ইনসাইড পলিটিক্স

টুকুসহ বিএনপির ৭ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আল্টিমেটাম দিলো জামায়াত


প্রকাশ: 01/10/2022


Thumbnail

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু হাজারীবাগের এক জনসভায় জামায়াতের সাথে আওয়ামী লীগের পরকীয়া চলছে বলে অভিযোগ করেছেন। এরপর জামায়াতের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। জামায়াতের আমীর এই বক্তব্যকে অশালীন এবং শিষ্টাচারবহির্ভূত বলে মন্তব্য করেন। অবশ্য আওয়ামী লীগ এই বিতর্কে অংশগ্রহণ করেনি এবং এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। আওয়ামী লীগ মন্তব্য না করলেও এটি নিয়ে বিএনপির মধ্যে গৃহদাহ শুরু হয়েছে। জামায়াত ইসলাম শুধু আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, এই বিষয়ে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার কাছেও নালিশ করেছে। তারেক জিয়া বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ইতোমধ্যে ইকবাল মাহমুদ টুকুকে এ ধরনের কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে সংযত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। বরং জামায়াত এখন আল্টিমেটাম দিয়েছে টুকুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু টুকু নয়, জামায়াত এরকম অন্তত সাত জন নেতার নাম বলেছে যারা ইসলামী মূল্যবোধ এবং চেতনাবিরোধী। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে জামায়াত হাটে হাড়ি ভাঙ্গা বলে বিএনপি নেতাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। গতকাল জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমিরের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দীর্ঘ টেলিআলাপ হয়েছে। সেই টেলিআলাপে জামায়াত সতর্ক করে দিয়েছে যে, জামায়াতের বিরুদ্ধে যদি বিএনপি নেতারা কথা বলে তাহলে তারা অনেক কিছুই করতে পারে। তবে কি কি করতে পারে সে সম্পর্কে জামায়াত নেতা বিএনপি মহাসচিবকে কিছু বলেননি। বিএনপি মহাসচিবও অনেকটাই তারেক জিয়ার মতোই আচরণ করেছে, ওই ঘটনাকে অনভিপ্রেত বলেছেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর ঘটবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, জামায়াতের হাতে বিএনপির এমন কিছু তথ্য আছে যে তথ্যগুলো যদি জামায়াত শেষ পর্যন্ত প্রকাশ করে তাহলে বিএনপির জন্য তা বিব্রতকর হবে। যেমন- জামায়াতের একটি সূত্র দাবি করেছে, যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয় তখন যুদ্ধাপরাধের বিচারবিরোধী আন্দোলনের জন্য বিএনপি নেতা তারেক জিয়া জামায়াতের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা গ্রহণ করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপি জামায়াতের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়নি। শুধুমাত্র সিলেটের একটি জনসভায় বেগম খালেদা জিয়া, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ এবং গোলাম আযমের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময়ে তারেক জিয়ার সাথে জামায়াতের এক ধরনের সমঝোতা হয়েছিল যে, জামায়াতের আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয় হবে বিএনপি এবং চারদলীয় জোট থেকে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন হবে। কিন্তু টাকা নিয়েও তারেক জিয়া সেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেনি।

জামায়াতের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ২০টি আসন দেয়ার বিনিময়ে তারেক জিয়া জামায়াতের কাছ থেকে আরও ৭৫ কোটি টাকা গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থী হলেও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা জামায়াতের পক্ষে কোনো প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেনি। এখন যখন ইকবাল মাহমুদ টুকু আওয়ামী লীগের সঙ্গে পরকীয়ার কথা বলছেন, তখন এই বিষয়গুলো প্রকাশ্য করবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। জামায়াতের নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ তাদের শীর্ষ সমস্ত নেতাকে 'বিচারের নামে হত্যা করেছে'। কাজেই আর যাই হোক জামায়াত কোনদিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা করবে না। জামাতের নেতারা এটাও বলেছেন, প্রয়োজনে জামাত বিলুপ্ত হয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে তাও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করার প্রশ্নই ওঠে না। সেরকম একটি প্রেক্ষাপটে জামায়াত সম্বন্ধে এ ধরনের একটি অবিবেচকসুলভ বক্তব্য দেয়ার কারণে জামায়াত বিষয়টির শেষ দেখে ছাড়বে বলেও হুঁশিয়ারি করেছেন। এখন যদি ইকবাল মাহমুদ টুকু আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা না করেন তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি-জামায়াতের দ্বৈরথে নতুন মাত্রা দেখা যাবে বলেও অনেকে মনে করেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭