ইনসাইড পলিটিক্স

বিদ্যুৎ বিপর্যয়: বিএনপির নীলনকশা?


প্রকাশ: 06/10/2022


Thumbnail

গত এক মাসে জাতীয় গ্রিডে দুইবার বিপর্যয় হয়েছে। ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম বিপর্যয় ঘটে। সে সময় দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা দেড় ঘণ্টা অন্ধকারে ছিল। আর গত ৩ অক্টোবর বিপর্যয় ছিল ভয়াবহ। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের ৩২টি জেলা অন্তত চার ঘণ্টা অন্ধকারে ডুবে ছিল। কোনো কোনো এলাকা ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। কেন এই বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটলো সে সম্পর্কে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী কোনো কথা বলতে পারেনি। এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশে তদন্ত কমিটি গুলোর ইতিহাস যদি কেউ পর্যালোচনা করেন তাহলে নিশ্চিত হবে যে এ ধরনের এই তদন্ত কমিটির রিপোর্টে শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখবে না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়, কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্টের কি সুপারিশ দিল এবং কাকে দায়ী করা হলো সে সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কিছুই জানতে পারে না। তবে বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় এবং জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় নিয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বাংলা ইনসাইডারের হাতে এসেছে।

বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব অনুসন্ধানে এটি ধারণা করার যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে যে, এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা নয় বরং এটি একটি স্যাবোটাজ এবং এর পিছনে বিএনপি-জামাতের একটি সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা এবং নীলনকশা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, ইকবাল মাহমুদ টুকু একসময় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি দেড় সহস্রাধিক বেশি লোককে চাকরি দিয়েছিলেন। এজন্য তার এলাকায় সুনাম রয়েছে। তিনি যে চাকরি গুলো দিয়েছেন তাদের বড় অংশ বিদ্যুৎ বিভাগে। লক্ষণীয় ব্যাপার, জাতীয় গ্রিডে যেদিন বিপর্যয় ঘটলো সেদিনই বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেছেন যে, সামনে আরও ব্ল্যাক আউট হবে। ইকবাল মাহমুদ টুকু কি করে জানলেন যে সামনে আরও ব্ল্যাক আউট হবে? তিনি কি জ্যোতিষী নাকি তিনি এই সমস্ত ব্ল্যাকআউট কবে কিভাবে হবে তার পরিকল্পনা প্রণয়ন করছেন।

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করতে যে, ঘোড়াশালের জাতীয় গ্রিডসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্রগুলোতে যে সমস্ত ব্যক্তিরা আছেন তাদের একটি বড় অংশই টুকুর আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত এবং বিএনপি-জামাতপন্থি। এরা টুকুর নির্দেশেই এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাতীয় গ্রিডের বিপর্যয় কোনো কারণ ছাড়া ঘটা সম্ভব নয় এবং খুব ছোট্ট একটি ঘটনা ঘটিয়েই এরকম বিপর্যয় ঘটানো সম্ভব হবে। যদিও এই বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে এখন নানাজন নানা ব্যাখ্যা দিচ্ছেন কিন্তু একজন যদি কোনো কারসাজি করে, একজন যদি একটি অঘটন ঘটিয়ে দেয় তাহলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। কিন্তু সরকার সেই বিষয়টির দিকে নজর না দিয়ে বরং এ বিষয়টিকে পাশ কাটাতে চাচ্ছে।

লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি লোডশেডিং নিয়ে অনেক কথা বলছে। যদিও বিএনপির আমলে লোডশেডিং ছিল ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। ওই সময় এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎও উৎপাদিত হয়নি। কিন্তু এখন যখন আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে কিছু কিছু লোডশেডিং হচ্ছে, তখন এই লোডশেডিং ইস্যুকে সামনে এনে জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপীয়ে তুলতে চাইছে। আর সেটি যেন আরও পুঞ্জীভূত হয় সেজন্যই জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়। জাতীয় গ্রিডে গত ৩ অক্টোবর যে বিপর্যয়টি ঘটেছে তার ফলে জনজীবনে এক দুর্বিষহ অবস্থা তৈরি হয়েছিল। হাসপাতাল, ব্যবসা-বাণিজ্য সব জায়গায় স্থবিরতা নেমে এসেছিল। আর এর ফলে এক ধরনের জন-অশান্তি এবং জন-অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। সেরকম পরিস্থিতি যেন বারবার হয় এবং সরকার আসলে ব্যর্থ এবং দায়িত্ব পালনে অক্ষম, এরকম একটি ধারণা তৈরি করার জন্যই কি জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় ঘটেছে? এই বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত হওয়া দরকার বলে একাধিক সূত্র মনে করছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭