ইনসাইড ট্রেড

সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে চাল ও সবজির


প্রকাশ: 07/10/2022


Thumbnail

সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে চাল ও সবজির দাম। অপরদিকে অন্য সব পণ্যের দামও রয়েছে অপরিবর্তিত। রাজধানীতে  এখনো শীত পরতে শুরু না করলেও শীতকালীন সবজি বাজারে ওঠা শুরু করেছে। ফলে শীতের সবজির দাম আকাশছোঁয়া। 

বাজার ঘুরে জানা গেছে, দুই ধরনের কপি আকার ভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা; শসা প্রতিকেজি ৮০ থেকে ৯০; লম্বা ও বেগুন ৯০ থেকে ১০০; টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিমের দাম  কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা; করলা ৮০; চাল কুমড়া পিস ৬০; লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০; মিষ্টি কুমড়া ৫০; চিচিঙ্গা ৬০; পটল ৬০; ঢেঁড়স ৭০; কচুর লতি ৮০; পেঁপে ৪০; বরবটি ৮০ ও ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে।

বাজারে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। কাঁচা কলার হালি ৫০; লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়।

 সবজি বিক্রেতা মো. আসলাম বলেন, শীত না এলেও শীতকালীন সবজি বাজারে এসেছে। দামও বেশি। সবজির সরবরাহ বাজারে কম থাকায় দাম বাড়তি।

সবজি ছাড়াও বাজারে আলুর কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কমেছে পেঁয়াজের দাম, বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা। রসুনের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বাজারে চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকায়।  

দেশি মুশুরের ডালের কেজি ১৪০ টাকা। ইন্ডিয়ান মুশুরের ডালের কেজি ১০০। লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। বাজারে ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকায়।

মিরপুরের বাজারগুলোয় চালের দাম এখনও বাড়তি। পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকায়; বিআর ২৮ চালের দাম দুই টাকা বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০; মিনিকেট কেজি ৬৮ থেকে ৭০; মান ভেদে নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায়।  

চাল বিক্রেতা কামাল সরকার  বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে চালের দাম বাড়তি। দুয়েক ধরনের চালের দাম অবশ্য কমেছে। কিন্তু বাকিসব বাড়তির দিকেই।

বাজারগুলোয় ডিম বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। ফার্মের মুরগির লাল ডিমের ডজন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। হাঁসের ডিমের ২১০ থেকে ২২০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২১০ টাকা।  

দুইদিন আগেও যেখানে ব্রয়লার মুরগির মাংস বিক্রি হয়েছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে, সেখানে আজকের বাজারে এই মাংস বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। 

এলাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে,  গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা, কলিজাও মাংসের দামেই বিক্রি হচ্ছে। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ৯৮০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ টাকা। লেয়ার মুরগি (লাল) বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা করে।

নিলেশ চন্দ্র ভারতীয় একজন ব্যবসায়ী। ঢাকায় তার শ্বশুরবাড়ি, স্ত্রী-সন্তান এদেশেই বসবাস করায় দু’দেশ মিলিয়েই থাকেন তিনি। পূজা উপলক্ষে ঢাকায় এসে বাজার করতে গিয়ে দ্রব্যমূল্য তাকে অবাক করেছে। বাজারদর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাজারে সবকিছুরই বাড়তি দাম, কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। 

নিলেশ চন্দ্র বলেন, আগে ইন্ডিয়া থেকে এদিক-ওদিক হয়ে গরু আসতো, এখন আর ওভাবে আসে না। এখন বাংলাদেশি অসংখ্য ফার্ম তৈরি হয়েছে। ওই দেশের সাথে এখানকার মাংসের দাম হিসাব করলেও অনেক ব্যবধান। কলকাতায় গরুর মাংস বিক্রি হয় ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি, কিন্তু এখানে এসে দেখলাম ৭০০ টাকা কেজি। খাসির মাংস বিক্রি হয় ৫০০ টাকা কেজি, বাংলাদেশ ৯০০ টাকার বেশি। শুধু মাংসই নয়, বাংলাদেশের সব কিছুরই দাম বেশি।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন আর পূজা উপলক্ষে মুরগির মাংস কিনতে এসেছেন রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা মমতা রানী। গত সপ্তাহেও যেখানে তিনি মুরগির মাংস কিনেছেন ১৭০ টাকা কেজি, এই সপ্তাহে বাড়তি দাম দেখে অনেকটাই হতাশ তিনি। মমতা বলেন  আমরা যারা গরীব বা মধ্যবিত্ত আছি, মুরগির মাংসটাই সবচেয়ে বেশি খাই। এছাড়া এখন পূজা উপলক্ষে অনেকেই বাসায় বেড়াতে আসে, এই সময়ও মাংসের চাহিদাটা বেশি থাকে। কিন্তু এত দাম হলে কিভাবে কিনব? দামটা একটু কমলে তো ভালো হয়।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে মাংসের যে দাম, সবার পক্ষে মাংস কিনে খাওয়া সম্ভব না। আমরা তো চাকরি করি, মাংস কিনতে গিয়ে আমাদেরই টানাপোড়েনে পড়তে হয়, যাদের আয় আরও কম তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন।

বিক্রেতারা বলছেন, আমাদের যদি বেশি দামে কিনতে হয়, কম দামে বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই।

ডিআইটি প্রজেক্টের মাংস বিক্রেতা মো. মনির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে মাংসের বাজারের অবস্থা খুবই খারাপ। ৭০০ টাকার নিচে কোথাও গরুর মাংস নেই। দাম বাড়ায় আমাদের বেচাকেনাও খারাপ। 

গত সপ্তাহেও ৬৮০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাম বাড়ানোর পেছনে আমাদের কোনো হাত নেই। দাম বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, গরুর খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে, যে কারণে কৃষকরাও গরুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আর বেশি দামে কিনে এনে আমাদেরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।

মুরগির মাংসের দাম প্রসঙ্গে মো. ওয়াসিম বলেন, ব্রয়লার বিক্রি করছি ১৮০ টাকা কেজি, কারণ আমাদের পাইকারি কিনেই আনতে হয়েছে ১৬৬/১৬৮ টাকা কেজি করে। এর সঙ্গে যোগ হয় পরিবহন খরচ। এমনকি আনতে গিয়ে সব সময় ২/৪ টা মুরগি মরে যায়। সবমিলিয়ে একটু বেশি দামেই আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭