ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সুচির দৃষ্টিতে রোহিঙ্গা সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 27/01/2018


Thumbnail

মিয়ানমার থেকে প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পালিয়ে এসেছে। দেশটির সেনাবাহিনী এবং বৌদ্ধদের ভিক্ষুদের নির্যাতনের মুখে পড়ে তাঁরা বাংলাদেশের পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা মারাত্মক জীবন ঝুঁকিতে আছে। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর শান্তিতে নোবলে জয়ী অং সান সুচি তো সব দেখেছেন কিন্তু তাঁর বক্তব্য কি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে। সম্প্রতি বিবিসিতে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সুচির দৃষ্টিভঙ্গির ওপর একটি প্রতিবেদন হয়েছে। ওই প্রতিবেদন সূত্রেই জানানো হলে রোহিঙ্গা নিয়ে সূচির দৃষ্টিভঙ্গি।

সুচি মিয়ানমারের শাসন ক্ষমতায় আসার আগে দীর্ঘদিন গৃহবন্দী অবস্থায় ছিলেন। তিনি দেশটিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, দেশের মানুষের অধিকার এবং মানবাধিকার নিয়ে কথা বার্তা বলার মাধ্যমে মূলত এই পুরস্কার পান। কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিনি মুখ খুলে কিছুই বলেননি বলা চলে।

নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার বহু নৃতাত্ত্বিক গোষ্টীর দেশ। আমরা সম্মিলিতভাবে ভিন্ন ভিন্ন এই জাতি গোষ্ঠীর মানুষের অধিকার এবং তাঁদের গণতান্ত্রিক ধারায় আনতে চায়। সামগ্রিকভাবে আমরা এমন একটি সমাজ গড়তে চায় যেখানে মানুষে মানুষে কোন বিভাজন থাকবে না। গৃহহীন এবং আশাহীনদের জন্য বিশ্বের যে কোন প্রান্ত হবে বসবাসের উপযোগী এবং মানুষ স্বাধীনভাবে সেখানে বসবাসের পূর্ণ সুযোগ পাবে।’

অথচ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সুচি বলতে গেলে কোন কার্যকর পদক্ষেপই নেননি। বরং তিনি নোবেল পুরস্কার নেওয়ার সময় তাঁর দেওয়া সব বক্তব্য ভুলে গেছেন। সুচির এমন উদাসীনতার সমালোচনা করে একজন জ্যেষ্ঠ ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে আমি সুচির কাছ থেকে একজন নীতিবান নেতার মতো পদক্ষেপ আশা করেছিলাম। কিন্তু তিনি রোহিঙ্গা নিয়ে কার্যকর কোন কথাই বলেননি।’

এদিকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিবিসি সুচির মুখোমুখি হলে, সুচি বলেন, ‘রাখাইনের রোহিঙ্গারা ভয় পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া রাখাইনে ‘এথনিং ক্লিনজিং’ এর কথাও অস্বীকার করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘মুসুলমানরা বৌদ্ধদের উপরে হামলা করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’ সুচি বলেন, ‘যদি কোনো দেশ র্দীঘদিন স্বৈরশাসনের অধীনে থাকে, তাহলে তাঁদের জন্য মানুষকে বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে যায়। মিয়ানমারেও সেই অবস্থা হয়েছে।’

সুচি পরে সিঙ্গাপুরের ‘নিউজ এশিয়া’ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি বলবনা যে রাখাইনে কোনো সমস্যা হয়নি। আমাদের এই সংকটের বিষয়ে কথা বলা উচিত এবং কীভাবে তা সমাধান করা যায় সে দিকে দৃষ্টিপাত করা উচিত। কিন্তু আমার মনে হয়, সংকট সমাধানের কথা না বলে সবাই সংকটকে কেন্দ্র করে নিন্দা জানাচ্ছে। এতে করে সমস্যা দিন দিন খারাপ হয়েই যাচ্ছে।’

সুচি শুধু এই কথাই বলেননি আরও বলেছেন, তাঁদের দেশের মানুষ রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এটাকে তাঁরা মোটেও রাজনৈতিকভাবে নয় বরং সামাজিক এবং মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করছে। এরও একমাস পরে সুচি অনুধাবন করে যে বাংলাদেশের পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা চরম মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছেন। তাই তিনি ঘোষণা দিলেন, রাখাইন রাজ্যের মানুষের সমস্যা সমাধান করার জন্য তাঁরা একটি টেকসই সমাধান খুঁজছেন। তবে এতদিন সেই টেকসই সমাধানের বিশেষ কোন দিক চোখে পড়েনি। সম্প্রতি প্রতি সপ্তাহে দেড় হাজার করে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সমঝোতা হয়েছে। কিন্তু তাঁর বাস্তবায়ন এখনো কার্যকর হয়নি।

বাংলা ইনসাইডার/এমএইচ/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭