ইনসাইড টক

‘পূজা উপলক্ষে নিরাপত্তার বিষয়টি গদবাধা, কোনো নতুনত্ব নেই’


প্রকাশ: 02/10/2022


Thumbnail

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, বাংলাদেশে এই যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হচ্ছে এটা অনেক আগে থেকে হয়ে আসছে। পঁচাত্তরের পর বিশেষ করে নব্বইয়ের পর থেকে অব্যাহত রয়েছে। এ ধরনের ঘটনাগুলো কমছে না। সহিংসতার ঘটনাগুলো ক্রমশ বাড়ছেই। বরং সহিংসতায় আরও নতুনত্ব এসেছে। প্রধানমন্ত্রী যখন সহিংসতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন এরপরও এ ধরনের ঘটনাগুলো চরম উদ্বেগ তৈরি করেছে। 

দেশজুড়ে চলছে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। সারাদেশে এ সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এবারের সার্বিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন রানা দাশগুপ্ত। পাঠকদের জন্য রানা দাশগুপ্ত এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথেষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বরা হচ্ছে। কিন্তু পাশাপাশি তারা আবার শঙ্কাও প্রকাশ করছেন। সুতরাং পূজার্থীরা শঙ্কামুক্ত এটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। পূজার সময় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা যদি নাও ঘটে কিন্তু পূজার পর যে ঘটবে না কোনো নিশ্চিয়তা নেই। 

তিনি বলেন, প্রশাসন বলছে তারা সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত আছেন। তারা এক দিকে নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলছে আবার শঙ্কার কথা উড়িয়েও দিচ্ছেন না। সুতরাং সঙ্গত কারণেই পূজার্থীরা ভয়ের মধ্যে উৎসব পালন করবে। প্রশাসনের স্বইচ্ছার কারণে পূজা চলাকালীন এই পাঁচ দিন যদি কোনো ধরনের অঘটন নাও ঘটে কিন্তু পরবর্তীতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা আবার ঘটবে। কারণ সামনে জাতীয় নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশে প্রতিবারই সাম্প্রদায়িক হামলা নতুন মাত্রা পায়। অর্থাৎ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলতে সাম্প্রদায়িক হামলাগুলোও জোরদার হবে। এ সময় জঙ্গীরা সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

এবারের পূজার নিরাপত্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পূজা উপলক্ষ্যে নিরাপত্তার বিষয়টি গদবাধা, কোনো নতুনত্ব নেই। অতীতের ধারাবাহিতায় এবারের নিরাপত্তাও একই। সমস্যার মূলে হাত না দিলে এ ধরনের নিরাপত্তা টেক সই হবে না। অতীতে সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো মামলা করা হলেও সেগুলোর মীমাংসা এখনও হয়নি। বরং মামলার আসামীরা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জামিনে বেরিয়ে আসছেন। অতীতের সাম্প্রদায়িক হামলার গুলোর বিচার আমরা এখনও দেখিনি। আর এর মধ্য দিয়ে দায় মুক্তির একটি সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। ফলে দুর্বৃত্তরা তাদের সাম্প্রদায়িক হামলা পুনরায় চালাতে অনুপ্রাণিত হচ্ছে। 

রানা দাশগুপ্ত বলেন, এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসছে হলে দেশের বিদ্যমান আইন দিয়ে সম্ভব হবে না। নারী শিশুদের ক্ষেত্রে যেমন বিশেষ আইন প্রণীত হয়েছে তেমনিভাবে সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্তদের দমন করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনগুলোকে সামনে রেখে একটি সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণীত হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি। যার প্রতিশ্রুতি গত নিবাচনী ইশতিহারে আওয়ামী লীগ দিয়েছিল। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন করা এবং বৈষম্য আইন বিলোপ করা দরকার বলে আমি মনে করি। এই আইনগুলো না হওয়া পর্যন্ত চোর পুলিশ খেলা হবে কিনা পুলিশ চোর ধরতে পারবে না। আর চোর চুরি করতে থাকবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭