ইনসাইড বাংলাদেশ

কে হবেন ঢাকা রেঞ্জের নতুন ডিআইজি?


প্রকাশ: 11/10/2022


Thumbnail

স্বাভাবিক ভাবেই বাংলাদেশ পুলিশের অন্যান্য রেঞ্জের চেয়ে ব্যতিক্রম ও তুলনামূলক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা রেঞ্জ। এই ঢাকা রেঞ্জের অধীনে ১৩টি জেলা, ৯৮টি থানা ও ৪৩টি সার্কেল (দুটি থানা মিলে এক একটি সার্কেল) রয়েছে।

গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে এক আদেশে ঢাকা রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. হাবিবুর রহমানকে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্বে) হিসেবে বদলি করা হয়।

এর পর থেকেই পুলিশের শীর্ষ মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, কে হচ্ছেন ঢাকা জেলার নতুন রেঞ্জ ডিআইজি। ১৩টি জেলার পুলিশপ্রধানের দায়িত্বে কোনো চমক আসছে কি না তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়ে গেছে।

আসাদুজ্জামান

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

এর আগে ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ছিলেন তিনি। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে ঢাকা বিভাগের অধীনে জেলাগুলোর সব থানায় সেবাপ্রত্যাশীদের হয়রানি কমাতে ডিআইজি কার্যালয়ের মনিটরিং কার্যক্রম সরাসরি তদারকি করেন। এতে থানায় সেবার জন্য যাওয়া সাধারণ মানুষের হয়রানি অনেকটাই কমে আসে। পরবর্তী সময়ে এই মডেল পুলিশের আরও অন্যান্য রেঞ্জ, বিশেষায়িত পুলিশিং বিভাগ ও মহানগরগুলোতে বাস্তবায়নের জন্যও পুলিশ সদরদপ্তর নির্দেশনা দেয়।

আসাদুজ্জামান বগুড়া ও সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার (এসপি), পুলিশ সদরদপ্তর এবং ডিএমপির সহকারী কমিশনার, অতিরিক্ত উপ-কমিশনাসহ গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলেন।

২০২১ সালের ১২ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ অধিশাখার উপ-সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে মো. আসাদুজ্জামানকে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটে পদায়ন করা হয়।

জঙ্গিবাদ দমনে অগ্রণী ভূমিকা রাখা বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষ ও সাহসী কর্মকর্তাদের একজন আসাদুজ্জামান গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় নৃশংস জঙ্গি হামলার পর দেশজুড়ে পুলিশের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি বিসিএস ১৮ ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা। কর্মজীবনে যেখানেই দায়িত্ব পালন করেছেন, রেখেছেন দক্ষতা ও বিচক্ষণতার ছাপ।

এ কে এম হাফিজ আক্তার

ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি হওয়ার দৌড়ে এরপরেই আসে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এ কে এম হাফিজ আক্তারের নাম। গত ১৩ জুলাই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের প্রধান থেকে তাকে ডিএমপি হেডকোয়ার্টারে পদায়ন করা হয়।

এ কে এম হাফিজ আক্তার আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ থেকে বিএসসি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোনোমি বিভাগ থেকে এমএস ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি ১৯৯৮ সালে ১৭তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। সার্কেল এএসপি হিসেবে তিনি চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পটিয়া সার্কেলে কর্মরত ছিলেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে তিনি চট্টগ্রাম জেলা পুলিশে কর্মরত ছিলেন। পুলিশ সুপার (প্রশাসন) হিসেবে পুলিশ একাডেমি সারদায় কর্মরত ছিলেন। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রান্সপোর্ট বিভাগ, গুলশান বিভাগ, চ্যান্সেরি বিভাগ ও উত্তরা বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন।

পুলিশ সুপার হিসেবে হাফিজ আক্তার টাঙ্গাইল ও চট্টগ্রাম জেলার দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬-২০০৭ সালে তিনি কসোভো জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। পুলিশ বিভাগে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বিপিএম সেবা ও আইজিপি ব্যাজ পদক লাভ করেন।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ

এরপরেই আলোচনায় আসে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নাম। গত ১৩ জুলাই পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া ডিবির উত্তর ও সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে ডিবিপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

হারুনের জন্ম কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। তার বাবা আবদুল হাসেম ও মা জহুরা খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স, এমএসএস, এলএলবি (জাবি) থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করেন হারুন।

২০১৪ সালের ২৪ আগস্ট গাজীপুর জেলার এসপি হিসেবে নিয়োগ পান হারুন। ২০১৮ সালের ১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে গাজীপুর থেকে ডিএমপিতে বদলি করা হয়েছিল।

মো. আনোয়ার হোসেন

২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. আনোয়ার হোসেন। এর আগে তিনি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সালে ১৭তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন তিনি।

আনোয়ার হোসেন কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার জাওয়ার ইউনিয়নের দেওয়াটি গ্রামের কৃতি সন্তান। তার বাবা আলহাজ্ব মো. আশরাফ হোসেন মঞ্জু মিয়া একজন আদর্শ শিক্ষক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী আনোয়ার জাতিসংঘ মিশনসহ বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ড. খ. মহিদ উদ্দিন

খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির দায়িত্ব পালন করছেন ড. খ. মহিদ উদ্দিন। ১৯৯৮ সালে ১৭তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন।

২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল খুলনা রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি হিসেবে যোগদান করেন। খুলনা রেঞ্জের জনপদ থেকে দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাসী, চোরাকারবারি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ইত্যাদি চক্রকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার পরিকল্পনা ও প্রত্যয় নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছিলেন তিনি।

সৈয়দ নুরুল ইসলাম

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সৈয়দ নুরুল ইসলাম। তিনি ২০০১ সালে ২০তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন।

সৈয়দ নুরুল ইসলাম ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ জেলায় পুলিশ সুপারসহ পুলিশের একাধিক বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন তিনি। সাহসী ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পুরস্কার সম্মাননা বিপিএম ও পিপিএম (বার) পদক অর্জন করেন তিনি।

সৈয়দ নুরুল ইসলামের জন্ম ১৯৭১ সালের ১ মার্চ শিবগঞ্জের জালমাছমারি মহল্লায়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭