প্রকাশ: 29/09/2022
কিছু
মানুষ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে তাকে পালটে
দিতে, নিজের জীবন বিলিয়ে দেয়
অন্যের সুখ আহরণে, তেমন
একজন মানুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠা কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৪৭
সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বর্তমান
গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় মধুমতি নদীর তীরে গিমাডাঙ্গা
গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে
সারাবিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের এক
রোল মডেল। স্বাধীনতার পর আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী
হেনরী কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’বলে যে
ব্যঙ্গোক্তি করেছিল তা শেখ হাসিনার
দূরদর্শী ও ভিশনারী নেতৃত্বের
যাদুকরি স্পর্শে মিথ্যা প্রমান করে বাংলাদেশ আজ
খাদ্যভান্ডারে পরিনত হয়েছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে বিদেশে রপ্তানি
করারও সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
শুধু
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা নয়- নিজস্ব অর্থায়নে
‘পদ্মা সেতু’র মত
মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার ক্যারিশ্ম্যাটিক
নেতৃত্বে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে পরিকল্পনা মোতাবেক অবকাঠামো উন্নয়ন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শেখ হাসিনা প্লাস্টিক
ও বার্ণ হাসপাতাল, ১০০টি ইকোনমিক জোন, মেট্রোরেল, এলিভেটেড
হাইওয়ে, গভীর সমুদ্রবন্দর, রেল
সংযোগসহ পদ্মা সেতু, ঢাকায় মেট্রোরেল, কর্ণফুলি ট্যানেল, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ী
বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল, দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার-ধুমধুম
রেললাইন ইত্যাদি মেগাপ্রকল্পসহ অসংখ্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড/ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে বা হয়েছে। এসব
বহুবিধ কারণে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ আজ ‘উন্নয়নের এক
রোল মডেল’-এ পরিণত হয়েছে।
১৯৪৭
সালে ব্রিটিশদের বিতাড়িত করে সবাই যখন
ভারত-পাকিস্তান নিয়ে ব্যস্ত, সে সময় মুসলিম
লীগের তৎকালীন প্রগতিশীল ধারার তরুণ নেতা ২৭
বছর বয়সী শেখ মুজিব পূর্ববাংলাকে
স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখার স্বপ্ন দেখেছিলেন। শুধু স্বপ্ন দেখেই
ক্ষান্ত হননি। সে অনুযায়ী পরিকল্পনাও
হাতে নিয়েছিলেন। ব্রিটিশরা বিতাড়িত হলেও পশ্চিম পাকিস্তানের
ঔপনিবেশিকতার বেড়াজালে শোষণ, বঞ্চনার কষাঘাতে জর্জরিত এ দেশের জনগণ
দারিদ্রতা ও দুর্বিষহ যন্ত্রণা
থেকে মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়।
১৯৭১-এর ৭ মার্চের
ঐতিহাসিক ভাষণে শেখ মুজিব বলেন,
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’।
বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ মার্চ রাতে
পাকিস্তানি সেনা হামলা শুরুর
সাথে সাথেই স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা দেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের
মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহীদের
রক্ত ও ২ লক্ষ
মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙ্গালী জাতি স্বাধীনতা লাভ
করে। সেই থেকে বাংলাদেশ
স্বাধীন।
বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার স্বাদ বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে
দিতে স্বাধীন বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন। কিন্তু বিধি বাম, ১৫
আগস্ট ১৯৭৫-এর কালো
রাতে স্বাধীনতা বিরোধীদের ষড়যন্ত্রে ঘাতকের বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে যায় বাঙ্গালী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের
অধিকাংশ সদস্য। থমকে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
সোনারবাংলা গড়তে গৃহীত সকল কর্মসূচি বাতিল
হয়ে যায়। স্বাধীনতার মূল্যবোধ ধ্বংস করে দেয় স্বাধীনতা
বিরোধীরা। পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এমনি
পরিস্থিতিতে ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের
সোনার বাংলা গড়তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন বঙ্গবন্ধু কন্যা
শেখ হাসিনা। বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে দিবানিশি নির্ঘুম পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি।
হাজার
বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের জেষ্ঠ্যকন্যা শেখ হাসিনা গণপ্রজাতন্ত্রী
বাংলাদেশ সরকারের চারবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। মমতাময়ী এবং মানবকল্যাণে ব্রতী
এক অনন্য দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাষ্ট্রনায়ক তিনি।
দেশী-বিদেশী নানা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র,
রাজনৈতিক সহিংসতা, করোনা অতিমারীর কুফল, রাশিয়া-ইউক্রেণ যুদ্ধ ইত্যাদি প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে টানা প্রায়
১৪ বছর ক্ষমতা থাকা চ্যালেঞ্জিং
ছিল সবসময়। মানুষের প্রতি বিশ্বাস, অকৃত্রিম ভালোবাসা, অভিজ্ঞতা, আত্মপ্রত্যয় ও দূরদর্শিতার কারণে
জননেত্রী শেখ হাসিনা এখন
বিশ্বনেত্রী। তাঁর প্রজ্ঞা, মেধা
ও বিচক্ষণতা দ্বারা দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করতে পারায়, দেশের
অর্থনীতিতে তাক লাগানো ইতিবাচক
পরিবর্তন হয়েছে- বাংলাদেশ বিশ্বে এক অপার বিস্ময়
সৃষ্টি করেছে। এরই ফলশ্রুতিতে ২০০৯
সালে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু যেখানে
৬৭ বছর ছিল, ২০২১
সালে তা বেড়ে ৭৩
বছরে উন্নীত হয়েছে। স্বাক্ষরতার হার ১৯% বৃদ্ধি
পেয়ে ৭৫% হয়েছে। ২০২২
সালে মাথাপিছু আয় ২৮০০ ডলার
ছাড়িয়ে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে
বাংলাদেশ। ১০২ মিলিয়ন ডলারের
জিডিপি বৃদ্ধি পেয়ে দাড়িয়েছে ৪১৬ মিলিয়ন ডলারে।
শেখ হাসিনা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূলভিত্তি যে কৃষি, রপ্তানী,
অবকাঠামো উন্নয়ন তা চিহ্নিত করতে
পেরেছেন। বাংলাদেশে কৃষির উন্নয়ন ঈর্ষণীয়। ১৫.৬ বিলিয়ন
ডলারের রপ্তানির আকার ৫২ বিলিয়ন
ডলারে উন্নীত হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন যে একটি দেশের
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক, পদ্মা সেতুই তার সবচেয়ে বড়
প্রমাণ। পদ্মা সেতু দিয়ে যাতায়াত
ও বিপনন ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গের
কৃষিতে সবুজ বিপ্লব ঘটেছে।
কৃষক তার উৎপাদিত কৃষিপণ্য
নিয়ে সূর্যোদয়ের আগেই ঢাকার বাজারে
চলে আসে। মালামাল বিক্রয়
করে গ্রামে ফিরে সকালের নাস্তা
খেয়ে ফসলের ক্ষেতে কাজে হাত দেয়।
পচনশীল কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে অনিশ্চয়তা না থাকায় ফলমূল,
শাকসবজিসহ উচ্চমূল্যের কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
মেগাশহর
ঢাকা মহানগরে মেট্রোরেল প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ডঃ আতিউর রহমান
এক টেলিভিশন সাক্ষাতকারে বলেন, ‘মেট্রোরেল চালু হলে প্রতিদিন
৬০ হাজার মানুষের দৈনন্দিন কর্মঘণ্টা সাশ্রয় হবে, দেশের অর্থনীতিতে
এর প্রভাব পড়বে। দিল্লীর মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর
দিল্লীর জিডিপি ১০% এর চেয়েও
বেশি বৃদ্ধি পেয়েছিল। তেমনি কর্নফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত
বঙ্গবন্ধু টানেল, মাতারবাড়ী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ৫% জিডিপি
বৃদ্ধি পাবে বাংলাদেশে। এই
সবকিছুই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের
ফসল।
গত প্রায় ১৪ বছরে শেখ
হাসিনা বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায়
নিয়ে গেছে। একজন নেতা সৎ,
জনদরদী, চিন্তাশীল, দূরদর্শী হলে একাই যে
অসাধ্য সাধন করতে পারেন,
তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ শেখ
হাসিনা। সবচেয়ে বড় কথা হলো,
এ দেশের সিংহভাগ মানুষ তাঁকে বিশ্বাস করে, তাঁর ওপর
আস্থা রাখে এবং ভালোবাসে।
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে শেখ
হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।
বঙ্গবন্ধুর
সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা পিতার
স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার
বাংলা গড়তে মানুষের মৌলিক চাহিদা- খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান নিশ্চিতকরণে কাজ করছেন। নিজেকে
জনগণের সেবক হিসেবে কাজ
করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছেন।
এমন
এক মহান নেত্রীর শুভ
জন্মদিনে অন্তরের গভীর থেকে অকৃত্রিম
শ্রদ্ধা, ফুলেল শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭