ইনসাইড পলিটিক্স

গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে সমর্থন দিচ্ছে বিএনপি


প্রকাশ: 11/10/2022


Thumbnail

গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি। আর এই উপ-নির্বাচন নিয়ে একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক মেরুকরণ ঘটতে যাচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আগামীকাল ১২ অক্টোবর এই আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০০৯ সালের পর এবারই প্রথম এই আসনটিতে বিএনপি-জাতীয় পার্টি-জামায়াতের একজোট হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের বিপক্ষে এই রাজনৈতিক মেরুকরণের নেপথ্যে বিএনপি কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সক্রিয় আছে জামায়াতও। ফলে এই নির্বাচনকে একটি টেস্ট কেস হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। উল্লেখ্য যে, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুর পর এই আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরপর আসনটিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই আসনে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন। তার জয় নিশ্চিত করতে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক দলীয় প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপনের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। এখন নির্বাচনের সময় তিনি আবারও গাইবান্ধায় ছুটে গেছেন। সেখানে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল দূর করে দলের প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে ছুটে গেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেনও। এসএম কামাল হোসেনের প্রচেষ্টায় দলীয় বিরোধ মিটেছে বলেও জানা গেছে। এসএম কামাল হোসেন স্থানীয় নেতাকর্মীদের বলেছেন যে, এই আসনটিতে শেখ হাসিনার জয় নিশ্চিত করতেই হবে। কারণ, রিপনকে মনোনয়ন দিয়েছেন শেখ হাসিনা। কিন্তু আওয়ামী লীগ এই আসনে জয় লাভ করতে পারবে কিনা, সেটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে একটি সংশয় তৈরি হয়েছে।

গাইবান্ধায় দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় পার্টির কর্তৃত্ব রয়েছে। উল্লেখ্য যে, ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী। পরে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নির্বাচিত হন এই আসনে। পরে ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম এবং ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে রাব্বী মিয়া নির্বাচিত হন। ফজলে রাব্বী মিয়া এর আগে জাতীয় পার্টিতে ছিলেন এবং পরে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এরপর এই আসনটিতে আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু সেখানে জাতীয় পার্টির প্রভাব এখনও প্রতিষ্ঠিত রয়েছে।

নির্বাচনে এখন যদি জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিএনপি-জামায়াত সমর্থনকারীদের ভোট পায় তাহলে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই নির্বাচনকে একটি টেস্ট কেস হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, বিএনপি এবং জামায়াতের সমর্থন পেয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী যদি জয়ী হয় তাহলে ভবিষ্যতে বিএনপি-জাতীয় পাটি-জামায়াত মিলে বৃহত্তর ঐক্য গঠন করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এ কারণে গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনকে জাতীয় রাজনীতির মেরুকরণের একটি টেস্ট কেস হিসেবে দেখা হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭