ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রশাসন নিয়ে সরকারের উদ্বেগ বাড়ছে


প্রকাশ: 01/10/2022


Thumbnail

যতই বিরোধী দলের আন্দোলন করছে, নির্বাচন নিয়ে নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে এবং এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে ততই প্রশাসন নিয়ে সরকারের উদ্বেগ এবং অস্বস্তি বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা পুলিশ প্রশাসন, মাঠ প্রশাসন এবং সচিবালয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন বিভিন্ন রকম আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির সমাবেশ গুলোতে পুলিশ প্রশাসনের কিছু কিছু ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কোথাও কোথাও তারা অতি আক্রমণাত্মক হয়ে বিরোধী দলের ওপর চড়াও হচ্ছে এবং একটা পরিস্থিতি তৈরি করছে। কোথাও কোথাও বিরোধী দলকে লাঠি-বাঁশি ইত্যাদি নিয়ে সমাবেশ করার ক্ষেত্রে নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে। আবার পুলিশ প্রশাসন অনেকের সঙ্গে বিএনপির এখন যোগাযোগ হচ্ছে, এমন তথ্য সরকারের হাতে আছে। পুলিশ প্রশাসন আগামীতে কি ধরনের ভূমিকা রাখবে সেটি এখন একটি বড় প্রশ্ন। অনেকেই অভিযোগ করেছে, পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে বেশকিছু বিএনপি-জামায়াতপন্থি লোক এখন সক্রিয় হয়েছেন এবং তারা বিরোধী দলের আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য নানা রকম তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করছেন। আর এই সমস্ত কারণেই বিএনপি এখন আগের চেয়ে বেশি আস্কারা পাচ্ছে।

পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি মাঠ প্রশাসনও আওয়ামী লীগের জন্য বড় মাথা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন স্থানের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে একজন ইউএনও'র পুরস্কারের পদক ভেঙে ফেলা, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্বন্ধে কটূক্তি করা, অন্য জায়গায় ইউএনও'র সাংবাদিকদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা ইত্যাদি বিষয়গুলো আওয়ামী লীগকে ভাবিয়ে তুলেছে। আগামী নির্বাচনে এই সমস্ত ইউএনওরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে যে জেলা প্রশাসকদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সেই নিয়োগ নিয়েও এখন নানামুখী কথাবার্তা হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে প্রশাসন কতটুকু নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে সে নিয়েও আওয়ামী লীগের অনেকের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।

বিশেষ করে জেলা প্রশাসক পদে পদায়নের ক্ষেত্রে বেশকিছু পদায়ন করা হচ্ছে যারা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেছিল। ওই সময় হাওয়া ভবনের মাধ্যমেই সরকারি চাকরির নিয়োগ হতে বলে আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা মনে করছেন। আর সে কারণেই মাঠ প্রশাসনে এখন অতি দাম্ভিকতা এবং অযথা বিতর্ক করার প্রবণতা বাড়ছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। তবে প্রশাসনের কিছু কিছু কর্মকর্তা মনে করেন, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু মাঠ প্রশাসন যে এখন অনেক বেপরোয়া হয়ে গেছে এবং তারা কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না এরকম একটি পরিস্থিতি এখন দৃশ্যমান।

প্রশাসনের মাথা হলো সচিব। কিন্তু সচিবদের ভূমিকা নিয়েই এখন নানামুখী প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সচিবালয়ে কান পাতলেই শোনা যায় যে, বিএনপি-জামায়াত ঘরনার লোকজন এখন সচিব পদে যাচ্ছেন। তারা ২০০৯ সালের পরে আওয়ামী লীগ হয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগ হয়ে যাওয়ার পর তারা সরকারের ঘনিষ্ঠ হয়েছেন এবং সরকারকে নানা বিষয়ে ভুল পরামর্শ দিচ্ছেন। এই সমস্ত আমলাদের কারণেই সরকার নানা রকম ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের অনেকে মনে করেন। নির্বাচনের সময় যতই এগিয়ে আসবে ততই এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিরা সরকারকে স্যাবোটাজ সাহায্য করতে পারেন বলে অনেকের ধারণা। আর তাই এই প্রশাসনকে এখন ঠিক পথে নিয়ে আসা এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে যেন প্রশাসন দায়িত্ব পালন করে পেশাদারিত্বের সাথে, সেটি নিশ্চিত করাই এখন সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭