বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে শপথ নিয়েছেন। তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, তাঁরা এমনভাবে কাজ করবেন না যেন সাংবিধানিক শপথ ভঙ্গ হয়। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা এবং এখতিয়ার কতটুকু, সেটা তারা প্রমাণ করেছেন। তারা জানান দিয়েছেন যে, নির্বাচন কমিশন কোনো রাবার স্ট্যান্ড নয়। বিষয়টি নিয়ে সরকারের তথ্যমন্ত্রীও ইঙ্গিত করেছেন যে, কেন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান না বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা নেই। এই নির্বাচন কমিশনের মধ্য দিয়ে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। এ সমস্ত বিষয়গুলোর একটি রাজনৈতিক দিক আছে সেটি আমাদের বুঝতে হবে।
গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে একজন নির্বাচন বিশ্লেষক হিসেবে কিভাবে দেখছেন এই নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ। পাঠকদের জন্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব মাহমুদুল হাসান তুহিন।
প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, এ.টি.এম. শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় সেনা মোতায়েনের জন্য আরজি জানিয়ে সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছিলো। কিন্তু সেই চিঠির জবার এখন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে বলে কারো জানা নেই। অথচ সরকারের কাছে বলা আছে যে, সংবিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশন সরকারের কাছে কোনো ধরনের সহযোগিতা চাইলে সরকার তা করতে বাধ্য থাকবে। কারণ, নির্বাচন একটি অগ্রাধিকার বিষয়।
তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধায় নির্বাচনে কমিশন একটি বড় ধরনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শাসক দলের কোনো নেতাকর্মী বা ক্ষমতাসীন দল নির্বাচন কমিশনের কাছে কোনো গুরুত্বের বিষয় নয়। এটাই নির্বাচন কমিশন গাইবান্ধায় তাদের পদক্ষেপের মাধ্যমে বার্তা দিয়েছেন।
জাতীয় নির্বাচনে কমিশন কি ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে জানতে চাইলে ড. নাজমুল আহসান বলেন, জাতীয় নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকা কি হবে সেটি এখন অনুমান করা মুশকিল। সেটি সময়ই বলবে। তবে তারা যদি সাংবিধানিকভাবে তাদের ক্ষমতায় প্রয়োগ করেন, তাহলে ভারতের সাবেক নির্বাচন কমিশনার টি এন সেশন কিংবা নাইজেরিয়ার সাবেক নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর জগা, তাদের যে ইমেজ এবং তারা যে লিজেন্ড তৈরি হয়েছে তা ছাপিয়ে যাবে। কিন্তু কমিশন যদি বিষয়টি এভাবে চিন্তা করে যে এটি একটি টেস্ট কেস এবং বিএনপি বা বিরোধী দলগুলোর আস্থা অর্জনে এটি একটি পদক্ষেপ মাত্র, তাহলে সেটি মঙ্গলজনক নয়। আর তারা যদি সাংবিধানিকভাবে এই ধারা অব্যাহত রাখেন তাহলে সকল রাজনৈতিক প্রত্যাশা থমকে যাবে।