
এলোমেলো হয়ে যায় টেম্বা বাভুমার। প্রতিপক্ষের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড এরপর ভেঙে দেন আর্শদিপ।
তার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল স্টাম্পে টেনে আনেন কুইন্টন ডি কক। সুইং করে বেরিয়ে
যাওয়া বলে কট বিহাইন্ড হন রাইলি রুশো। পরের বলে আর্শদিপ চমকে দেন ডেভিড মিলারকে। ভেতরে
ঢোকা বল ভেঙে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের স্টাম্প।
চাহারের বাড়তি
লাফিয়ে ওঠা বলে থার্ডম্যানে ধরা পড়েন ট্রিস্টান স্টাবস। আউট হওয়া পাঁচ ব্যাটসম্যানের
মধ্যে কেবল ডি কক খুলতে পারেন রানের খাতা। রুশো, মিলার, স্টাবস পান গোল্ডেন ডাকের তেতো
স্বাদ। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ৫ উইকেট নিতে স্রেফ ১৫ বল লাগে ভারতের, যা তাদের সর্বনিম্ন।
এর আগে ২০১৬ সালে শ্রীলঙ্কার শুরুর ৫ উইকেট নিয়েছিল তারা ৩১ বলে।
অল্পতে গুটিয়ে
যাওয়ার শঙ্কায় পড়া দক্ষিণ আফ্রিকাকে কিছুক্ষণ টানেন এইডেন মারক্রাম। তাকে এলবিডব্লিউর
রিভিউ নিয়ে ফেরায় ভারত। ওয়েইন পার্নেলকে বিদায় করেন আকসার প্যাটেল। দক্ষিণ আফ্রিকা
একশ পার করে কেশভ মহারাজের ব্যাটে। ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৩৫ বলে ক্যারিয়ার সেরা ৪১ রানের
ইনিংস খেলেন তিনি। আগের ১৮ টি-টোয়েন্টিতে ৪ ইনিংস ব্যাটিং করে তার মোট রান ১৫, সেরা
ছিল ১১।
ছোট পুঁজি নিয়ে
শুরুতে ভারতকে চেপে ধরে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে কাগিসো রাবাদার বলে কট
বিহাইন্ড হন রোহিত শর্মা। এরপর যেন রান করার পথই খুঁজে পাচ্ছিল না স্বাগতিকরা। পাওয়ার
প্লেতে ভারত তোলে কেবল ১৭ রান। টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ৬ ওভারে যা তাদের সর্বনিম্ন।
সপ্তম ওভারের
প্রথম বলে আনরিক নরকিয়ার বলে বিরাট কোহলি কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়লে আরও বিপদে পড়ে ভারত।
এই পেসারকে টানা দুটি ছক্কায় উড়িয়ে চাপ কিছুটা সরিয়ে দেন সূর্যকুমার। একটা সময় রাহুলের
রান ছিল ৩৬ বলে ১৫। দশম ওভারে নরকিয়াকে ছক্কা মেরে রানের গতিতে দম দেন তিনি। পরে বাঁহাতি
রিস্ট স্পিনার তাবরাইজ শামসিকে মারেন আরেকটি। আরেক প্রান্তে দ্রুত রান তুলতে
থাকেন সূর্যকুমার। ৩৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। শামসিকে ছক্কায় উড়িয়ে দলকে কাঙ্ক্ষিত
ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়ার সঙ্গে নিজের ফিফটিও পূর্ণ করেন রাহুল, ৫৬ বলে। দুই দলের দ্বিতীয়
টি-টোয়েন্টি আগামী রবিবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা:
২০ ওভারে ১০৬/৮ (ডি কক ১, বাভুমা ০, রুশো ০, মারক্রাম ২৫, মিলার ০, স্টাবস ০, পার্নেল
২৪, মহারাজ ৪১, রাবাদা ৭*, নরকিয়া ২*; চাহার ৪-০-২৪-২, আর্শদিপ ৪-০-৩২-৩, অশ্বিন ৪-১-৮-০,
হার্শাল ৪-০-২৬-২, আকসার ৪-০-১৬-১)
ভারত: ১৬.৪
ওভারে ১১০/২ (রাহুল ৫১*, রোহিত ০, কোহলি ৩, সূর্যকুমার ৫০*; রাবাদা ৪-১-১৬-১, পার্নেল
৪-০-১৪-০, নরকিয়া ৩-০-৩২-১, শামসি ২.৪-০-২৭-০, মহারাজ ৩-০-২১-০)
ফল: ভারত ৮
উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা
ম্যাচ: আর্শদিপ সিং
সিরিজ: তিন
ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে ভারত
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭