ইনসাইড বাংলাদেশ

ঘরে বাইরে ষড়যন্ত্র: কি করবে সরকার?


প্রকাশ: 05/10/2022


Thumbnail

এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মুখে পড়লো দেশ। গতকাল জাতীয় গ্রীড পূর্বাঞ্চলে বিপর্যয় দেখা দেয়। এর ফলে চার ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎহীন ছিল রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগসহ দেশের ৩২ টি জেলা। কোনো কোনো জেলায় ৮ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় বিদ্যুৎ ছিল না। টানা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দেশের কোটি কোটি মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে। এর ফলে চিকিৎসা, টেলি-যোগাযোগ, ব্যাংকের লেনদেনসহ সব জরুরী সেবা ব্যাহত হয়। উৎপাদন বিঘ্নিত হয়। এর আগেও ৬ সেপ্টেম্বর একবার গ্রীড বিপর্যয় হয়েছিল। তখন দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। তখন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ জেলা গুলো। এই বিদ্যুৎ বিপর্যয় কি কেবলই একটি দুর্ঘটনা নাকি এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে তা নিয়ে বিভিন্ন রকম আলাপ আলোচনা চলছে। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগ বিদুৎ বিপর্যয়ের কারণ বলতে পারেনি। এটি একটি বিস্ময়কর ঘটনা। বিদুৎ বিভাগ নিয়ন্ত্রিত জাতীয় গ্রীডে যারা সঞ্চালনার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন, সেখানে অনেক তড়িৎকর্মা ব্যক্তি রয়েছেন, আছেন বিশেষজ্ঞ এবং প্রকৌশলী। তারা জানবেন না যে কি কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলো, এটা হতে পারে না। বার বার এমন বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনাকে সরকারের বিভিন্ন মহলই ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন এবং সামনে আরও বড় ধরনের ষড়যন্ত্র হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

শুধু বিদ্যুৎ বিপর্যয় নয়, নানা ক্ষেত্রেই এখন ঘরে বাইরে ষড়যন্ত্র এখন দৃষ্যমান হচ্ছে এবং এই ষড়যন্ত্রগুলোর কারণে সরকারের যে অর্জন তা ব্যাহত হচ্ছে। প্রশ্ন উঠল সরকার কি করবে? গত কিছুদিন ধরে লেগে লেগে বিভিন্ন ধরনের অশান্তি এবং বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেই চলেছে এবং এই ঘটনাগুলোর পেছনে কারণ যদি অনুসন্ধান করা যায় দেখা যাবে যে, সরকারের ভেতরে এবং বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এবার শারদীয় দুর্গা উৎসব নিয়েও ষড়যন্ত্রের পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক অবস্থান এবং আগে থেকে প্রস্তুতির কারণে সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। যখন শারদীয় দুর্গা উৎসবের ষড়যন্ত্র সফল হল না তখনই এই বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটল। গত কয়েক মাস ধরে নানা রকম সংকটের মুখে পড়ছে সরকার। একদিকে প্রবাসী আয় কমে গেছে, ডলার সংকট বেড়েছে, এবং রপ্তানি আয় কমেছে। এই সব কিছু যে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক মন্দা এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য হয়েছে এমনটি নয়। এর পেছনেও রয়েছে ষড়যন্ত্র। একটি মহল চক্রান্ত করে ডলারের দাম বৃদ্ধি করেছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ডলার মজুত করছেন এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সরকার কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে কিন্তু অধিকাংশ ব্যবস্থা নিতে পারেনি। উৎপাদন, রপ্তানির ক্ষেত্রেও বারবার বিদ্যুৎ সংকট, গ্যাস সংকট ইত্যাদি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার করে বলছিলেন নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলোতে। যেন উৎপাদন ব্যাহত না হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কথা আমলে নেয়া হয়নি। এর ফলে আস্তে আস্তে রপ্তানিতে বড় ধরনের সংকট ক্রমশ ঘণীভূত হচ্ছে। 

অনেকেই মনে করছেন নির্বাচনের আগে একটি মহল সরকারকে চাপে ফেলার জন্য, সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য এ ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। সামনের দিন গুলোতে কৃষি ক্ষেত্রেও ষড়যন্ত্র হবে এমন পূর্বাভাস দিচ্ছেন কেউ কেউ। তারা বলছেন যে, ষড়যন্ত্র করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যেমন বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো হয়েছে, ঠিক তেমনি ষড়যন্ত্র করে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত করার একটি নীল নকশার বাস্তবায়ন চলছে। এই সমস্ত ষড়যন্ত্রগুলো করে সরকারকে চাপে ফেলা এবং জনগণের সামনে সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করা, সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস করার একটি নীল নকশার বাস্তবায়ন চলছে। প্রশ্ন হল সরকার এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় কি করবে? সরকারের একাধিক সুত্র বলছে যে, ঘরের মধ্যেই ষড়যন্ত্রকারীদের কেউ কেউ রয়েছে। যারা এই ষড়যন্ত্রগুলোকে উস্কে দিচ্ছে। দেখার বিষয় যে সরকার ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে পারে কিনা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে কিনা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭