ইনসাইড পলিটিক্স

শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসলামী দলগুলো: নেপথ্যে জামায়াত


প্রকাশ: 06/10/2022


Thumbnail

বিএনপি যখন ২২টি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের পক্ষে কাজ শুরু করেছে তখন নেপথ্যে এক ছাতার নিচে দাঁড়াচ্ছে ইসলামী দলগুলো। দেশে ৩৮টি ইসলামী দল নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে। এই দলগুলো খুব শিগগিরই একটি বড় ধরনের শোডাউনের করতে যাচ্ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর সঙ্গে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই, এমনটাই বলছেন তারা। ইসলামী দলগুলো বলছে যে, বিএনপি এখন যে আন্দোলনের কথা বলছে সেই আন্দোলন ততটা সহায়ক হবে না এবং এই আন্দোলনে ইসলামী দলগুলোকে শুধু ব্যবহার করা হবে, ফায়দা লুটবে বিএনপি। আর বিএনপি এখন আন্দোলনে বিজয়ী হওয়ার জন্য ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ’, ‘ভারতীয় আগ্রাসনবাদ’র সঙ্গেও হাত মেলাচ্ছে যেটি ইসলামী দলগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ। এই বিবেচনা থেকে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো একটি পৃথক অবস্থান জানান দিতে চাইছে খুব শীঘ্রই।

গত চার মাস ধরেই দেশে বিদ্যমান নিবন্ধিত এবং অনিবন্ধিত ইসলামী দলগুলো পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছে। আর এই যোগাযোগ বৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে ভূমিকা পালন করছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াত প্রকাশ্যে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেরা না থাকলেও জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায়, মদদে এবং জামায়াতের সক্রিয় সহযোগিতার মাধ্যমেই এই মেরুকরণগুলো ঘটছে। ইসলামী দলগুলোর মধ্যে নানা মত এবং নানা পথের পার্থক্য রয়েছে। নানা মত, নানা পথের পার্থক্য গুলো দূরে সরিয়ে রেখে তারা শুধুমাত্র ইসলামী শাসনতন্ত্র এবং শরীয়া আইন, এই লক্ষ্য নিয়েই এক ছাতার নিচে দাঁড়াতে চাচ্ছে। আর এর প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ-বিএনপির বাইরে একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা করা। সেই অধ্যায় সূচনা করার লক্ষ্যে তারা একটি বড় ধরনের শোডাউন দেবে। তবে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় পার্টির সম্পর্ক থাকতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র বলছে। তবে যে ৩৮টি দল এখন এসব বিষয় নিয়ে একত্রিত হচ্ছে তাদের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, শুধুমাত্র ইসলামী ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসেবে যারা বিশ্বাস করে, কোরআন সুন্নাহর আইন প্রতিষ্ঠিত করতে চাই এবং শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করতে চায় তারাই এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আছে, অন্য কেউ নয়।

বর্তমানে খিলাফত আন্দোলন এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, এই দুটি দলের নেটওয়ার্ক অত্যন্ত শক্তিশালী। এই দলগুলো মোটামুটিভাবে সারা দেশেই কমবেশি তাদের কর্মী জোগাড় করতে সক্ষম হয়েছে। জামায়াত ইসলামের সারাদেশে নেটওয়ার্ক রয়েছে। এর বাইরে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে সেই রাজনৈতিক দলগুলোর তেমন একটি সক্রিয়তা নেই। তবে দেশের মাদ্রাসাগুলোতে এবং মসজিদগুলোতে প্রতিটি ইসলামী দলের কিছু না কিছু নেটওয়ার্ক রয়েছে, সেই নেটওয়ার্ক গুলোকে তারা একত্রিত করতে চায়। বিভিন্ন সূত্র বলছে, ইসলামী দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য গুলো খুবই সামান্য। কোরআনের ব্যাখ্যা, হাদিসের ব্যাখ্যা বা বিভিন্ন ইসলামী চিন্তা এবং দর্শনের ব্যাখ্যা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ। এই বিরোধগুলো কাটিয়ে ফেলার জন্য তারা তাদের আলেম-ওলামা এবং মুফতিদের নিয়ে বৈঠক করছেন এবং ইসলামী দলগুলো বলছে এটি কোনো বড় বিষয় নয়। বরং তারা যদি একসঙ্গে আন্দোলন করে তাহলে একটি বড় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। তারা মনে করছে যে, বাংলাদেশে সামনের দিনগুলোতে মার্কিন প্রভাব এবং আগ্রাসন আরও বাড়বে এবং ভারতীয় প্রভাবও বাড়বে। এরকম অবস্থা থেকে বাংলাদেশে ইসলাম ‘বিপন্ন’ হতে পারে বলেও তারা মনে করছেন। এই বাস্তবতায় ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে একটি আফগানিস্তানের মতো বিপ্লব ঘটানোর জন্য। আর সেই লক্ষ্যে প্রথম কাজটি দৃশ্যমান করতে চাই খুব শীঘ্রই।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭