বিলুপ্তির পথে কলমী লতা ও মাইক ফুল

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার অতিপরিচিত কলমী লতা ও তার ফুল। গাছগুলো দেখতে অনেকটা লতার মতো। আর ফুলগুলো একেবারেই মাইকের মতো। 

প্রায় ২ যুগ আগেও গ্রামের ছেলে-মেয়েরা এই ফুল নিয়ে খেলতো, বিশেষ করে মেয়েরা কানে গুঁজে সেজে ঘুরে বেড়াতো। 

 

গ্রামগঞ্জ আর শহরের আনাচে-কানাচে জন্মাতো এই লতা ও ফুল। মানুষের চারপাশে জড়িয়ে থাকতো। বিভিন্ন মাচান, ফসল রক্ষার বেড়াসহ বাড়ির উঠান ঘেরার কাজে আগের দিনের মানুষ ব্যবহার করতো। জ্বালানি কাজেও প্রয়োজন ছিল অপরিসীম। এগাছ ছিল অমর, ডাল থেকে কুশি বের হতো। জন্ম নিতো একটি লতা থেকে একাধিক লতা। কলমি লতার মাইক ফুল ছিল এক সময়ের সৌন্দর্যের প্রতীক। ছিল তার ব্যক্তিগত সুভাষ, যে সুভাষ ছড়িয়ে পড়তো চারপাশ। শিশু-কিশোররা খেলতো এই মাইক ফুল দিয়ে, আবার প্রিয় মানুষের চুলের খোঁপায় পরিয়ে দিতো কলমি লতার মাইক ফুল। 

আধুনিক যুগে বিভিন্ন প্রজাতির সুগন্ধি ফুলের আবির্ভাবে মূল্যহীন হয়ে গেছে সেই মাইক ফুল। ভোর থেকে ফুটতে শুরু করে, আর তা ধরে রাখে দুপুর পর্যন্ত। নিজে ফোটে ও সৌরভ ছড়িয়ে দেয় সৌন্দর্য পিপাসুদের মাঝে।

নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা, মোঃ মোজাম আলী (৭০) বলেন, এখন তো আর আগের মতো চোখেই পড়ে না কলমি লতা। আমাদের সময় প্রায় সব কাজেই এই লতার প্রয়োজন হতো। এখন তো ইট, পাথর, সিমেন্ট, বালু আর রডের ব্যবহার হচ্ছে। তখন আমরা কলমি লতা দিয়ে সব কাজ করতাম। এখন তো কেউ আর কদর করে না।