ইনসাইড বাংলাদেশ

সিইসিকে নিয়ে ডা. জাফরুল্লাহর ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হলো


প্রকাশ: 14/10/2022


Thumbnail

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল। প্রধান নির্বাচন করার ক্ষেত্রে এবার সরকার আইন করেছিল, গঠন করেছিল সার্চ কমিটি। এই প্রথম বাংলাদেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে আইনের মাধ্যমে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে সার্চ কমিটি গঠিত হয়। এই সার্চ কমিটির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে। এই সার্চ কমিটি গঠনের আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে। তারপর আইন প্রণীত হয়। এইসব কোনো প্রক্রিয়াতেই বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। তবে সার্চ কমিটিতে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী উপস্থিত হয়েছিলেন। গিয়েছিলেন শাহদীন মালিক, আসিফ নজরুল, বদিউল আলম মজুমদারসহ সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা। যারা পরোক্ষভাবে বিএনপিরই প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সার্চ কমিটির সাথে এ সমস্ত বৈঠকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কাজী হাবিবুল আউয়াল এর নাম দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে কাজী হাবিবুল আওয়ালকে সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে প্রস্তাব দেন এবং সেই প্রস্তাব রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেন। 

বাংলাদেশে প্রথম আইনের মাধ্যমে বর্তমান নির্বাচন কমিশনার গঠিত হয় এবং কাজী হাবিবুল আওয়াল প্রধান নির্বাচন কমিশনার হয়। যদিও এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিএনপি জড়িত ছিল না। নির্বাচন কমিশন গঠনের পর বিএনপি এই নির্বাচন কমিশনকে আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন হিসেবে ঘোষণা করেছিল এবং কাজী হাবিবুল আউয়াল এর তীব্র সমালোচনা করেছিল। এ সময় বিএনপির অবস্থানের প্রতিবাদ করেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেছিলেন যে, কাজী হাবিবুল আওয়াল একজন সৎ মানুষ, ন্যায় নিষ্ঠুর মানুষ এবং তিনি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করবেন। তিনি সরকারের আজ্ঞাবহ হবেন না। ডা. জাফরুল্লাহ সে সময় এটিও বলেছিলেন যে, আমি কাজী হাবিবুল আওয়ালকে চিনি। তিনি তার অবস্থানের প্রশ্নের কোনো আপোষ করবেন না। এই সময় ডা. জাফরুল্লাহর বক্তব্যের সমালোচনা করেছিলেন বিএনপি এবং তারা বলেছিলেন যে, জাফরুল্লাহর বক্তব্য বিএনপির বক্তব্য নয়। তবে ডা. জাফরুল্লাহ যে  কাজী হাবিবুল আওয়াল এর নাম  প্রস্তাব করেছিলেন এটি জাফরুল্লাহ নিজেই একাধিকবার স্বীকার করেছেন। ডা. জাফরুল্লাহর দুঃসম্পর্কের আত্মীয় কাজী হাবিবুল আওয়াল হন বলে বিভিন্ন সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। সেই সময় ডা. জাফরুল্লাহ যা বলেছিলেন গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে সেই দৃশ্যটাই দৃশ্যমান হলো। 

কাজী হাবিবুল আওয়াল থেকে অনেকেই আওয়ামী লীগের মাই ম্যান মনে করেছিল। আর রকিবুদ্দিন বা নুরুল হুদার মতোই আরেকটি নির্বাচন কমিশন হয়েছে বলে কেউ কেউ মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু হাবিবুল আউয়াল এর পেশা জীবন সম্পর্কে যাদের খোঁজ খবর আছে তারা জানে যে তিনি সবসময় একগুয়েমী এবং যেটি ভালো বুঝেন সেটি তিনি করতে কার্পণ্য করেন না। আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা অবশ্য সংশয় প্রকাশ করে বলেছেন যে, এই ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতাই বলেছিলেন আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া দরকার নেই। তিনি যেন নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিতর্ক থেকে টেনে তুলেন এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করেন, সেটুকুই তাদের প্রত্যাশা। কিন্তু গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের মধ্যে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কাজী হাবিবুল আওয়াল তাহলে কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য গাইবান্ধায় টেস্ট কেস হিসেবে উপ নির্বাচন স্থগিত করলেন। ডা. জাফরুল্লাহ তার ব্যাপারে আগাম মন্তব্য করেছিলেন কেন? এসমস্ত নানা প্রশ্ন এখন রাজনীতির অঙ্গনে ঘুরপাক খাচ্ছে। আর এসব প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যতই বলে দেবে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭